দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা দুর্নীতির মামলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক ভিসি ড. মো. আব্দুস সাত্তারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুদকের চার্জশিটের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানার অন্য আসামিরা হলেন– ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক ড.

কামাল উদ্দীন ও যবিপ্রবির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপপরিচালক আব্দুর রউফ। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট দুদক যশোরের তৎকালীন উপপরিচালক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এজাহারে বলা হয়, ২০০৯ সালে যবিপ্রবির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদের জন্য আবেদন করেন আব্দুর রউফ। তিন সদস্যের নিয়োগ বাছাই বোর্ডে ড. আব্দুস সাত্তার সভাপতি, যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত খালেদুর রহমান টিটো সদস্য ও ড. কামাল উদ্দিন বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত শর্তানুযায়ী আব্দুর রউফের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। এরপরও বাছাই বোর্ড তাঁকে ওই পদে নিয়োগে সুপারিশ করে। যবিপ্রবির চতুর্থ রিজেন্ট বোর্ড সভায় এটি উপস্থাপিত হলে অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আব্দুর রউফকে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। বোর্ড সভাপতি হিসেবে ড. আব্দুস সাত্তার উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তাঁকে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র পর য় ন সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের ছুটিতে লাশবাহী গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন এসআই কবির

ঈদের ছুটিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল সাভার থানার এসআই ফজলুর রহমান কবিরের। ফিরলেন ঠিকই; কিন্তু লাশ হয়ে। লাশবাহী গাড়িতে করে গতকাল শুক্রবার নান্দাইল উপজেলার মেরেঙ্গা গ্রামে ফেরে তাঁর নিথর দেহ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা, স্ত্রী ও সন্তানরা। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। শুক্রবার বাদ জুমা জানাজা শেষে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
মুশুলী ইউনিয়নের মেরেঙ্গা গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মৃত শুনু ভূঁইয়ার তিন ছেলের মধ্যে কনিষ্ঠ ফজলুর রহমান কবির (৩৯)। স্থানীয় আব্দুল জব্বার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং নান্দাইল সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। ঢাকার তিতুমীর কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এর পর এলএলবি পাস করেন তিনি। ২০০৬ সালে পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। পদোন্নতি পেয়ে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও ৬ বছর আগে উপপরিদর্শক (এসআই) হন। সর্বশেষ সাভার থানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে সাভারে বসবাস করতেন স্ত্রী মেঘলা, ৩ বছরের মেয়ে আয়াত, ১৮ মাস বয়সী ছেলে আলভী ও মা শরবানু। বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন মেজো ভাই ইকবাল হোসেন। সুখেই কাটছিল তাদের দিন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শুক্রবার স্ত্রী-সন্তান ও মাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফেরার কথা ছিল কবিরের। কিন্তু বিধিবাম। তাঁর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে একটি বালুবাহী ট্রাক।
গত বৃহস্পতিবার সাভার থানা এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে সহায়তা করেন এসআই কবির। এর পর দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় একটি পেট্রোল পাম্পে রাখা তাঁর বাইক নিয়ে থানায় ফেরার পথে তাঁকে চাপা দেয় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবাহী ট্রাক। রাজধানীর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাভার থানার পাঁচজন পুলিশ একটি ফ্রিজিং গাড়িতে করে লাশ নিয়ে কবিরে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান শুক্রবার ভোরে।
শুক্রবার দুপুরে কবিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লোকজনের ভিড়। বাড়ির সামনেই লাশবাহী গাড়ি। ঘরের ভেতর থেকে আসছে স্বজনের কান্নার শব্দ। নিহত কবিরের বড় ভাই হারুন অর রশিদ সিভিল এভিয়েশনে কর্মরত। তাঁর ভাষ্য, সাভার থানা পুলিশ সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাটি জানিয়েছে তাদের। তিনি বলেন, ‘মা কবিরের কাছেই ছিলেন। কথা ছিল ঈদের ছুটিতে শুক্রবারে সবাই একসঙ্গে বাড়িতে আসবেন। সবাই এসেছে, তবে আমার আদরের ছোট ভাইটি লাশ হয়ে ফ্রিজিং গাড়িতে করে। এটুকু বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন তিনি।
লাশের সঙ্গে আসা সাভার থানার এএসআই নেসার উদ্দিনের ভাষ্য, কবিরকে চাপা দেওয়া ট্রাকটি পালানোর চেষ্টা করলে চালকসহ আটক করা হয়।
নান্দাইল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, সহযোগিতার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লোহাগাড়ায় যাত্রীবাহী দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত ৫
  • ঈদের ছুটিতে লাশবাহী গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন এসআই কবির