Samakal:
2025-03-31@14:34:22 GMT

তিস্তায় চীনকে আমন্ত্রণ

Published: 29th, March 2025 GMT

তিস্তায় চীনকে আমন্ত্রণ

তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পে (টিআরসিএমআরপি) অংশ নিতে চীনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বাংলাদেশ। বেইজিং সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ আমন্ত্রণ জানান।
চার দিনের সরকারি সফরে চীনে অবস্থান করছেন ড. ইউনূস। গতকাল শুক্রবার বেইজিংয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। 
যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পানি প্রবাহের পূর্বাভাস, বন্যা প্রতিরোধ ও দুর্যোগ হ্রাস, নদী খনন, পানি ব্যবস্থাপনা, পানিসম্পদ উন্নয়ন এবং এ-সংক্রান্ত প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষ সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। ইয়ারলুং সাংপো (ব্রহ্মপুত্র) ও যমুনা নদীর পানি প্রবাহ-সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ে সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিষয়ে উভয় পক্ষ ইতিবাচক। 
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সমন্বিত প্রচেষ্টায় একমত। সামুদ্রিক বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করতে এবং উপযুক্ত সময়ে এ বিষয়ে সংলাপ করতে চায় উভয় দেশ।

৫০ বছরের মহাপরিকল্পনার আহ্বান
চলমান চীন সফরে কয়েকশ নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য চীনের কাছ থেকে ৫০ বছরের মহাপরিকল্পনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বেইজিংয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে চীনের পানিসম্পদ মন্ত্রী লি গোইয়িংয়ের সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
ড.

ইউনূস চীনের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে বলেন, চীন পানি সমস্যার সমাধানে বিস্ময়কর সাফল্য দেখিয়েছে। মন্ত্রীকে তিনি বলেন, ‘আপনাদের যে সমস্যা রয়েছে, আমাদেরও একই সমস্যা। তাই, যদি আপনাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করেন, তাহলে আমরা খুশি হবো।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ অঞ্চল। আমাদের দেশ কয়েকশ নদী দিয়ে ঘেরা। পানি আমাদের জীবন দেয়, তবে কখনও কখনও শত্রুতে পরিণত হয়। জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, নদী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেন পরিবেশের ক্ষতি না হয়।’
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উন্নয়নের চাহিদার ফলে নদীতীরের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, একই অবস্থা ভারতের উজান অঞ্চলে বেড়েছে। এ ছাড়া পলি জমে নদীর মাঝে চর জাগছে। এটা কখনও কখনও প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে এবং নদীর মৃত্যু ঘটায়।
চীনের পানিসম্পদ মন্ত্রী স্বীকার করেন, চীন ও বাংলাদেশ পানি ব্যবস্থাপনায় একই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তিনি বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

যে কারণে এ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা
বাংলাদেশ-ভারত অভিন্ন নদী তিস্তা। বাংলাদেশ অংশে পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত একটি প্রকল্প নিয়ে নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলছিল। একসময় এর পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েন ছিল। পরে এর ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। পানির ন্যায্য হিস্যা না পেয়ে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে চীনের সহযোগিতা চায়। এতে আপত্তি তোলে ভারত। তারা এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ দেখায়। প্রকল্পটিতে শুধু পানি ভাগাভাগি বা ব্যবস্থাপনা নয়, এর সঙ্গে নিরাপত্তা ইস্যু বড় করে দেখছে।
দিল্লি থেকে সমাধান না পেয়ে যতটুকু পানি পাওয়া যাচ্ছে, তার সর্বোচ্চ ব্যবহার ও সংরক্ষণে মনোযোগ দেয় ঢাকা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরে দুই দেশের নদী ব্যবস্থাপনা সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয় উভয় দেশ।

এর ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের মে মাসে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনাবিষয়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তাব (পিডিপিপি) প্রস্তুত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এর আনুষ্ঠানিক শিরোনাম টিআরসিএমআরপি। ২০১৯ সালের ৩ জুন পাউবো মহাপরিচালকের সই করা প্রস্তাবটি ২০২০ সালের ২৩ জুলাই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, পাওয়ার চায়না প্রস্তাবিত টিআরসিএমআরপি বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে যাওয়ার পর থেকে মূলত ভারতের দিক থেকে আপত্তি ওঠে।
নাম না প্রকাশের শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে দরকষাকষি কয়েক দশক ধরে চলছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের দিকে এগোচ্ছিল। তখন তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়। তবে চুক্তি সইয়ে ব্যর্থ হয় ভারত। এর পর এক দশক পানি নিয়ে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক করতে দেয়নি ভারত।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ত ব প রকল প সহয গ ত আম দ র ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মা সেতুতে সর্বমোট টোল আদায় ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা 

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত উভয় প্রান্তের টোল প্লাজায় সর্বমোট টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ৪৫৯ টাকা। আর ঈদযাত্রার পাঁচ দিনে শনিবার পর্যন্ত পদ্মা সেতু হয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময়ে ১৭ কোটি ৪২ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।

সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শেষ মুহূর্তের ঈদযাত্রায় পদ্মা সেতু অতিক্রম করে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার লাখ লাখ মানুষ। তবে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ নেই। কখনও কখনও একেবারেই ফাঁকা থাকছে টোল প্লাজা। 

শনিবার পদ্মা সেতু দিয়ে ৩৬ হাজার ৯২৪ যান পারাপার হয়। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ছিল ৮ হাজার ৭৫০টি। টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৭ লাখ ৯২ হাজার ২০০ টাকা।

এছাড়া শনিবার পর্যন্ত ঈদযাত্রার পাঁচ দিনে পদ্মা সেতু হয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময়ে টোল আদায় হয়েছে ১৭ কোটি ৪২ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা।

সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক আলতাফ হোসেন আরও জানান, লম্বা ছুটির কারণে এবার ঈদযাত্রায় চাপ অপেক্ষাকৃত কম। রোববার ভোরেও টোল প্লাজা ঘিরে যানবাহনের লম্বা লাইন ছিল। কিন্তু বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে থাকে।

টোল আদায়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, রাত পোহালেই ঈদ, কর্মজীবী ও ব্যবসায়ী অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। তাই রোববারও অস্থায়ী টোল বুথটি চালু রাখা হয়। এখন ৯টি লেনে টোল আদায় করা হচ্ছে। তবে অনেকেই গরম এবং যানজট এড়াতে সেহেরির পরপরই বেরিয়ে পড়েন। তাই সকালে কিছুটা চাপ থাকলেও বেলা গড়ানোর পর চাপ কমতে থাকে।

একই চিত্র দেখা গেছে জেলার অপর মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রামের পথেও। রোববার সকাল থেকে এ মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ১৩ কিলোমিটারে ছিল না কোনো যানজট।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পদ্মা সেতুতে সর্বমোট টোল আদায় ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা