জমিতে হাঁস যাওয়া নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫
Published: 28th, March 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জমিতে হাঁস যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেলে উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ঘুজিয়াখাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৫-২০ দিন আগে ঘুজিয়াখাই গ্রামের বাসিন্দা রোশেনা বেগমের কয়েকটি হাঁস জয়দর মিয়ার ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জয়দর মিয়া রোশেনা বেগমকে বাড়িতে গিয়ে মারধর করেন। এর দুই দিন পর প্রতিশোধ নিতে রোশেনার লোকজন জয়দর মিয়াকে রাস্তায় একা পেয়ে মারধর করেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরবর্তী স্থানীয়দের সহায়তায় দুপক্ষ আপোষে রাজি হলেও জয়দর মিয়ার লোকজন পুনরায় রোশেনার পক্ষের একজনকে মারধর করেন। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ মামলা করে। এর জেরে শুক্রবার বিকেলে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ১৫ জন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে জয়দর মিয়া ও রোশেনার মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তাদের ব্যবহৃত নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.
নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল আলম বলেন, ‘‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে, এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/রুবেল/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চাওয়া ছিল ২ কোটি, দর-কাষাকষিতে ২ লাখ মোহরানায় হলো ব্যাঙের বিয়ে
বাড়ির আঙিনায় কলা গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে গেট। রং-বেরংয়ের কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো বাড়ি। সঙ্গে বাজানো হচ্ছে বাদ্যযন্ত্র, বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নাচছে শিশু থেকে বৃদ্ধ, চলছে গানও। এতো হই-হুল্লোড়ের মধ্যে পৌঁছেছে বরযাত্রী। এর পর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। সেই পুরনো রেওয়াজ মেনে বর-কনে পক্ষের মধ্যে মোহরানা নিয়ে শুরু হয় দর-কাষাকষি। কনে পক্ষের মোহরারা হাঁকা শুরু ২ কোটি দিয়ে, দর-কাষাকষিতে শেষমেষ নির্ধারণ হয় ২ লাখ। এতো আয়োজন মূলত ব্যাঙের বিয়ে ঘিরে। আজ রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের বুড়িশ্বর ইউনিয়নে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। মূলত বৃষ্টির আশায় স্থানীয়রা ব্যাঙের এই বিয়ের আয়োজন করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কনের বাড়িতে ঢুকতেই কলা গাছের গেট। বং-বেরংয়ের কাগজ দিয়ে সাজানো বাড়িজুড়ে বর (পুরুষ ব্যাঙ) ও কনে (স্ত্রী ব্যাঙ) পক্ষের লোকজন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বৃষ্টির গান গাইছেন। সঙ্গে নাচ তো আছেই।
গ্রামবাসীরা মনে করেন, ব্যাঙের বিয়ে দিলে সৃষ্টিকর্তা খুশি হন, তখন বৃষ্টি হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই এ বিয়ের আয়োজন।
স্থানীয় কৃষক মো. মিজান শাহ বলেন, ‘বাপ-দাদার আমল থেকে এ রীতি চলে আসছে। আগে এতে কাজ হতো, এখনও আমরা বিশ্বাস রাখি ব্যাঙের বিয়ের পর বৃষ্টি হবে।’
হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলেই এ বিয়ের আয়োজন করেছেন।
স্থানীয় শিক্ষক অজিত কুমার পাল বলেন, ‘এটা শুধু একটি রীতি নয়, আমাদের ঐতিহ্য। চৈত্র মাসে যখন পানির সংকট দেখা দেয়, তখন গ্রামের সবাই মিলে বৃষ্টির আশায় এই আয়োজন করে। এটি মূলত সম্মিলিত আশার প্রকাশ।’
শুধু কৃষকরাই নন, প্রশাসনের লোকজনও বৃষ্টির প্রত্যাশায় এই ব্যাঙের বিয়ে দেখতে এসেছেন।
নাসিরনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কাজী রবিউস সারোয়ার বলেন, ‘আমরা স্থানীয়দের পাশে আছি। দীর্ঘমেয়াদে পানির সংকট কাটাতে উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি জানানো হবে।’
ব্যাঙের বিয়ের এই আয়োজনে সত্যিই কি দেখা মিলবে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির? এখন সেটাই দেখার বিষয়।