বাঁচানো গেল না বাঁশখালীর জলদি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ঝিরির কাদায় আটকে পড়া হাতিটিকে। শুক্রবার সকালে মারা যায় হাতিটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঁশখালীর রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ।
গত ৫ মার্চ জলদি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ঝিরির কাদায় আটকে পড়ে হাতিটি। খবর পেয়ে নাপোড়া বিটের কর্মীরা ঝিরির কাদা থেকে একে উদ্ধার করেন। দোহাজারী সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জনের তত্ত্বাবধানে আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী মা হাতিটিকে ঝিরির পাশেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। বন বিভাগের ১০-১২ জন কর্মী প্রতিদিন ৪ কিলোমিটার পাহাড় ঝিরি ডিঙিয়ে বনে গিয়ে এর পরিচর্যা করেছিলেন। উদ্ধারের পর সে উঠে দাঁড়াতে বা বসতে না পারলেও খাবার খাচ্ছিল। তিন দিন ধরে খাবার না খাওয়ায় দুর্বল হয়ে গতকাল দুপুরে মারা যায়।
বাঁশখালীর রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, হাতিটির ওজন ২ টনেরও বেশি। দুর্গম বন থেকে উদ্ধার করে একে সাফারি পার্কে নেওয়া সম্ভব হয়নি। একে সারিয়ে তুলতে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।
হাতিটির চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডা.

জুলকারনাইন বলেন, উদ্ধারের পরদিন থেকে হাতিটিকে অ্যান্টিবায়োটিকসহ ড্রাগ দেওয়া শুরু হয়। ১২ তারিখ পর্যন্ত এর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। একজন হাতি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ড্রাগ দেওয়া বন্ধ করার পর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। এর পর বিভিন্ন দেশের হাতি বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নিয়েছি। শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে পারলাম না। ময়নাতদন্ত শেষে হাতিটিকে ঝিরির পাশেই মাটিচাপা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ডিএফও আবু নাসের মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, আহত হাতিটিকে গভীর বন থেকে উদ্ধার করতে বিশেষায়িত হেলিকপ্টার ও ভেট হাসপাতালের প্রয়োজন হতো। আমাদের সে সক্ষমতা নেই।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দীর্ঘদিন আত্মগোপনে, চাঁদরাতে বাড়িতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ছিলেন আত্মগোপনে। কিন্তু পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করার জন্য গ্রামের বাড়িতে আসেন। গ্রামের বাড়িতে এসেই স্থানীয়দের হাতে গণপিটুনির শিকার হলেন এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।

রোববার রাতে ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

গণপিটুনির শিকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম মো. জসিম উদ্দিন জিসান (৩৬)। তিনি সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কান্তার পাড়ার আহমদ নবীর ছেলে। এ ছাড়াও তিনি উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

জানা যায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. জসিম উদ্দিন জিসান আত্মগোপনে থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিপক্ষে পোস্ট দিতেন। ফলে স্থানীয়রা তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। সর্বশেষ রোববার ঈদ উদযাপনের জন্য তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। তার আসার খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। 

বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

আরও জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে উপজেলার কেরানিহাট চত্বরে মিছিল করেছিল ছাত্র-জনতা। সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কেঁওচিয়া ইউনিয়নের জনার কেঁওচিয়া গ্রামের গুরা মিয়া বাড়ির মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো. তসলিম বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় জিসান ৫৮ নম্বর এজহারভুক্ত আসামি।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, ৫ আগষ্টের পর থেকে জিসান ঘরে ছিল না। চাঁদ রাতে পরিবারের সদস্যদের জামা-কাপড় দিতে গেলে এলাকার লোকজন তাকে ধরে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেলে তার স্বজনরা চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জেনেছি। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ বা মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ