ইডির চেয়ার দখলের ঘটনায় আরও দুই প্রকৌশলী বরখাস্ত, থানায় মামলায়
Published: 28th, March 2025 GMT
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক (ইডি) অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলামকে বের করে দিয়ে চেয়ার দখলের ঘটনায় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার পর আরও দুই প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ঘটনায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে বিএমডিএর চেয়ারম্যান ড.
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সই করা পৃথক অফিস আদেশে বাধ্যতামূলক অবসর ও বরখাস্ত করা হয়।
সাময়িক বরখাস্ত দুই কর্মকর্তা হলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম রেজা ও সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ। বরখাস্ত হওয়া সেলিম রেজা সিরাজগঞ্জে কর্মরত। তিনি কোনো অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থল থেকে রাজশাহীতে চলে এসেছিলেন। অতিরিক্ত সচিবকে হেনস্তার সঙ্গে তার জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে মন্ত্রণালয়। এজন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিএমডিএর চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামানকে মন্ত্রণালয়ে ডেকে ওই ঘটনার জন্য ভর্ৎসনা করা হয়। আসাদুজ্জামানে ইন্ধনে ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটনার পরও তিনি কিছু বহিরাগত ব্যক্তি দিয়ে মানববন্ধনসহ নানা ষড়যন্ত্র করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সংস্থার প্রধান হিসেবে এ বিষয়ে তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
বিএমডিএর ইডি শফিকুল ইসলামকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। কিন্তু রিলিজ অর্ডার না পাওয়ায় তিনি দপ্তর ছাড়তে পারছিলেন না। এর মধ্যে ২৩ মার্চ দুপুরে একদল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে ইডির দপ্তরে ঢুকে পড়েন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান। তারা তাকে জোরপূর্বক দপ্তর ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। পরে অফিস আদেশ ছাড়াই ইডির চেয়ারে বসে পড়েন জাহাঙ্গীর আলম খান।
ঘটনার পরপরই কৃষি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম এবং ২৫ মার্চ রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করেন।
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, মন্ত্রণালয়ের রিলিজ স্লিপ না পাওয়ায় বিএমডিএ থেকে তিনি অবমুক্ত হতে পারছিলেন না। রিলিজ স্লিপ না পাওয়া পর্যন্ত তাকে বিএমডিএতে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার জন্য মৌখিক নির্দেশ দিয়েছিল মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানের নেতৃত্বে তার অনুসারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে বিএমডিএ ছেড়ে যেতে চাপাচাপি করছিলেন।
তিনি তাদের রিলিজ স্লিপ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তারা কোনো কথা শোনেননি। এমনকি অফিস ত্যাগ করার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে ৩০ মিনিট সময় চাইলেও তা দেওয়া হয়নি। এ সময় জোর করে তার থেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয় বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মেহেদী, সহকারী মেকানিক মো. আপেল, মেহেদী হাসান, গুদামরক্ষক মো. নুরুজ্জামান, মজিবুর রহমান, আব্দুল কাইয়ুম খান, ক্যাশিয়ার শফিকুল ইসলাম, গাড়িচালক মো. শাহাবুল, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শমসের আলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তারা আত্মগোপন আছেন। অফিসও ছুটি হয়ে গেছে। এ জন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবার ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কৃষি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ ফয়সল ইমামকে আহ্বায়ক ও উপসচিব মো. মনিরুজ্জামানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। অন্য চার সদস্যের মধ্যে আছেন বিএমডিএ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম ও মো. জাফরুল্লাহ। কমিটিতে জেলার একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে রাখতে বলা হয়েছে।
বিএমডিএ পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালকের পদটি একটি প্রশাসনিক পদ, যা মন্ত্রণালয় থেকে নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু তাকে চেয়ার থেকে টেনে নামানো এবং সেই চেয়ার দখল করা চাকরিবিধির গুরুতর লঙ্ঘন। দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে, যা দরকার ছিল। তদন্তের মাধ্যমে জাহাঙ্গীর আলম খানের অন্য সহযোগীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তারা আশা করছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বরখ স ত জ হ ঙ গ র আলম খ ন কর মকর ত ব এমড এ বরখ স ত তদন ত সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ৪ ডিআইজি
পুলিশের চার উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার (২৮ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত পৃথক চারটি প্রজ্ঞাপনে অবসরের আদেশ জারি করা হয়।
বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন—শিল্পাঞ্চল পুলিশে সংযুক্ত ডিআইজি মনির হোসেন, রেলওয়ে পুলিশে সংযুক্ত ডিআইজি মাহবুব আলম, ঢাকা রেঞ্জে সংযুক্ত ডিআইজি আতিক ইসলাম এবং পুলিশ টেলিকমে সংযুক্ত ডিআইজি এ কে এম নাহিদুল ইসলাম।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
ঢাকা/এমআর/রফিক