Samakal:
2025-03-31@09:12:30 GMT

কাজলা নদীর বুকে ফসলের ঢেউ

Published: 28th, March 2025 GMT

কাজলা নদীর বুকে ফসলের ঢেউ

মেহেরপুরের কাজলা নদীটি নাব্য হারিয়েছে। 
পানিপ্রবাহের বদলে নদীর বুকে ঢেউ খেলছে ফসলের। নদী দখল করে ধান চাষ করেছে ভূমিদস্যুরা। এতে ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ।
মেহেরপুরবাসীর দাবি, নাব্য হারানোয় দখলদাররা নদীতে ধান চাষ করার সুযোগ পেয়েছে। নদীটি পুনর্খনন করে মৎস্যজীবীদের ইজারা দিলে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব পেতে পারে। সেই সঙ্গে রক্ষা হবে পরিবেশের ভারসাম্য। 
পানি উন্নয়ন বোর্ড মেহেরপুরের তথ্যমতে, জেলায় কাজলা নদীর দৈর্ঘ্য ৫৪ কিলোমিটার। ছোট নদী-খাল পুনর্খনন প্রকল্পের অধীনে ২০১১ সালে কাজলার ১০ কিলোমিটার খনন করা হয়। এই ১০ কিলোমিটারের মধ্যে নদীর তিনটি জায়গায় খনন করা হলেও তা ভূমিদস্যুরা ভরাট করে ধান চাষ করছে। বাকি ৪৪ কিলোমিটার প্রকল্পের দ্বিতীয় মেয়াদে খনন করার কথা থাকলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এলাকাবাসীর দাবি, নদীর পুরো অংশ খনন না করলে খননের সুফল পাওয়া যাবে না। 
সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের ব্যবসায়ী আকতারুজ্জামান বলেন, দখলদাররা নদী দখল করে ধান চাষ করছে। ফলে হারিয়ে গেছে দেশীয় মাছ। এই নদী থেকে যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত, তারা এখন পেশা বদল করে অন্য পেশা বেছে নিয়েছে। 
মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক জাহির হোসেন চঞ্চল বলেন, গবাদি পশুর গা ধোয়ানো থেকে ফসলের মাঠে সেচ দেওয়া– সবই কাজলার পানি দিয়েই হতো। নদীকে ঘিরে যেসব পাখির আনাগোনা ছিল, তারাও আর আসে না। ফলে নষ্ট হয়েছে পরিবেশের ভারসাম্য। 
গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক একরামুল হক কাজলা নদীতে ধান চাষ করেছেন। তিনি বলেন, নদীর ধারে তাদের জমি আছে। তাদের জমির স্থান বরাবর তারা ধান চাষ করেন। তাদের জমি তারা দখলে না রাখলে অন্য কেউ দখলে নিয়ে চাষ করবে। সরকার নদী খনন করলে আর তারা চাষ করবেন না বলে জানান তিনি। 
আমঝুপি গ্রামের কৃষক ফকির মহাম্মদের ভাষ্য– কাজলা শুকিয়ে গেছে, ফাঁকা জমি পড়ে আছে। তাই তারা ধান চাষ করে খাদ্য উৎপাদন করছেন। কাজলা খনন করলে মাছ পাবেন, গবাদি পশুর গা ধোয়াতে পারবেন, ফসলের জমিতে সেচ দিতে পারবেন। তারাও চান কাজলায় খনন করা হোক। 
ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ রেজা বলেন, কাজলার মতো একটি প্রবহমান নদী এখন দখলদারদের দখলে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। নদীটি দ্রুত খনন করার দাবি জানান তিনি। 
মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, প্রমত্তা কাজলা ক্রমেই পরিণত হয়েছে মরা খালে। নদীর বুকজুড়ে চলছে চাষাবাদ। যে নদীর পানি দিয়ে ফসলের জমিতে সেচ দেওয়া হতো, সেই কাজলার বুকেই শ্যালো মেশিন বসিয়ে ধানে পানি দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃতি ও পরিবেশ বাঁচাতে শিগগির কাজলা নদী খনন করে এর নাব্য ফিরিয়ে আনা জরুরি বলে মত দেন তিনি। 
পানি উন্নয়ন বোর্ড মেহেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান প্রধান বলেন, কাজলার খনন করা ১০ কিলোমিটার বাদে বাকি ৪৪ কিলোমিটার খননের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো 
হয়েছে। এখন পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সভা হলে নদীটির পুরো খনন করার যৌক্তিকতা তুলে ধরা হবে। নির্দেশনা পেলে পুরোটাই খনন করার প্রস্তাব পাঠানো হবে। নদীটি খনন করা গেলে শুষ্ক মৌসুমেও পানি থাকবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ ন চ ষ কর ভ রস ম য পর ব শ র খনন সরক র ফসল র

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় মসজিদে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হলেও গ্রেপ্তার নেই

ফতুল্লার রূপায়ন টাউনে আধিপত্য বিস্তার করে জোর পূর্বক রুপায়ন টাউন জামে মসজিদের খতিবকে অপসারণকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত এম এ হোসাইন রাজ ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার না করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী।

আসামিদের গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ সুপার বরাবর ভুক্তভোগী এম এ হোসাইন রাজ আবেদন করেন। শুক্রবার (২৮ মার্চ)  বাদ জুম্মা পুলিশ সুপার বরাবর এ আবেদন দায়ের করেন। 

আবদনে এম এ হোসাইন রাজ উল্লেখ করেন, তিনি স্ব-পরিবারে দীর্ঘদিন যাবৎ ভূইগড় রূপায়ন টাউন সোসাইটিতে ফ্ল্যাট মালিক হয়ে বসবাস করছেন। তিনি রূপায়ন টাউনের একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক এবং রূপায়ন টাউন সোসাইটির প্রস্তাবিত কমিটির আহ্বায়ক। 

রূপায়ন টাউনবাসী গত ৫ আগষ্টের পর হতে রূপাউন টাউনের ভিতরে বহিরাগত স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা আধিপত্য বিস্তার, হুকুমজারী, চাঁদাবাজী, রাহাজানি এবং দখলদারিত্বের স্বীকার হয়ে আসছে।

এ এ ঘটনায় এম এ হোসাইন রাজ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় স্থানীয় কতিপয় সন্ত্রাসী তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় তাকে আওয়ামী ট্যাগ লাগিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি এবং ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে । 

এরই ধারাবাহিকতায় গত ফেব্রুযারি এম এ হোসাইন রাজ বাদি হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন এবং বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদেরকে অবহিত করি। 

এর জের ধরে গত ১ মার্চ সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সন্ত্রাসীদের নেতা কাজী মাজিদুল হক, তোফায়েল হোসেন লিটন এর পক্ষে ৩ জন এম এ হোসাইন রাজ এর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে যায়।

চাঁদা নেয়ার বিষয়টি গোপন না রাখলে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়ায় তিনি বাধ্য হয়ে কাউকে কিছু জানান নাই। 

গত ২০ মার্চ রূপায়ণ টাউন জামে মসজিদের ভিতরে তারাবির নামাজ শেষে মসজিদের খতিবকে অপসারণের অযুহাতে ওই সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চাঁদার দাবিতে এম এ হোসাইন রাজকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মারধর করে গুরুতর আহত করে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে।

এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করার পরও উক্ত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। 

সর্বশেষ গত ২৪ মার্চ দুুপুরের দিকে রূপায়ন টাউন ২৫নং বিল্ডিংয়ে এম এ হোসাইন রাজ এ অফিসে এসে সন্ত্রাসীরা পূর্বের দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদার পরিবর্তে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। 

তিনি দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিবাদীরা আমাকে মারধর করার জন্য উদ্যত হয়ে অফিসের ড্রয়ারে থাকা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে বলে দাবিকৃত বাকী চাঁদার টাকা রাত্র ১০টার মধ্যে না দিলে তাকেসহ তার পরিবারের লোকজনকে প্রাণে শেষ করিয়া ফেলিবে।  অথবা এছাড়াও রূপায়ন হইতে জোর পূর্বক তাদেরকে বাহির করে দিয়ে ফ্ল্যাট দখল করে নিবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হওয়ায় তারা একের পর এক সন্ত্রাসী কার্যক্রম, হুকুমজারী, চাঁদাবাজী, রাহাজানি এবং দখলদারিত্ব সহ আধিপত্য বিস্তার করে আসিতেছে।  যার পরিপ্রেক্ষিতে রূপায়ণ টাউনবাসী সারাক্ষণই জান-মালের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে।

তাই রুপায়ন টাউনবাসী ও মুসুল্লিদের নিয়ে পুলিশ সুপার মহোদয় বরাবর আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও আমাদের নিরাপত্তা চেয়ে অভিযোগ দায়ের করি। এসপি সাহেব আমাদের অভিযোগ আমলে নেন এবং তৎক্ষনাৎ ফতুল্লা মডেল থানার ওসি সাহেবকে ফোন করে আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন এবং এবিষয় তিনি নিজে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। 

উল্লেখ্য,  গত ২০ মার্চ  ফতুল্লার রূপায়ন টাউনে আধিপত্য বিস্তার করে জোর পূর্বক রুপায়ন টাউন জামে মসজিদের খতিব সায়েখ জামাল উদ্দিন (৫০) কে অব্যাহতি ও লাহ্নিত করাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলায় খতিবসহ তিনজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- খতিব সায়েখ জামাল উদ্দিন (৫০), এম এ হোসাইন রাজ (৩৬) ও আঃ হান্নান (৪০)।  

এ ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে অভিযুক্ত করে শুক্রবার সকালে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন হামলায় আহত এম এ হোসাইন রাজ।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব মিসর-কাতারের
  • যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা বর্বর হামলা অব্যাহত
  • ফতুল্লায় মসজিদে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হলেও গ্রেপ্তার নেই