সামনের যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে: আখতার হোসেন
Published: 28th, March 2025 GMT
বর্তমান সংবিধানে একজন প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সুযোগ পান উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, সামনের যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় এনসিপির রংপুর জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে আখতার হোসেন এ কথা বলেন। রংপুর জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টারে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবিদ, ছাত্র-শ্রমিক, পেশাজীবী, অ্যাকটিভিস্ট, ওলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
আখতার হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে একটি নতুন সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে। নতুন সংবিধান যদি আমাদের করতে হয়, তাহলে অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধান করতে হবে। এই কারণে সামনের যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। গণপরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বাংলাদেশকে একটি নতুন সংবিধান উপহার দেবে। একই সঙ্গে তাঁরা সংসদ সদস্যের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকা পালন করবেন। অতএব সংসদ নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’
এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘আমরা তরুণেরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সামনের দিনের দায়িত্ব গ্রহণ করতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণ তাঁদের পরামর্শ ও ভালোবাসা দিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। এনসিপিকে আমরা সারা দেশে বিস্তৃত করার কার্যক্রম শুরু করেছি।’
গ্রামেগঞ্জে, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় জাতীয় নাগরিক পার্টির বার্তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মানুষের মাঝে হাজির হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির নতুন বন্দোবস্তের বার্তা নিয়ে প্রতিটি ঘরে আমাদের যেতে হবে। জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট করা গেলে বাংলাদেশের ভাগ্য বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশকে গড়তে হলে এ দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও শিল্পকে স্বনির্ভর হতে হবে। এ দেশের প্রতিটি সেক্টরকে আমরা যদি স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের মানুষের প্রকৃত যে মুক্তি, সেই মুক্তি অর্জন করা সম্ভব।’
দীর্ঘ সময় ধরে রংপুর অঞ্চলের মানুষেরা বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন উল্লেখ করে আক্তার হোসেন বলেন, ‘রংপুরের মানুষ রেলপথে যাতায়াত করলে দীর্ঘ পথ ঘুরে তাদের ঢাকায় পৌঁছাতে হয়। আমরা দাবি জানাই, অন্তর্বর্তী সরকার সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া পর্যন্ত রেললাইনের ব্যবস্থা করে দিয়ে রংপুরের মানুষের যাতায়াতের সুবিধা নিশ্চিত করবে। রংপুর অঞ্চলে শিল্পায়ন করা হলে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে গিয়ে এই অঞ্চলের মানুষের শ্রম দিতে হবে না। রংপুর অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। এখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হলে রংপুর অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নতি করা সম্ভব।’
আখতার হোসেন আরও বলেন, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনকে গত বছর এক পয়সাও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এই বিভাগের আটটি জেলাকে উন্নয়ন বরাদ্দের নামে ১ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি জেলাকে যদি ১ শতাংশ করে বরাদ্দ দেওয়া হতো, তাহলে রংপুর বিভাগের আট জেলা মিলে ৮ শতাংশ বরাদ্দ পেত। এই চরম বৈষম্যের মধ্য দিয়ে রংপুরের মানুষকে যেতে হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, জাতীয় নাগরিক পার্টির যে নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে, তাঁরা পুরো দেশে সমানভাবে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধাগুলো পৌঁছে দেওয়ার কাজ করবেন। বাংলাদেশের স্বার্থে যেমন জাতীয়ভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্য থাকতে হবে, তেমনি রংপুরের স্বার্থে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে একত্রে আওয়াজ ওঠাতে হবে।’
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা থাকার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা, আসাদুল্লাহ আল গালিব, সদস্য আবদুল মুনাঈম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র হ স ন বল নত ন স ব ধ ন আখত র হ স ন এনস প র স মন র বর দ দ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সামনের নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে: আখতার হোসেন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে নতুন সংবিধান করতে হবে। এ কারণে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি সামনের নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। সংসদ নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর যৌক্তিক কারণ নেই। গণপরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সংবিধান প্রণয়ন ও সংসদ সদস্যের কাজ একসঙ্গে যৌথভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।
শুক্রবার বিকেলে রংপুর জিলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবীদ, ছাত্র-জনতা, শ্রমিক, পেশাজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, ওলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে এনসিপি।
এতে আখতার হোসেন বলেন, যে সংবিধান দিয়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে, সেটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই সংবিধানের এক তৃতীয়াংশকে পরবর্তীতে কোনও সংসদ সংশোধন করতে পারবে না এমন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ সংবিধানে রাষ্ট্রের তিনটি অর্গানের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীকে এমনভাবে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে একজন প্রধানমন্ত্রী এ দেশে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সুযোগ পায়। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে দেশের শাসন কাঠামো, বিচার কাঠামো, পুলিশ প্রশাসন প্রত্যেক জায়গায় আমূল সংস্কার দরকার। সরকারের তরফ থেকে সংস্কার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় আমরা সংহতি ব্যক্ত করেছি। দেশের গণহত্যার বিচার সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বিষয়। গণহত্যার বিচার না হলে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী শক্তি ভবিষ্যতে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে দেশে আরেকবার গণহত্যা, খুন, রাহাজানির সুযোগ পেয়ে যাবে। দেশকে নিরাপদ করতে হলে চব্বিশের আন্দোলনে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের ব্যক্তি ও দল হিসেবে বিচার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বার্তা নিয়ে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে যাচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্পকে স্বনির্ভর করতে হবে। প্রত্যেক সেক্টরকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা হলে দেশের মানুষের মুক্তির অর্জন সম্ভব। দেশে কাঠামো উন্নয়ন নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে, জনগণের সেবায় তারা সচেষ্ট থাকবে এমন দেশ বিনির্মাণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, আসাদুল্লাহ গালিব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হাবিবুর রহমান প্রমুখ।