Samakal:
2025-04-21@06:14:29 GMT

বারান্দা বাগানে ঘুঘুর বাসা

Published: 28th, March 2025 GMT

বারান্দা বাগানে ঘুঘুর বাসা

ফুলের টবে বাসা বানিয়েছে একজোড়া ঘুঘু। পেড়েছে ডিম। জন্ম নিয়েছে দুটি ফুটফুটে ছানা। তাও আবার ঘরের বারান্দায়! ইট-পাথরের নগরে এ যেন কল্পনার মতো। ব্যতিক্রমী এ দৃশ্য দেখা যায় রাজধানীর গুলশানের সাততলার এক বারান্দায়। এখানে পাখিরা আসে, বিশ্রাম নেয় আবার চলে যায়। থেকে যায় ঘুঘু দম্পতি। বারান্দার বাগানেই তাদের সংসার।
মা পাখি যখন ছানাদের খাবার আনতে যায় তখন পাশে থাকে বাবা। খাবার নিয়ে এলে ছানাদের কিচিরমিচির শব্দ বাড়ে। এমন কিচিরমিচির শব্দ শুনতে কার না ভালো লাগে? তবে সাবিহা তাবাসসুমকে ভাগ্যবান বলতেই হয়। যার হাতের ছোঁয়ায় বারান্দায় গড়ে ওঠেছে সবুজে ঘেরা বাগান। ছোটবেলা থেকেই শখের বসে বাগান এবং লেখালেখি করেন তিনি। 
সাবিহা বলেন, ‘বারান্দায় সবসময়ই কোনো না কোনো পাখি আসত। আবার চলে যেত। কিছুদিন ধরে ঘুঘু দম্পতির বেশ আনাগোনা লক্ষ্য করি। হঠাৎ দেখি বারান্দার ফুলের টবে বাসা বানিয়েছে তারা। ডিম পাড়ে এবং দুটো বাচ্চাও জন্ম নেয়। প্রথম প্রথম দেখে তো অবাক হয়েছি। এরপর থেকে আরও সচেতন হয়েছি; যাতে তাদের কোনো রকম অসুবিধা না হয়। বারান্দার দরজা কম খোলা রাখছি। আবার কাপড় শুকাতেও দিচ্ছি না। বাসায় লোকজন কম থাকায় এ ক্ষেত্রে সুবিধা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাখি দম্পতির ছানাদের ঘিরে ব্যস্ততা দেখে কী যে ভালো লাগে! একজন ছানাদের পাশে থাকে তো আরেকজন উড়ে চলে যায়। দেখে আর উঠতেই ইচ্ছে করে না। কোথাও যাওয়ার সময় কিংবা ফিরে এসেই সবার আগে তাদের দেখি। ভিডিও করি, ছবি তুলে রাখি। পরিচিতদের জানালে তারাও অবাক হয়। অনেকে নিয়মিত খোঁজখবর নেয়। আগে থেকেই বারান্দায় পাখিদের জন্য আলাদাভাবে কিছু খাবার ও পানি রাখতাম। বিশ্রামের জন্য মাটির হাঁড়ি, বাবুইর বাসাও ঝুলিয়ে রেখেছি।’
ছানাদের খাঁচায় ভরে পালন করার পরামর্শ দিয়েছেন কেউ কেউ। এটি করতে একেবারেই নারাজ সাবিহা। তাঁর মতে, ‘পাখিরা যখন বিশ্বাস করে আমার বারান্দায় বাসা বানিয়েছে এখন তাদের বিশ্বাস ভঙ্গ করি কীভাবে? আমি চাই, তারা নিজেদের মতো করে বসবাস করুক।’ আমার মেয়ে মুনতাহাও এভাবে চিন্তা করে।
সাবিহার বারান্দা বাগানের সাদা চেরি, লাল চেরি বিশেষ নজর কাড়ে। সাবিহা বলেন, ‘গাছগুলো শুধু সজীবতার প্রতীক নয়, এগুলো বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। পাথরকুচির পাতা শ্বাসকষ্ট এবং ঠান্ডাজনিত সমস্যায় আরাম দেয়। তুলসী গাছের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ আছে।’
এই বারান্দা বাগানে আরও রয়েছে রঙ্গন ও কামিনী ফুলের গাছ। যেগুলো বাগানের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বহুগুণ। রঙ্গনের লাল ফুলগুলো যেমন বাগানকে জীবন্ত করে তোলে, তেমনি কামিনীর সাদা ফুলের মনোরম ঘ্রাণ পুরো বারান্দায় ছড়িয়ে পড়ে। যেন ব্যস্ত নগরজীবনে এক টুকরো সবুজ বন। সাবিহা বলেন, ‘আমি প্রকৃতি ভালোবাসি। সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মধ্যে বড় হয়েছি। সে সূত্রেই প্রকৃতির সঙ্গে ভালোবাসা। গাছপালা, পশুপাখি আমার দারুণ পছন্দ ছোটবেলা থেকে। ব্যস্ততার শেষে ক্লান্তি এসে যখন একটু প্রশান্তির জন্য বিদ্রোহ শুরু করে তখন বারান্দার প্রাকৃতিক পরিবেশ সব ক্লান্তি, অবসাদ এক নিমেষেই দূর করে দেয়।’ v

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে অনুমতির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি বুধবার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কার ঘটনায় করা মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে—ঢাকা মহানগর পুলিশের এমন সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিট শুনানির জন্য আগামী বুধবার (২৩ এপ্রিল) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

শুনানির জন্য বিষয়টি উত্থাপন করা হলে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এই দিন ধার্য করেন।

৯ এপ্রিল ঢাকা মহানগর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংক্রান্ত মামলায় আসামি গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। আদেশে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংক্রান্ত মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা অধিক। এসব মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণসহ অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। উপযুক্ত প্রমাণ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এই আদেশের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন গতকাল রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন। আজ সকালে আদালতে রিটের বিষয়টি উত্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রিট আবেদনকারী মো. জসিম উদ্দিন।

আরও পড়ুনবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিট২২ ঘণ্টা আগে

পরে আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিটের বিষয়টি উত্থাপন করা হলে আদালত ২৩ এপ্রিল শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।’

রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, ৯ এপ্রিলের অফিস আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়। রুল হলে বিচারাধীন অবস্থায় অফিস আদেশের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, ডিবি প্রধান, সিআইডি প্রধান, এসবি প্রধানসহ সাতজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

আরও পড়ুনবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে১২ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ