পুকুরে মাছ ধরার সময় আগ্নেয়াস্ত্রে আটকে গেল বড়শি, তল্লাশি করে পাওয়া গেল আরও ৪টি শটগান
Published: 28th, March 2025 GMT
নাটোর জেলা প্রশাসকের ডাকবাংলোর পাশের পুকুর থেকে চারটি নতুন শটগানসহ ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে শহরের কান্দিভিটুয়া এলাকা থেকে ডুবুরির সহায়তায় পুলিশ এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো ‘অবৈধ’ বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
নাটোর সদর থানা সূত্রে জানা যায়, কান্দিভিটুয়া এলাকায় জেলা প্রশাসকের ডাকবাংলো, সাবেক জেলখানা ও সদর থানা এবং সদর হাসপাতালের মাঝখানে তালাবঘাট পুকুর রয়েছে। এই পুকুরে দুই যুবক বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করছিলেন। হঠাৎ একজনের বড়শি পানির নিচে আটকে যায়। শিকারি পানিতে নেমে বড়শি ছাড়াতে গিয়ে কম্বলে জড়ানো একটি দোনলা ও একটি একনলা আগ্নেয়াস্ত্র দেখতে পান। ঘটনাটি পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ ডুবুরি তলব করে পুকুর তল্লাশি চালায়। এ সময় ওই পুকুর থেকে আরও চারটি নতুন শটগান পাওয়া যায়। পুলিশ জব্দতালিকা তৈরি করে অস্ত্রগুলো সদর থানার হেফাজতে নেয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুর রহমান বলেন, অস্ত্রগুলো পরীক্ষা করে এগুলো অবৈধ বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রগুলো পুকুরে ফেলে দিয়ে পালিয়েছে। আরও তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদর থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু, ইলাই আমরার ঈদ’
দলা পাকানো চালের গুঁড়া চ্যাপটা করে ছোট ছোট বড়া বানানোর পর সেগুলো কড়াইয়ে দিচ্ছিলেন লাভলী বেগম (২৫)। চুলায় খড়ের আগুন কমে আসছিল বারবার। মাথা নিচু করে চুলার নিচ দিকে ফুঁ দিতে দিতে ধোঁয়ায় নাস্তানাবুদ অবস্থা। কুলায় যে পরিমাণ চালের গুঁড়া, তাতে ২০ থেকে ৩০টা বড়া হবে।
ঈদের আয়োজন বলতে কি শুধু এই কয়টি বড়া? লাভলী বলেন, ‘মাইয়ে (মা) কিছু গুড় আনছিলা। গুড়ের হান্দেশ (সন্দেশ) করছি। আর কিতা করমু। সকালে বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু। ইলাই আমরার ঈদ।’ কথা শেষের সঙ্গে সঙ্গে লাভলী বেগমের একটা দীর্ঘশ্বাস যেন হাওরের বাতাসে মিশে গেল। তাঁর পাশে তখন পাখির ছানার মতো বসা দুই সন্তান সাহানা (৫) ও আবির (৩)। তাদের চোখ কড়াইয়ে, তেলের ওপর ভাসতে থাকা বড়ার দিকে।
লাভলী বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরপারের কান্দাহাটি গ্রামে। গতকাল রোববার পড়ন্ত বিকেলে ওই গ্রামে গিয়ে কথা হয় লাভলী ও তাঁর পরিবারের অন্যদের সঙ্গে। এর আগে গত বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বন্যার সময় ওই গ্রামের যাওয়ার পর প্রথম দেখা হয়েছিল। বন্যা সব শেষ করে দিয়ে গেছে তাঁদের। হাওরের ঢেউয়ে তখন ঘরটি ভেঙে পড়ে।
লাভলী তিন সন্তান নিয়ে মা সবুরা বেগমের সংসারে আছেন। বাবা নেই; নেই মানে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে চলে গেছেন বহু আগে। লাভলীরও একই অবস্থা, স্বামী আরেকটা বিয়ে করে আলাদা থাকেন। এখন সবুরার আটজনের সংসার। ছেলে জহুরুল ইসলামের (২০) স্ত্রী ও এক মেয়ে আছে। এই সংসার মূলত সবুরা বেগম ও ছেলে জহুরুল ইসলামের শ্রম-ঘামে চলে। সবুরা, জহুরুল দুজনই শ্রমিক। যখন যে কাজ পান, সেটাই করেন, কিন্তু অভাব যায় না।
ঘরের চুলায় তেলের বড়া ভাজছেন লাভলী বেগম। সুনামগঞ্জের দেখার হাওরপারের কান্দিগাঁও গ্রাম থেকে গতকাল রোববার বিকেলে