ঈদের ছুটিতে লাশবাহী গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন এসআই কবির
Published: 28th, March 2025 GMT
ঈদের ছুটিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়িতে ফেরার কথা ছিল সাভার থানার এসআই ফজলুর রহমান কবিরের। ফিরলেন ঠিকই; কিন্তু লাশ হয়ে। লাশবাহী গাড়িতে করে গতকাল শুক্রবার নান্দাইল উপজেলার মেরেঙ্গা গ্রামে ফেরে তাঁর নিথর দেহ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা, স্ত্রী ও সন্তানরা। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। শুক্রবার বাদ জুমা জানাজা শেষে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
মুশুলী ইউনিয়নের মেরেঙ্গা গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মৃত শুনু ভূঁইয়ার তিন ছেলের মধ্যে কনিষ্ঠ ফজলুর রহমান কবির (৩৯)। স্থানীয় আব্দুল জব্বার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং নান্দাইল সরকারি শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। ঢাকার তিতুমীর কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এর পর এলএলবি পাস করেন তিনি। ২০০৬ সালে পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। পদোন্নতি পেয়ে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও ৬ বছর আগে উপপরিদর্শক (এসআই) হন। সর্বশেষ সাভার থানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে সাভারে বসবাস করতেন স্ত্রী মেঘলা, ৩ বছরের মেয়ে আয়াত, ১৮ মাস বয়সী ছেলে আলভী ও মা শরবানু। বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন মেজো ভাই ইকবাল হোসেন। সুখেই কাটছিল তাদের দিন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শুক্রবার স্ত্রী-সন্তান ও মাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফেরার কথা ছিল কবিরের। কিন্তু বিধিবাম। তাঁর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে একটি বালুবাহী ট্রাক।
গত বৃহস্পতিবার সাভার থানা এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে সহায়তা করেন এসআই কবির। এর পর দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় একটি পেট্রোল পাম্পে রাখা তাঁর বাইক নিয়ে থানায় ফেরার পথে তাঁকে চাপা দেয় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবাহী ট্রাক। রাজধানীর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাভার থানার পাঁচজন পুলিশ একটি ফ্রিজিং গাড়িতে করে লাশ নিয়ে কবিরে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান শুক্রবার ভোরে।
শুক্রবার দুপুরে কবিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লোকজনের ভিড়। বাড়ির সামনেই লাশবাহী গাড়ি। ঘরের ভেতর থেকে আসছে স্বজনের কান্নার শব্দ। নিহত কবিরের বড় ভাই হারুন অর রশিদ সিভিল এভিয়েশনে কর্মরত। তাঁর ভাষ্য, সাভার থানা পুলিশ সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাটি জানিয়েছে তাদের। তিনি বলেন, ‘মা কবিরের কাছেই ছিলেন। কথা ছিল ঈদের ছুটিতে শুক্রবারে সবাই একসঙ্গে বাড়িতে আসবেন। সবাই এসেছে, তবে আমার আদরের ছোট ভাইটি লাশ হয়ে ফ্রিজিং গাড়িতে করে। এটুকু বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন তিনি।
লাশের সঙ্গে আসা সাভার থানার এএসআই নেসার উদ্দিনের ভাষ্য, কবিরকে চাপা দেওয়া ট্রাকটি পালানোর চেষ্টা করলে চালকসহ আটক করা হয়।
নান্দাইল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, সহযোগিতার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে হেরোইনসহ শামীম ওসমানের শ্যালক আরমান গ্রেপ্তার
সিদ্ধিরগঞ্জে ১১০ পুড়িয়া হেরোইনসহ সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের শ্যালক মাহমুদুল হাসান আরমান (৩৫) কে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত সোয়া ৮ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্স সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি মৌচাক বসু হাজী মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মাদক দ্রব্যসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মাহমুদুল হাসান আরমান সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বসু হাজী মার্কেট এলাকার বাসিন্ধা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের তথ্য ও সমাজকল্যান সম্পাদক হাজী সালাউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে।
হাজী সালাউদ্দিন আহম্মেদ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের মামা শ্বশুর। সেই সুবাধে আরমান শামীম ওসমানের শ্যালক বলে জানা যায়।
গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লাহ জানান, গতকাল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মিজমিজি মৌচাক বসু হাজী মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ির সামনে থেকে ১১০ গ্রাম ওজনের ১১০ পুড়িয়া নিষিদ্ধ মাদক দ্রব্য হেরোইনসহ মাহমুদুল হাসান আরমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগেও আরমান বিদেশী পিস্তলসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। এরআগেও তিনি মাদকসহ আটক হওয়ার পর মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে ছাড়া পায় বলেও এলাকাবাসী জানায়।