ভোরের আলো ফুটেছে অনেক আগেই। সেই অর্থে মানুষের জেগে ওঠার সরবতা তখনো ছড়িয়ে পড়েনি। চারপাশে সুনসান স্তব্ধতা গা এলিয়ে আছে। ছিটেফোঁটা দু-চারজন করে বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে বের হয়ে আসছেন, পথে হাঁটছেন। মনু নদের পাড়টি আরও নীরব, জনমানবহীন শান্ত একটুকরা নির্মল হাওয়ার ভূমি হয়ে আছে। তখন ‘সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ/ সেখানে বারুণী থাকে গঙ্গাসাগরের বুকে, সেখানে বরুণ.

..।’

জীবনানন্দ দাশের নাটার রঙের মতো রাঙানো সূর্যের জেগে ওঠার এই মুহূর্তে একফালি মনু নদ কি আর গঙ্গাসাগরের মতো কোনো উপমার সঙ্গে সমান হতে পারে, চলতে পারে! তা না-ই হলো, তবু সেখানে গঙ্গাসাগরের বুকের কাছে যেমন বরুণ থাকে, তেমনই এখানেও এই মনু নদের পাড়ে চুপি চুপি, শাখায় শাখায় ফুলের বন্যা নিয়ে জেগে আছে বরুণের গাছ।

বসন্তের সকাল, মৃদু বাতাসে তখনো কিছুটা ঠান্ডার মতো ভাব আছে। সময় উড়ছে সকালের নরম রোদের পালকে। এ রকম একটা সময়ে পথ চলতে চলতে মৌলভীবাজার শহরের ফরেস্ট অফিস সড়কের ভৈরব থলির কাছে পৌঁছেই দেখা হয়ে যায় তার সাথে, তাহাদের সাথে। ‘বাসা তোমার সাতসাগরের ঘূর্ণী হাওয়ার বুকে!/ ফুটছে ভাষা কেউটে ঢেউয়ের ফেনার ফণা ঠুকে!/ প্রায়ণ তোমার প্রবালদ্বীপে, পলার মালা গলে/ বরুণরানি ফিরছে যেথা, মুক্তপ্রদীপ জ্বলে।’ অনেকটা তা–ই, গাছের শাখায় শাখায় সবুজ পাতার ফাঁকে মুক্তপ্রদীপের মতো জ্বলে আছে সাদা, গোলাপি, সবুজের মিশ্রণে অসংখ্য বরুণ ফুল।

ফুলটির পোশাকি নাম বরুণ হলেও আরও অনেক নাম আছে। যেমন: বৈন্যা, শ্বেতপুষ্প, কুমারক, সাধুবৃক্ষ, শ্বেতদ্রুম।

বছর ঘুরে বরুণ রানির ফেরাটা এ রকমই মনে হয় রাজকীয়, এ রকমই জাঁকজমকের। গাছজুড়ে ফুটে আছে ফুল। দু-চারটা শালিক, ঘুঘু পাখি উড়ে আসছে, ফুলের ওপর বসছে। এদিক-ওদিক তাকিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছে। ফোটা ফুলের পাপড়িরা বাতাসের আহ্লাদে টুকটুক করে ঝরে পড়ছে গাছের নিচে। পাপড়ির নকশিকাঁথা যেন কেউ বিছিয়ে রেখেছে ঘাসের ওপর। বেশ বড়সড় ঝাঁকড়া মাথার গাছ। ডালগুলোও চারদিকে ডানা মেলে আছে। পাশেই মনু নদ। হয়তো কোনো একদিন এই নদের পানিতে ভেসে এসেছিল এই বরুণগাছের ফল। সেই পাকা ফলটি চরের মতো জেগে থাকা পাড়ের মাটিতে আশ্রয় পেয়ে গাছ হয়ে মাথা তুলেছে। তারপর বসন্তের মাঝামাঝি এলেই ডালে ডালে ফুলের জলসা বসছে।

ওখানেই, বরুণগাছটির কাছে এই সাতসকালে দেখা শহরের সৈয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা সাংস্কৃতিক সংগঠক শৈলেন রায়ের সঙ্গে। তিনি জানালেন, গাছটি বেশ অনেক বছর ধরে দেখছেন। তবে গাছে যে এত ফুল ফোটে এবং এই গাছের নাম যে বরুণ, তা আগে সেভাবে খেয়াল করেননি। গাছটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর বা এর আশপাশে হতে পারে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, গাছটি এখানে কেউ রোপণ করেননি, গাছটি এমনিতেই গজিয়ে উঠেছে। গাছটি কারও হাতে কাটা পড়েনি বলে এখনো ফুলে ফুলে সাজতে পারছে।

বরুণ গাছের সবচেয়ে পছন্দের আবাসই হচ্ছে জলাভূমি এলাকা

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বাউবিতে এলএলবি অনার্স কোর্স, আবেদনের সময় বৃদ্ধি

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ সেশনে এলএলবি (অনার্স) প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদনের সময় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। এ কোর্সের মেয়াদ চার বছর। প্রোগ্রামটি সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুলের অধীন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রে প্রতিটি কোর্সের জন্য ২৪টি ক্লাস প্রতি শুক্র ও শনিবার অনুষ্ঠিত হবে।

ন্যূনতম যোগ্যতা—

১. আবেদনকারীকে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের উভয় পরীক্ষায় আলাদাভাবে ডিভিশন পদ্ধতিতে ৫০ শতাংশ নম্বর করে দ্বিতীয় বিভাগ অথবা জিপিএ পদ্ধতিতে ৩.৫০ (৫.০০-এর মধ্যে) থাকতে হবে।

২. সব শাখার শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবেন।

কোর্সের বৈশিষ্ট্য—

১. ৪ বছরে মোট ৪০টি কোর্স বা ১২০ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হবে (প্রতি কোর্স = ৩ ক্রেডিট)।

২. প্রতি শিক্ষাবর্ষ ছয় মাসমেয়াদি দুটি সেমিস্টারে বিভক্ত। প্রতি সেমিস্টারে পাঁচটি কোর্সে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

৩. প্রতি সেমিস্টার শেষে পরীক্ষা হবে।

৪. মোট আসন ১০০টি।

৫. স্টাডি সেন্টার: ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্র, বাউবি।

আরও পড়ুন৬০০ বৃত্তির সুযোগ গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে, জেনে নিন বিস্তারিত২১ এপ্রিল ২০২৫দরকারি কাগজপত্র—

১. ছবি দুই কপি।

২. এসএসসি/ এইচএসসি/ সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণের সনদপত্র ও মার্কশিটের সত্যায়িত কপি।

৩. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি।

ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি—

১. ভর্তি পরীক্ষা বহুনির্বাচনি (MCQ) প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হবে।

২. ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের মানবণ্টন জেনে নিন: বাংলা ২৫, ইংরেজি ২৫, সাধারণ জ্ঞান: বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২৫ ও সাধারণ জ্ঞান: আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ২৫।

৩. ভর্তি পরীক্ষার মোট নম্বর ১০০। ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০। প্রতি অংশে ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

ভর্তির পুনর্নির্ধারিত তথ্য—

১. আবেদন করার সময় বৃদ্ধি: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত।

২. আবেদন ফি: ৬০০ টাকা। মোট ফি ১২ হাজার ৫৬০ টাকা।

৩. লিখিত পরীক্ষার জন্য মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ: ৮ মে ২০২৫।

৪. লিখিত পরীক্ষার আসনবিন্যাস: ১৩ মের পর বাউবির ওয়েবসাইট ও ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে জানা যাবে।

৫. লিখিত পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান: ২৩ মে ২০২৫, শুক্রবার; বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

৬. লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫।

৭. সাক্ষাৎকারের তারিখ: ২২ ও ২৩ জুন, সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত হবে। ডিনের কার্যালয়, এসএসএইচএল, বাউবির মূল ক্যাম্পাস, বোর্ড বাজার, গাজীপুর।

৮. মেধাতালিকা প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫।

৯. ভর্তির সময়: ২৬ জুন থেকে ১৭ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত।

১০. ক্লাস শুরু হবে: ২৫ জুলাই ২০২৫।

বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইট: www.bou.ac.bd

আরও পড়ুনএসএসসি ২০২৫–এ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিতির কারণ অনুসন্ধানের নির্দেশ১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ