Prothomalo:
2025-04-21@08:16:28 GMT

কোরআনের বিষয়ভিত্তিক অনুবাদ

Published: 29th, March 2025 GMT

বাংলা ও ইংরেজিসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় পবিত্র কোরআন শরিফের তরজমা বা অনুবাদ হয়েছে। এসব অনুবাদের বিভিন্ন ধরনও আছে। কিছু অনুবাদ আরবি থেকে সরাসরি হয়েছে, কিছু অনুবাদ আবার অনুবাদের অনুবাদ। যেমন: বাংলা ভাষায় প্রচলিত তরজমাগুলোর একটা বড় অংশই কোরআনের উর্দু তরজমার সাহায্যে করা হয়েছে। আবার কোরআনের কিছু অনুবাদে টীকা বা সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা যুক্ত করা হয়েছে স্পষ্টীকরণের জন্য। কিছু অনুবাদ তাফসিরভিত্তিক বা বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ হয়েছে। বিষয়ভিত্তিক বা কোরআনে আলোচিত বিভিন্ন বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েও অনুবাদ করা হয়েছে। ড.

মুস্তাফা খাত্তাবের দ্য ক্লিয়ার কোরআন: আ থিমেটিক ইংলিশ ট্রান্সলেশন সে রকমই একটি অনুবাদ যা প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

এই অনুবাদে কোরআনের তিনটি প্রধান বিষয়কে পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে— 

(১) উপদেশ-নির্দেশ, (২) ঘটনা-কাহিনি এবং (৩) অদৃশ্য বা গায়েবি বিষয়।

আরও পড়ুনহজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মক্কা–জীবন২৫ নভেম্বর ২০২৩

প্রথমটিতে প্রধানত মুসলমানদের সঙ্গে আল্লাহর, অন্যান্য মানুষের ও আল্লাহর বাকি সৃষ্টির সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্ক আলোচিত হয়েছে। যেমন: ইবাদত, পারিবারিক সম্পর্ক ইত্যাদি। দ্বিতীয়টিতে হজরত আদম (আ.), ইব্রাহিম (আ.), মুসা (আ.) ও আরও কয়েকজন নবী-রাসুলের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এর একাধিক উদ্দেশ্য আছে। প্রথমত, ইসলাম প্রচারকালে মুহাম্মদ (সা.) যখন কাফেরদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হচ্ছিলেন, তখন তাঁকে আশ্বস্ত করা এবং কাফেরদেরও সতর্ক করা। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন কাহিনির মধ্যে মুসলমানদের নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া। সর্বশেষ গায়েবি বা অদৃশ্য বিষয়ের মাধ্যমে একজন মুসলমানকে এটা বোঝান যে আল্লাহ, তাঁর গুণাবলি, তাঁর ফেরেশতাকূল, কেয়ামতের পর পুনরুত্থান ও শেষ বিচারসহ বিভিন্ন অদৃশ্য বিষয়গুলো চোখে না দেখেই অন্তর থেকে বিশ্বাস করতে হবে। তা না হলে সে সত্যিকার ইমানদার মুসলমান হতে পারবে না।

বইটিতে কোরআনের ১১৪টি সুরার মধ্যে উক্ত তিনটি বিষয়ের কোনটি বা কোন কোনটির ওপর আলোকপাত করা হয়েছে, তার একটি প্রতীকযুক্ত তালিকা দেওয়া আছে প্রথমে। যেমন: সুরা বাকারায় তিনটি বিষয়ই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আবার, সুরা ইয়াসিনে কাহিনি ও গায়েবি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে।

আরও পড়ুনহজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মদিনা–জীবন০২ ডিসেম্বর ২০২৩

সুরার ভেতরে আলোচিত ও বর্ণিত বিষয়গুলোর সার-সংক্ষেপ প্রতিটি সুরার শুরুতে দেওয়া হয়েছে। তারপর বিভিন্ন আয়াতের অনুবাদের পাশাপাশি আয়াতগুলোর মূল কথা একবাক্যে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন: সুরা আল-আরাফের (৭ম সুরা) ১০ থেকে ১৮ আয়াতের মূল কথা হলো: ‘শয়তানে ঔদ্ধত্য।’

সহজ ইংরেজিতে করা এই অনুবাদের অন্যতম লক্ষ্য হলো, পশ্চিমা দুনিয়ায় ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের মাঝে ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ও বিকৃতি ধারণা অবসানে সহযোগিতা করা। সে কারণে, কোরআনে বর্ণিত বিভিন্ন নবী-রাসুলের নাম বাইবেলের প্রচলিত নামানুসারে অনুবাদ করা হয়েছে। যেমন: সুরা ইউসুফের ক্ষেত্রে মূল নামের পাশাপাশি ’জোসেফ’ উল্লেখ করা হয়েছে।

সর্বোপরি প্রারম্ভে কোরআনের কাঠামো, ভাষা শৈলী ও গুরুত্বের ওপরে আলোকপাত করা হয়েছে এবং পাশ্চাত্য জগতের ইসলামভীতি ও ইসলামবিদ্বেষ বিষয়ক কিছু প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে। তরজমাটি মিশরের আল-আজহার ইসলামিক রিসার্চ একাডেমি থেকে অনুমোদিত হয়েছে। আর মুদ্রিত হয়েছে তুরস্ক থেকে।

দ্য ক্লিয়ার কোরআন: আ থিমেটিক ইংলিশ ট্রান্সলেশন; ড. মুস্তাফা খাত্তাব; বুক অব সাইনস ফাউন্ডেশন, আমেরিকা, ২০১৬।

আরও পড়ুনপ্রাঞ্জল বাংলা অনুবাদে কোরআন১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ব দ র ক রআন র ম সলম ন র ক রআন ত হয় ছ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিটি পরিচয়েই ভালো কাজকে প্রাধান্য দিতে চাই: ফাহমিদা নবী

ফাহমিদা নবী। নন্দিত কণ্ঠশিল্পী ও সুরকার। সম্প্রতি আজব রেকর্ড থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর একক গান ‘না হয় শুধু এতটুকুই হোক’। নতুন এ আয়োজন, বর্তমান ব্যস্ততা এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।
 
অনেকে বলছেন, ‘না হয় শুধু এতটুকুই হোক’ গানটি মেলেডি সুরের হলেও আপনার আগের সব আয়োজন থেকে কিছুটা আলাদা। তাদের এই কথার সঙ্গে কী আপনি একমত?
দ্বিমত পোষণ করার কোনো কারণ নেই। কারণ সুরকার জয় শাহরিয়ার এ গান যখন শোনায়, তখনই মনে হয়েছে এর সুর একটু আলাদা ধরনের। মেলোডি গান যারা পছন্দ করেন, তাদের হৃদয় স্পর্শ করার মতো ম্যাজিক্যাল কিছু এতে আছে। তানবীর সাজিবের লেখা এর গীতিকথাও একটু আলাদা ধরনের, যা গানের শিরোনাম থেকেই অনুমান করা যায়। তাই আনন্দ নিয়েই গানটি গেয়েছি।

বাংলাঢোল স্টুডিওর অ্যাকুস্টিক টেলস অনুষ্ঠানে গাওয়া ‘দিনলিপি’ গানটিও প্রকাশিত হলো। এই আয়োজনে শ্রোতার প্রতিক্রিয়া কী?
সবার কথা জানি না, তবে যারা অনাপ্লাগড ভার্সনের গান পছন্দ করেন, তাদের অনেকের কাছে অ্যাকুস্টিক টেলসের ‘দিনলিপি’ গানটি ভালো লেগেছে। অ্যাকুস্টিক বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে গাওয়া যে কোনো গানই একটু অন্যরকম শোনায়, যার আলাদা শ্রোতা আছে।

গত কয়েক বছরে বেশ কিছু গানের সুর করে শ্রোতার প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এ বছর আপনার সুরের কোনো গান কি প্রকাশ পাবে?
নিশ্চিত করে এখনই কিছু বলা কঠিন। তার পরও সম্ভাবনা যে একেবারে নেই, তা নয়। সুর করা এখন অনেকটা নেশায় পরিণত হয়েছে। কয়েক বছর আগেও ভাবিনি, এই কাজটি নিয়মিত করব। যখনই কারও লেখা গানের কথা ভালো লেগে যাচ্ছে, তখনই তাতে সুর বসানোর চেষ্টা করছি। এখন মনে হয়, সুরকার হিসেবে থেমে থাকার আর সুযোগ নেই। গান যেমন গাইতে হবে, তেমনি সৃষ্টি করতে হবে নতুন সুর। কিছু গানের সুর করে রেখেছি, দেখা যাক এ বছর সেগুলো প্রকাশ করা যায় কিনা।

কণ্ঠশিল্পী হিসেবে যেমন মেলোডি গান প্রাধান্য দিয়ে আসছেন, সুরকার হিসেবেও কী একই চিন্তাধারা নিয়ে কাজ করেন?
মেলোডি সুরের আবেদন চিরকালই ছিল। হয়তো সে কারণেই আমার কণ্ঠে শ্রোতারা সবসময় এ ধরনের গানই শুনতে চান। তাই যখন কোনো গানের সুর করি, তখন মেলোডিকেই প্রাধান্য দেই। অন্য শিল্পী গাইলেও সেখানে যেন আমার কাজের ছাপ থাকে, সে দিকে লক্ষ রাখি।

সংগীত প্রযোজক হিসেবে আপনার ভাবনা জানতে চাই, আপনার চ্যানেলে কোন ধরনের গান তুলে ধরতে চান?
গান যদি শ্রুতিমধুর হয়, তাহলে সেটি কোন ঘরনার তা নিয়ে ভাবতে চাই না। সংগীত প্রযোজক হিসেবে এ বিষয়টা প্রাধান্য দিচ্ছি। কারণ সুরের বাইরে গিয়ে কাজ করা কখনই সমর্থন করি না। নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল থাকা মানে কাজের অবাধ স্বাধীনতা। কিন্তু অবাধ স্বাধীনতা পেলেও কখনও স্রোতে গা ভাসাব না। শিল্পী, সুরকার, প্রযোজক– প্রতিটি পরিচয়েই ভালো কাজকে প্রাধান্য দিতে চাই। এর চেয়ে বড় কথা হলো আমি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে নিজের চ্যানেল চালু করা কিংবা গানের প্রযোজনা শুরু করিনি। ভিউর দৌড়ে অংশ না নিয়ে ভালো কাজই শ্রোতার কাছে তুলে ধরতে চাই। শিল্পী, সংগীতায়োজকরা তারকাদের কাজই বেছে নেবে, বিষয়টা এমনও নয়। শিল্পী হিসেবে যেমন, তেমনই প্রযোজক হিসেবে তরুণ শিল্পীদের পাশে আছি সবসময়। 

গানের প্রকাশনা ধরে রাখলেও স্টেজ শোতে অনুপস্থিতি চোখে পড়ে। এ নিয়ে কখনও ভাবেন?
এটি সত্যি যে অন্য শিল্পীদের চেয়ে আমাকে স্টেজে কম দেখা যায়। অনুষ্ঠান আয়োজকদের কারণেই এটা হয়েছে। বেশির ভাগ আয়োজকই চান, এমনভাবে অনুষ্ঠান সাজাতে যেখানে দর্শকরা হৈ-হুল্লোড়ে মেতে উঠতে পারেন। সেসব অনুষ্ঠানে শিল্পীদের যে ধরনের গান গাইতে হয়, সে ধরনের গান আমার গাওয়া হয়ে ওঠে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ