মধুবালাকে কেন কষিয়ে থাপ্পড় মেরেছিলেন দিলীপ কুমার?
Published: 29th, March 2025 GMT
বলিউডের তারকা প্রেমিক জুটি ছিলেন দিলীপ কুমার ও মধুবালা। ‘তারানা’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় প্রেমে পড়েন এই যুগল। তাদের সম্পর্ক ছিল সাত বছর। পরে মধুবালার পরিবারের বিরূপ মনোভাবসহ বেশ কিছু কারণে তাদের দূরত্ব বাড়ে।
‘মুঘল-ই-আজম’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন ভেঙে যায় দিলীপ কুমার ও মধুবালার প্রেমের সম্পর্ক। প্রেম ভাঙলেও সিনেমাটির শুটিং শেষ করেন তারা। আর এ সিনেমার শুটিং সেটে ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা। কে.
ডিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, ‘মুঘল-ই-আজম’ সিনেমায় সেলিম চরিত্রে অভিনয় করেন দিলীপ কুমার আর আনারকলি চরিত্রে মধুবালা। একটি দৃশ্যে সেলিম আনারকলিকে থাপ্পড় মারেন। সাধারণত, এ ধরনের দৃশ্য রূপায়ন করার সময়ে অভিনয়শিল্পীরা সত্যি সত্যি থাপ্পড় মারেন না। তবে এ ক্ষেত্রে ভিন্ন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন দিলীপ কুমার। কারণ মধুবালাকে পূর্ণ শক্তি দিয়ে থাপ্পড় মেরেছিলেন তিনি।
খাতিজা আকবরের লেখা ‘আই ওয়ান্ট টু লিভ: দ্য স্টোরি অব মধুবালা’ বইতে এই ঘটনাটি বর্ণনা করা হয়েছে। ‘মুঘল-ই-আজম’ সিনেমায় মধুবালা-দিলীপ কুমারের সহশিল্পী ছিলেন অজিত। ‘নয়া দৌড়’ সিনেমায়ও দিলীপ কুমারের সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি। অজিত বলেন, “দিলীপ কুমার মধুবালাকে পূর্ণ শক্তি দিয়ে থাপ্পড় মারেন।” যদিও এই শটই চূড়ান্ত করা হয়। তবে শট শেষ হওয়ার পর শুটিং সেটে অস্বস্তিকর নীরবতা নেমেছিলে। কারণ কেউ কল্পনাও করেননি থাপ্পড়টি সত্যি সত্যি দেওয়া হবে। ওই সময়ে মধুবালা-দিলীপ কুমারের মাঝে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল; যা তাদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের প্রতিফলন ছিল।
১৯৫১ সালে মুক্তি পায় ‘তারানা’ সিনেমা। এ সিনেমায় দিলীপ কুমারের বিপরীতে প্রথমবার অভিনয় করেন মধুবালা। মূলত তখন থেকে তাদের বন্ধুত্ব; সেখান থেকে ভালোবাসার স্ফুলিঙ্গ জ্বলতে শুরু করে। জানা যায়, মধুবালা নিজের হেয়ারড্রেসারের হাতে দিলীপ কুমারের জন্য উর্দুতে লেখা চিঠি ও গোলাপ ফুল পাঠান। চিঠিতে লেখা ছিল, ‘যদি ভালোবাসেন, তাহলে গোলাপ ফুলটি গ্রহণ করুন।’ দীলিপ কুমার সেই গোলপ গ্রহণ করেন কারণ ততদিনে তিনি মধুবালার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন।
মধুবালা-দিলীপ কুমার সংসার করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু মধুবালার বাবা আতাউল্লাহ খান বাধ সাধেন। দিলীপ কুমার দুটো শর্ত দিয়েছিলেন মধুবালাকে। প্রথমত. নিজের পরিবার ছাড়তে হবে। দ্বিতীয়ত. অভিনয় ছাড়তে হবে। অভিনয় ছাড়ার বিষয়ে অবশ্য দিলীপ কুমারের অন্য যুক্তি ছিল, স্টুডিওর বদ্ধ পরিবেশে মধুবালা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। কারণ তার হৃদযন্ত্রে জন্মগত ছিদ্র ছিল। বলিউড ছাড়তে রাজি হলেও নিজের মা-বাবাকে ছাড়তে নারাজ ছিলেন মধুবালা। এরপরই দিলীপ কুমার-মধুবালার সম্পর্ক ভেঙে যায়।
দিলীপ কুমারের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গেলেও আজীবন তাকে ভালোবেসেছেন মধুবালা। দিলীপ কুমার ‘সরি’ বললে হয়তো তাদের জীবনের গল্প অন্যরকম হতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। এ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে সংগীতশিল্পী কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। বিয়ের ৯ বছর পর অর্থাৎ ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান বলিউডের মেরিলিন মনরো।
১৯৬৬ সালে সায়রা বানুকে বিয়ে করেন দিলীপ কুমার। জীবনের শেষ দিনগুলোতে মধুবালা বারবার বলতেন, ‘আমি বাঁচতে চাই।’ অসুস্থতার সময়ে তাকে দেখতে যাননি দিলীপ। তবে তার মৃত্যুর পর তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। ২০২১ সালের ৭ জুলাই মারা যান বরেণ্য এই অভিনেতা।
ঢাকা/শান্ত
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জয়পুরহাটে অর্থ আত্মসাতের মামলায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ব্যবস্থাপক আবার গ্রেপ্তার
জয়পুরহাটে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের মামলায় ইসলামী ব্যাংকের আক্কেলপুর এজেন্ট শাখার ব্যবস্থাপক রিজওয়ানা ফারজানাকে (৩৫) আবারও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার তালোড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে আক্কেলপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম রব্বানী আজ সোমবার সকালে বলেন, আজ গ্রেপ্তার রিজওয়ানা ফারজানাকে আদালতে পাঠানো হবে। মামলার আরও দুই আসামি পলাতক। পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
রিজওয়ানা আক্কেলপুর পৌর শহরের হাজিপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। এজেন্ট ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর পর থেকে তিনি আক্কেলপুর শাখায় কর্মরত। এজেন্ট ব্যাংকে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫টি মামলা হয়েছে। আরও অন্তত ১০ থেকে ১২ জন গ্রাহক মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এসব ভুক্তভোগীর দাবি, এখন পর্যন্ত তিন কোটির বেশি টাকা আত্মসাতের হিসাব পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও অভিযোগকারীদের সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ মার্চ ইসলামী ব্যাংকের আক্কেলপুর এজেন্ট শাখায় গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়ে। ওই দিন ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন। তিনি তখন জানিয়েছিলেন, এসব টাকায় গ্রামে জমি কেনার পাশাপাশি বিভিন্ন সম্পদ অর্জন করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁর স্বীকারোক্তির ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। ওই রাতেই ব্যাংকটির কার্যালয় থেকে ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা, ব্যবস্থাপক রিজওয়ানা ফারজানা ও এজেন্ট জাহিদুল ইসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে এক গ্রাহক ওই তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এক দিন পরই তাঁরা তিনজন জামিনে মুক্তি পান।
ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা টাকা ফেরতসহ জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে ৯ এপ্রিল আক্কেলপুর পৌর শহর ও ১৩ এপ্রিল জয়পুরহাট শহরের ইসলামী ব্যাংকের সামনে মানববন্ধন করেন। তাঁরা ব্যাংকটির জেলা শাখায় ধরনা দিয়েও টাকা ফেরতের কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না।
ভুক্তভোগী গ্রাহক ও আক্কেলপুর এফ ইউ পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবদুস ছালাম মণ্ডল বলেন, ‘এ পর্যন্ত তিন কোটির বেশি টাকা আত্মসাতের হিসাব পেয়েছি। এখনো অনেকেই তাঁদের ব্যাংক হিসেবের খোঁজ নিতে পারেননি। এজেন্টের জামানতের টাকাও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নেই। এই টাকা তাঁরা কীভাবে সরালেন, সেটা ইসলামী ব্যাংক জয়পুরহাট শাখার কর্মকর্তাদের জানার কথা।’