ছুটিতে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে যেসব ব্যায়াম করতে পারেন
Published: 29th, March 2025 GMT
ঈদে একটু বাড়তি খাওয়া-দাওয়া হবে এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু এতে যেন এক লাফে ওজন বেড়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার। জিমে না গিয়েও কিছু ব্যায়াম করার মাধ্যমে চর্বি কমাতে পারেন। চিকিৎসকেরা বলেন, ওজন দ্রুত বাড়লেও, ওজন কমতে অনেক সময় লেগে যায়। যদি পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়, তাহলে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলন ক্যান্সারে ঝুঁকিও বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেটের চর্বি হচ্ছে একধরনের ভিসেরাল ফ্যাট। এই ভিসেরাল ফ্যাট আমাদের বিপাকক্রিয়ায় নানা জটিলতা সৃষ্টি করে। যেমন রক্তনালীতে ও যকৃতে চর্বি জমে, ইনসুলিন রেসিসট্যান্স হয়।
যারা গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন তারা পুকুরে সাঁতার কাটতে পারেন, সাইকেল চালাতে পারেন, দৌড়াতেও পারেন। এক ঘণ্টা সাঁতার কাটলে ৪৯০ ক্যালরি খরচ হয়। ধীরে সাঁতার কাটলে খরচ হয় প্রায় ৪১৫ ক্যালরি। সাঁতারে শরীরের ওজন বহন করতে হয় না বলে কোমর বা হাঁটুর সমস্যার রোগীদের জন্যও এটা চমৎকার ব্যায়াম। সাঁতার কাটলে প্রায় প্রতিটি মাংসপেশির ব্যায়াম হয় এতে।
আরো পড়ুন:
ঈদের ছুটিতে সুস্থ থাকতে এই পাঁচ কাজ করবেন না
ঈদে ফাঁকা বাসার নিরাপত্তায় এই কাজগুলো করুন
যারা সাইকেল চালাতে পারেন তারা গ্রামে গিয়ে সাইকেল চালানোর সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। ১৫ মাইল বেগে এক ঘণ্টা সাইক্লিং করলে ৫৯০ থেকে ৯০০ ক্যালরি খরচ করা যায়। এই ব্যায়ামে জোড়ার ব্যথা বা সমস্যা কমে, ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ে।
যারা ঘরে ব্যায়াম করে চর্বি কমাতে চান তারা লেগ রেইস করতে পারেন। এই ব্যায়াম ঘরের মেঝেতেই করা যায়। এজন্য প্রথমে সোজা হয়ে মেঝেতে শুয়ে পা দুইটা ওপরে তুলে দিন। এরপর হাত দুইটি সোজা করে পাশে রাখুন। এবার নিশ্বাস নিতে নিতে দুই পা নিচে নামান। তবে মেঝেতে লাগানো যাবে না। কিছুটা দূরত্বে রেখে ওই অবস্থায় নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আবার পা দুইটি ৯০ ডিগ্রি ওপরে তুলে দিন। এভাবে কয়েকবার ওপরে ওঠান আর নিচে নামান। ১০ থেকে ১২ বার করলে উপকার পাবেন।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদে যেসব বিষয়ে সচেতন থাকলে আনন্দ মাটি হবে না
খাবারদাবার নিয়ে সতর্কতা: এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের দিন সবার বাড়িতেই উপাদেয় রান্নাবান্না হয়। ঈদে থাকে প্রচুর মিষ্টি বা ডেজার্ট-জাতীয় খাবার; সাথে পোলাও বা বিরিয়ানি, মাংস, কাবাব ইত্যাদি। রোজার শেষে প্রথম দিনে অনেক খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন কেউ কেউ। তাই এ ক্ষেত্রে সংযম দেখাতে হবে। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা ডেজার্ট আইটেম এড়িয়ে নোনতা বা ঝাল খাবার বেছে নিন। চাইলে পরিবারের ডায়াবেটিক রোগীর জন্য বিশেষ ডেজার্ট তৈরি করে রাখতে পারেন। দুপুরে ভারী খাবার খেলে রাতে একেবারে হালকা রুটি-সবজি বা স্যুপ-জাতীয় খাবার রাখুন। সব মাংসের আইটেম না খেয়ে কিছুটা সবজি সালাদ খান, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়। বাড়ি বাড়ি বেড়াতে গিয়ে একসঙ্গে অনেক না খেয়ে অল্প খান। বদহজম বা ডায়রিয়া হলে ভারী খাবারদাবার একেবারেই বাদ দিন।
পানিশূন্যতা যেন না হয়: এবার ঈদুল ফিতর পড়েছে চৈত্র মাসে। এ সময় ঝা ঝা রোদ্দুর। বাইরে বেড়াতে গিয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এই গরমে প্রচুর পানি খান, যেন পানিশূন্যতা না হয়। মনে রাখবেন, কোমল পানীয় বা কেনা জুস নয়, বরং পানিই সবচেয়ে সেরা পানীয়। তরমুজ, আনারস, বাঙ্গি ইত্যাদি ফলে প্রচুর জলীয় উপাদান থাকে। এসব রাখতে পারেন ঈদের টেবিলে। শশা, টমেটো, ক্যাপসিকামেও পানি আছে। এসব দিয়ে সালাদ বা রায়তা তৈরি করে নিতে পারেন। টক দই গরমে প্রশান্তি আনবে। খেতে পারেন লাচ্ছি বা ঘোল।
আরও পড়ুনঈদ উৎসবেও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন যেভাবে১৭ জুন ২০২৪শিশুদের দিকে নজর রাখুন: যাঁরা গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গেছেন, তাঁরা শিশুদের কখোনোই একা ছাড়বেন না। পুকুর বা জলাধারের কাছে যেতে দেবেন না। যাঁরা ঈদে সমুদ্র বা পাহাড়ে বেড়াতে যাচ্ছেন, তাঁরাও বিশেষ করে নজর রাখুন যেন শিশু কোন দুর্ঘটনায় না পড়ে। শিশুদের সহজপাচ্য খাবার খেতে দিন, খাবার নিয়ে জোরাজুরি করবেন না। যথেষ্ট পানি খাচ্ছে কি না আর যথেষ্ট প্রস্রাব হচ্ছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
বয়স্কদের খেয়াল করুন: পরিবারে বয়স্করা সবচে নাজুক পরিস্থিতিতে থাকুন। বয়স্কদের অনেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ বা কিডনি রোগে ভুগছেন। তাই তাঁদের উপযোগী কিছু খাবার আলাদা করে প্রস্তুত করা উচিত। উৎসব উপলক্ষে একদিন নিয়মের বাইরে খেলে কিছু হবে না ভেবে যদি খেতেও চান, তবে পরিমিত দিন। হুল্লোড়-ব্যস্ততায় ওষুধপত্র ঠিকমতো খাচ্ছেন কি না, খেয়াল রাখুন। যথেষ্ট ওষুধ আগেই কিনে রাখুন।
আরও পড়ুনকখনো হিমশীতল পাহাড়ে, কখনো সাইকেলে কেটেছে ঈদ৩০ মার্চ ২০২৫কাজ ভাগাভাগি: উৎসব-পরবে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন পরিবারের নারী সদস্যরা। রান্নাবান্না, পরিবেশন, ধোওয়া-পাকলা, অতিথি আপ্যায়ন করতে গিয়ে প্রায়ই অসুস্থ বা দুর্বল হয়ে পড়েন তাঁরা। অনেক সময় গৃহ সহকারী ছুটিতে গেলে অবস্থা আরও শোচনীয় হয়। পরিবারের সবার উচিত এ সময় তাঁকে কাজে সাহায্য করা। অতিথি আপ্যায়নে বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বাড়ির ছোটবড় সবার অংশগ্রহণ থাকা উচিত, যাতে মা বা স্ত্রী একটু বিশ্রাম পান।
অসুস্থতায় অবহেলা নয়: ডায়রিয়া হলে খাবার স্যালাইন, জ্বর বা ব্যথা-বেদনায় প্যারাসিটামল সেবন করা যায়। বদহজম বা অ্যাসিডিটির জন্য অ্যান্টাসিড বা গ্যাসের ওষুধ। কিন্তু কিছু কিছু উপসর্গ অবহেলা করা যাবে না। যেমন হঠাৎ বুকে প্রচন্ড ব্যথা বা চাপ, রক্তচাপ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া, কোনো দিক অবশ হওয়া বা মুখ বেঁকে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি জরুরি অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিতে হবে। ঈদের ছুটিতেও হাসপাতালের ইমার্জেন্সি খোলা থাকে।
আরও পড়ুনছোটবেলার ঈদ বড়বেলার ঈদ১০ ঘণ্টা আগে