আশ্রয় নিয়ে খেয়ে দেয়ে ৪ শিশুসহ চম্পট, পরে ওই নারীকে আটক
Published: 29th, March 2025 GMT
রংপুরে এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে খেয়ে দেয়ে ৪ শিশুসহ চম্পট দিয়েছে এক নারী। পরে রংপুর রেলস্টেশন থেকে চার শিশুসহ আদুরী বেগম (৪০) নামে ওই নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাত ১১টার দিকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির সময় তাকে আটক করা হয়।
আটক আদুরী বেগম কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার মনসুর আলীর স্ত্রী। তিনি রংপুর নগরীর বাবুপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
পুলিশ জানায়, রংপুর নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তপোধন গ্রাম থেকে চার শিশু নিয়ে ওই নারী ইফতারের পর উধাও হন। বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে অবগত করা হয়। রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ অবস্থান নেয়। এরপর রেলস্টেশন এলাকা থেকে ৪ শিশুসহ তাকে আটক করা হয়।
উদ্ধারকৃত চার শিশু
শিশুদের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দিনের বেলা আদুরী বেগম তপোধন গ্রামে এক বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় চান। বাড়ির অভিভাবক আশিকুল ইসলাম তাকে আশ্রয় দেন। ওই নারী রাতে সেখানে থাকেন এবং সাহরি খান। সারাদিনও ওই বাড়িতেই অবস্থান করেন এবং সন্ধ্যায় ইফতারও করেন। তবে ইফতারের পর ৬ থেকে ১০ বছর বয়সী চার শিশুকে নিয়ে তিনি উধাও হয়ে যান। সন্তানদের না পেয়ে অভিভাবকরা দ্রুত পুলিশকে বিষয়টি জানান।
এরপর রাতে রেলস্টেশনে শিশুদের নিয়ে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে আটক করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে মারধরের চেষ্টা করে।
রংপুর রেলস্টেশনের সুপার শংকর গাঙ্গুলি জানান, ধারণা করা হচ্ছে, চার শিশুকে পাচারের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল।
রংপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম বলেন, “আমরা ৪ শিশুসহ আদুরী বেগম নামে এক নারীকে আটক করেছি। পরে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসির উপস্থিতিতে পুলিশি হেফাজতে শিশুসহ ওই নারীকে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
ঢাকা/আমিরুল/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৪ শ শ সহ ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ও’ পজিটিভের বদলে ‘বি’ পজিটিভি রক্ত পুশ, রোগীর মৃত্যু
মানিকগঞ্জে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় চিকিৎসাধীন এক রোগীর শরীরে ‘ও’ পজিটিভের বদলে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত পুশ করায় সেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে রক্ত দেওয়ার পর রাত ১০টার দিকে রোগীর মৃত্যু হয়। নিহত ওই রোগীর নাম মো. বিল্লাল। তিনি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার খাগড়াকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
এর আগে, গত বুধবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
আরো পড়ুন:
চোর সন্দেহে গণপিটুনির ২ দিন পর যুবকের মৃত্যু
ধান মাড়াইয়ের সময় বজ্রপাত, নারীর মৃত্যু
রোগীর স্বজনেরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে আমাদের ভুল রক্ত দেওয়া হয়েছে। আমরা সেটি এনে নার্সের কাছে দেওয়ার পর নার্সরা বলেন, ডাক্তারের অর্ডারপত্র লাগবে। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর ডাক্তার রক্ত দেখে অর্ডারপত্র দিয়েছেন। এরপর নার্সরা রোগীর শরীরে সেটি পুশ করেন। এরপর থেকেই রোগীর সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। আমরা তখনো বুঝিনি যে রোগীকে ভুল রক্ত দেওয়া হয়েছে। পরে বাইরের একজন লোক বলেন, রোগীকে ভুল রক্ত দেওয়া হচ্ছে। এরপর আমরা হাসপাতালের নার্স ও ডাক্তারদের অনেক ডাকাডাকি করলেও তারা এসে রোগীর কোনো চিকিৎসা দেননি। তারা তড়িঘড়ি করে সেই রক্তের ব্যাগ ও রক্ত সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে চলে যান। পরে রাত ৮টার দিকে আরেকজন ডাক্তার এসে আমাদের রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। আমরা বলেছি, রোগীকে ঢাকায় নেওয়ার মত অবস্থা আমাদের নেই। এটা একটা সরকারি মেডিকেল, আমাদের রোগীর চিকিৎসা এখানেই করেন। তারপর তারা রোগীকে আর কোনো চিকিৎসা দেয়নি। এটি ভুল রক্ত নাকি সঠিক রক্ত সেটি বোঝার ক্ষমতা তো আমাদের নেই। তারা তিন জায়গায় চেক করে রক্ত দিয়েছে। এক জায়গায় ভুল হতে পারে, তিন জায়গায় তো ভুল হওয়ার কথা না। তাদের ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘‘বিকেল ৪টার দিকে ডিউটিতে ছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ঐশী ও মেডিকেল অফিসার ডা. নূরজাহান। সেসময় রোগীর শরীরে ‘ও’ পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত পুশ করা হয়েছে। এরপর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। আমি রাত ৮টায় ডিউটি শুরু করেছি। আমি ডিউটি শুরু করার পর যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি। এরপরও রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘রোগীর শরীরে খুব বেশি রক্ত যায়নি। তবে, কাগজপত্র না দেখে রক্ত পুশ করা ঠিক হয়নি। এটি একটি মারাত্মক ভুল।’’
রোগীর মৃত্যু সনদে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা উল্লেখ করা হয়েছে।’’ ভুল রক্ত পুশ করার বিষয়টি উল্লেখ না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এটি করা হয়েছে।’’
এ বিষয়ে জানতে ইন্টার্ন চিকিৎসক ঐশী ও মেডিকেল অফিসার ডা. নূরজাহানকে খুঁজলেও পাওয়া যায়নি।
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মানিকগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, ‘‘এ ঘটনায় এখনো আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/চন্দন/রাজীব