মেয়ের ঈদের জামাকাপড় সামনে রেখে হাউমাউ করে কাঁদছেন মা
Published: 28th, March 2025 GMT
মায়ের কাছে বায়না ছিল ঢাকায় গিয়ে কেনাকাটা করে নতুন কাপড় পড়ে ঈদ করবে রাইসা। উৎসব রাঙাতে হাতে পড়েছিল মেহেদী। কিন্তু সেই আনন্দকে বিষাদে পরিণত করে সলিল সমাধি হলো প্রথম শ্রেণির ছাত্রী রাইসার। গতকাল বৃহস্পতিবার নদীতে গোসল করতে নেমে একই সঙ্গে তার খালাতো বোন সামিয়ারও মৃত্যু হয়েছে।
রাইসা (৮) দোহারের সুতারপাড়া ইউনিয়নের ঘাড়মৌড়া এলাকার মো.
দুই খালাতো বোনকে আল আমিন বাজারের কাছে একই কবরস্থানে দাফন করা হয়। সন্তানদের হারিয়ে এ দুটি পরিবারে এবারের ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে ঘাড়মৌড়া গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, রাইসার শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা শিল্পী আক্তার। মেয়ে রাইসা ও ভাগনি সামিয়ার স্মৃতি মনে করে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। ঈদে মেয়ের জন্য কেনা জামাকাপড় সামনে রেখেই হাউমাউ করে কাঁদছেন। কোনো সান্ত্বনাই যেন তাঁকে শান্ত করতে পারছে না। স্বজনেরা পাশে বসেই শোকাহত মাকে জড়িয়ে বাক্হীন হয়ে পড়েছেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তপ্ত দুপুরে হাওরের পথে
মাঝ আকাশে সূর্য। প্রখর তীব্রতা নিয়ে যেন ঝরছে রোদ। চামড়াপোড়া এমন থমথমে গরমেও মাঝেমধ্যে শীতল বাতাস শরীর ধুয়ে দিচ্ছে! সুদূরে ডাকছে পাখি। পানি কমে চিকন হয়ে আসা খালে চুপটি মেরে শিকারের আশায় দাঁড়িয়ে আছে একঝাঁক সাদা বক। রাস্তার ধারে ফুটে আছে পিউম ফুল। ডানে-বাঁয়ে দিগন্তবিস্তৃত সবুজ ধানখেত। খেতে দাঁড়িয়ে থাকা হিজল-করচে গজিয়েছে কচি পাতা।
সম্প্রতি হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হাওর ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে। বর্ষায় হাওরের যে রূপ, শুকনা মৌসুমে তা একেবারেই বিপরীত। যে হাওর বর্ষায় অনেকটা সমুদ্রের মতো, শুকনা মৌসুমে সেখানেই মাটি ফেটে চৌচির। কিছু খাল-নদীতে পানি থাকলেও তা যৎসামান্য। আবার কোনো কোনো জলাশয় তো শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে! কোথাও একাকী, আবার কোথাও দলবেঁধে দাঁড়িয়ে আছে হিজল-করচগাছ।
সদ্য শেষ হওয়া চৈত্র মাসের এক দুপুরে হাওরের আঁকাবাঁকা পাকা-কাঁচা রাস্তা ধরে এই প্রতিবেদক যান। বানিয়াচং উপজেলা সদর থেকে রওনা হয়ে লক্ষ্মীবাঁওড় জলাবন (খরতির জঙ্গল) পেরিয়ে জেলার আজমিরীগঞ্জের পাহাড়পুর বাজার পর্যন্ত যাওয়ার পথে দেখা মেলে শতাধিক গ্রাম, গোটা দশেক হাওর-নদী-বিল-খালের। পথে পথে সৌন্দর্য। মাঠ, হাওরের উন্মুক্ত প্রান্তর যেন এখন সবুজ ঘাসের গালিচা। সেখানে চরে বেড়াচ্ছে গরু-ছাগল। বক, শামুকখোল পাখিরা জলাশয়ে একসঙ্গে খুঁজছে খাবার।
বানিয়াচং উপজেলা সদর পেরিয়ে হাওরের মূল ভূখণ্ড ঢুকতেই স্বাগত জানায় পাকা একটি সড়ক। সড়ক ধরে কেউ-বা হেঁটে যাচ্ছেন, কেউ-বা যাচ্ছেন ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে চেপে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, বর্ষায় এই সড়ক পানির নিচে ডুবে থাকে আর হেমন্তে ভেসে ওঠে। সড়কের বিভিন্ন অংশ ভাঙাচোরা, কোথাও আবার পিচহীন। গবাদিপশুর জন্য ঘাস কেটে কেউ-বা সড়ক ধরে বাড়ি ফিরছেন, কেউ-বা সড়ক-লাগোয়া খাল-নালায় ব্যস্ত মাছ শিকারে। মাথার ওপরে চক্কর খাচ্ছে চিল, সারস, কাক, ফেসকুন্দাসহ নানা জাতের পাখি।
বানিয়াচং উপজেলার খরতির জঙ্গলে হিজল-করচবাগ