Samakal:
2025-03-31@10:13:06 GMT

হাতের টানেই উঠে যায় কার্পেটিং

Published: 28th, March 2025 GMT

হাতের টানেই উঠে যায় কার্পেটিং

আমতলীতে সড়কের নির্মাণকাজ এক সপ্তাহ আগে শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে হাত দিয়ে টানলেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। এ চিত্র দেখা গেছে চাওড়া ইউনিয়নের লোদা সেতু থেকে কাউনিয়া ইসমাইল মাস্টারবাড়ি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়কে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুরু থেকে সড়কটিতে নিম্নমানের কাজ হচ্ছিল। বাধা উপেক্ষা করে ঠিকাদার কাজ অব্যাহত রাখেন।
তবে সড়ক নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়নি দাবি করেছেন দায়িত্বে থাকা উপজেলা এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন। 
২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল চাওড়া ইউনিয়নের লোদা সেতু থেকে কাউনিয়া ইসমাইল মাস্টারবাড়ি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে বরগুনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল কার্যালয় থেকে দরপত্র আহবান করা হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ১ কোটি ৬৭ লাখ ১৪ হাজার ৬৮৯ টাকার কাজটি পায় বরগুনার রহমান ট্রেডার্স। ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর শেষ করার কথা ছিল। শুরুতেই ঠিকাদার শাহিন তালুকদারের বিরুদ্ধে কম উপকরণ ও নিম্নমান সামগ্রী দিয়ে কাজ করার অভিযোগ ওঠে। ৫ ইঞ্চি বেজমেন্টে বালু মিশ্রিত খোয়া দেওয়ার কথা থাকলেও কাদা মাটি মিশ্রিত বালু ব্যবহার করা হয়। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদার সড়কে খোয়া ফেলে লাপাত্তা হয়ে যান। চলতি বছর মার্চ মাসে আবার কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে ময়লা এবং কাদার আস্তরণে খোয়া ঢেকে যায়। কাদার আস্তরণের ওপরই কার্পেটিং শুরু হয়। কার্পেটিংয়ের পুরুত্ব ৪০ মিলিমিটার হওয়ার কথা। দেওয়া হয়েছে ২০-২৫ মিলিমিটার। বিটুমিনও কম দেওয়া হয়েছে। দায়সারাভাবে গত ২২ মার্চ কাজ শেষ করে ১ কোটি ৫৬ লাখ ১৪ হাজার ৬৮৯ টাকা বিল তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার।
শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সাত দিন পেরিয়ে গেলেও কার্পেটিং নরম অবস্থায় রয়েছে। এ সময় ক্ষিপ্ত গ্রামের বাসিন্দারা হাত দিয়ে টান দিলে পুরো সড়কের কার্পেটিং উঠে যায়।
কাউনিয়া গ্রামের শিক্ষক কামাল গাজীর অভিযোগ, ঠিকাদার সড়কের কাজে শুরু থেকেই দুর্নীতি করেছেন। নিম্নমানের খোয়া, কাদামিশ্রিত বালু, ভেজাল ক্রাশিন ও পোড়া মবিল মিশ্রিত বিটুমিন ব্যবহার হয়েছে সড়কে। পরিমাণেও কম দিয়ে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করায় হাতের টানেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। 
ঠিকাদার শাহিন তালুকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কার্পেটিং শক্ত হয়েছে। স্থানীয়রা শত্রুতা করে দা-খুন্তি দিয়ে খুচিয়ে কার্পেটিং তুলে ফেলেছে।
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো.

ইদ্রিস বলেন, ১০ পার্সেন্ট জামানত বাদে এখনও ঠিকাদারকে ১১ লাখ টাকা বিল দেওয়া হয়নি। সড়ক নির্মাণে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক র সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

দীর্ঘদিন আত্মগোপনে, চাঁদরাতে বাড়িতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ছিলেন আত্মগোপনে। কিন্তু পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করার জন্য গ্রামের বাড়িতে আসেন। গ্রামের বাড়িতে এসেই স্থানীয়দের হাতে গণপিটুনির শিকার হলেন এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।

রোববার রাতে ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

গণপিটুনির শিকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম মো. জসিম উদ্দিন জিসান (৩৬)। তিনি সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কান্তার পাড়ার আহমদ নবীর ছেলে। এ ছাড়াও তিনি উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

জানা যায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. জসিম উদ্দিন জিসান আত্মগোপনে থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিপক্ষে পোস্ট দিতেন। ফলে স্থানীয়রা তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। সর্বশেষ রোববার ঈদ উদযাপনের জন্য তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। তার আসার খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। 

বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

আরও জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে উপজেলার কেরানিহাট চত্বরে মিছিল করেছিল ছাত্র-জনতা। সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কেঁওচিয়া ইউনিয়নের জনার কেঁওচিয়া গ্রামের গুরা মিয়া বাড়ির মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো. তসলিম বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় জিসান ৫৮ নম্বর এজহারভুক্ত আসামি।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, ৫ আগষ্টের পর থেকে জিসান ঘরে ছিল না। চাঁদ রাতে পরিবারের সদস্যদের জামা-কাপড় দিতে গেলে এলাকার লোকজন তাকে ধরে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেলে তার স্বজনরা চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জেনেছি। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ বা মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ