নারায়ণগঞ্জে ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়
Published: 28th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ঈদের নতুন পোশাকসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। ঈদকে ঘিরে সকাল থেকে রাত অবধি ফুটপাতে বেচাকেনা হচ্ছে। দামে সাশ্রয়ী এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে থাকায় অনেকেই ফুটপাতে কেনাকাটায় আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ফুটপাতের পাশাপাশি বিপণিবিতান ও শপিং মলগুলোতে উপচে ভিড় ছিল। আজ শুক্রবার সকাল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এ চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগরের চাষাঢ়া হকার্স মার্কেট, বি বি রোডের সমবায় মার্কেট, পানোরামা প্লাজা, সায়াম প্লাজা, জাকির সুপার মার্কেট, সাধু পৌলের গির্জা, শায়েস্তা খান সড়ক, উকিলপাড়া, ২ নম্বর রেলগেট, ডিআইটি বাণিজ্যক এলাকার সড়কের দুই পাশের ফুটপাতগুলোতে ঈদের পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। ফুটপাতের দোকানগুলোতে ছেলে-মেয়েদের রেডিমেড থ্রি–পিছ, টু-পিছ, ফ্রগ, জুতা, হাতব্যাগ, ওড়না, কসমেটিকস, চুড়ি, অন্তর্বাসসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি ফুটপাতগুলোতে কেনাকাটা হচ্ছে। শিশু, নারী-পুরুষসহ সব শ্রেণির মানুষ কেনাকাটা করতে ফুটপাতে ভিড় করছেন।
দুই ছেলেকে নিয়ে নগরের বি বি রোডের ফুটপাতে কেনাকাটা করতে এসেছেন গৃহিণী আসমা রহমান। তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকায়। তাঁর স্বামী পেশায় পোশাককর্মী। ফুটপাতের দোকান থেকে দুই ছেলের জন্য রেডিমেড শার্ট ও প্যান্ট কিনেছেন তিনি। আসমা রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংসার খরচ সামলিয়ে ঈদের কেনাকাটা করা আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তবুও কম বাজেটের মধ্যে কেনাকাটায় আমাদের ফুটপাতই ভরসা। প্রতিবছর ফুটপাত থেকে ঈদের কেনাকাটা করি। ঈদে নতুন পোশাক কিনে দেওয়ায় ছেলেরাও অনেক খুশি।’
অপর ক্রেতা ইয়াসমিন আক্তার তাঁর মেয়ের জন্য জামা কিনতে এসেছেন। দামাদামি করে ফুটপাত থেকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে জামা কিনেছেন তিনি। ইয়াসমিন বলেন, ‘বিপণিবিতানগুলোতে বাড়তি দামের কারণে অনেকের পক্ষে সেখান থেকে কেনাকাটা করা সম্ভব হয় না। রোজায় এমনিতেই সংসার খরচ বেড়েছে। কোনোমতে ঈদটাকে পার করা। আর ফুটপাতে পোশাকের দামও কম।’
নারায়ণগঞ্জ নগরের বিবি রোডের ফুটপাতে ঈদে কেনাকাটা করতে ভিড় করেছেন ক্রেতারা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঈদ র ক ন ক ট র ফ টপ ত
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ সুমাইয়ার পরিবারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার দিলো মামুন মাহমুদ
মাত্র আড়াই মাসের ফুটফুটে কন্যা শিশুকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে মায়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন ২০ বছর বয়সী পোশাককর্মী সুমাইয়া। কিন্তু হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে শহীদ হন তিনি।
এরপর থেকেই মা হারা হয়ে যায় শিশু সুবাইয়া। এখন তার পরিবার বলতে একমাত্র নানিই। তিনি এই সুবাইয়ার দেখাশোনা করছেন। মায়ের রেখে যাওয়া আড়াই মাসের সেই সুবাইয়ার বয়স এখন ১০ মাস।
আসছে ঈদুল ফিতরকে ঘিরে মানুষের মধ্যে আনন্দ-উৎসাহ থাকলেও শহীদ সুমাইয়ার পরিবারের মাঝে তার ছিটেফোঁটাও নেই। পরিবারটির মুখে হাসি ফোঁটাতে ঈদ উপহার পাঠিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
গত বুধবার রাতে মিজমিজির পাইনাদী নতুন মহল্লায় তারেক রহমানের ঈদ উপহার নিয়ে হাজির হন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। এসময় কান্নায় চোখ ভিজে যায় সুমাইয়ার মা আসমা বেগমের।
মেয়ের শোকে প্রতিদিন কান্নায় তার চোখ ভিজে আসে উল্লেখ করে আসমা বেগম বলেন, আমার মেয়েটি কোনোদিন চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেনি। খুবই নম্র স্বভাবের ছিল। উচ্চস্বরে কখনো আমার সঙ্গে কথা বলেনি। সেই মেয়েটি আমার চোখের সামনে চলে গেলো।
আমি মা হয়ে কিছুই করতে পারিনি। তার রেখে যাওয়া মাত্র আড়াই মাসের বাচ্চাই এখন আমার স্মৃতি। আমার মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নাতনিকে আগলে রাখা দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, আড়াই মাসের সুবাইয়া এখন ১০ মাসের। সে শুধু তার মাকে খুঁজে। নাতনিটা মানুষের মুখের দিকে শুধু তাকিয়ে থাকে। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই আমার নাতনির দায়িত্ব যেন নেয়।
তিনি আরও বলেন, এবারের ঈদে খুশির আমেজ আমাদের পরিবারে নেই। শুধু আছে কান্না। নাতনির শরীরে আমার মেয়ে সুমাইয়ার গন্ধ খুঁজে পাই।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, শহীদ সুমাইয়ার হত্যার যেমন বিচার চাই, তেমনি তার পরিবারের যে দাবি, এটাও আমরা চাই।
আড়াই মাসের শিশুকে রেখে সুমাইয়া মারা গেছেন এটা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানেন। তিনিই আমাদের মাধ্যমে শিশুটির জন্য ঈদ উপহার পাঠিয়েছেন।
এ শিশুটি যেন নিরাপদে থাকতে পারে এবং বড় হতে পারে, বিএনপি সব সময় পাশে থাকবে। বিএনপি যদি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে, সে ক্ষেত্রে এ শিশুর অভিভাবকত্ব রাষ্ট্র ও বিএনপি গ্রহণ করবে।