মিয়ানমারে শুক্রবার জোড়া ভূমিকম্পের আট ঘণ্টারও বেশি সময় পরে হতাহতের সরকারি পরিসংখ্যান আসতে শুরু করেছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৪৪ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৭৩২ জন।
বিবিসি জানিয়েছে, হতাহতের এই পরিসংখ্যান মিয়ানমারের সামরিক নেতা মিন অং হ্লাইংয়ের কাছ থেকে এসেছে। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তিনি জানান, রাজধানী নেপিদোতে ৯৬ জন, সাইগাইংয়ে ১৮ জন এবং মান্দালয়ে ৩০ জন মারা গেছেন।
আহতদের মধ্যে ১৩২ জন নেপিদোতে এবং ৩০০ জন সাগাইংয়ে ছিলেন, অন্যান্য এলাকার সংখ্যা এখনো মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
এদিকে থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধসে তিনজন মারা গেছেন বলে সর্বশেষ জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সময় দুপুরে মিয়ানমারের মান্দালয়ে রিখটার স্কেলে প্রথম দফায় ভূমিকম্প হয়। এর ১২ মিনিট পরে হয় আফটার শক। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, জোড়া কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ছিল যথাক্রমে ৭ দশমিক ৭ এবং ৬ দশমিক ৪।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু, ইলাই আমরার ঈদ’
দলা পাকানো চালের গুঁড়া চ্যাপটা করে ছোট ছোট বড়া বানানোর পর সেগুলো কড়াইয়ে দিচ্ছিলেন লাভলী বেগম (২৫)। চুলায় খড়ের আগুন কমে আসছিল বারবার। মাথা নিচু করে চুলার নিচ দিকে ফুঁ দিতে দিতে ধোঁয়ায় নাস্তানাবুদ অবস্থা। কুলায় যে পরিমাণ চালের গুঁড়া, তাতে ২০ থেকে ৩০টা বড়া হবে।
ঈদের আয়োজন বলতে কি শুধু এই কয়টি বড়া? লাভলী বলেন, ‘মাইয়ে (মা) কিছু গুড় আনছিলা। গুড়ের হান্দেশ (সন্দেশ) করছি। আর কিতা করমু। সকালে বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু। ইলাই আমরার ঈদ।’ কথা শেষের সঙ্গে সঙ্গে লাভলী বেগমের একটা দীর্ঘশ্বাস যেন হাওরের বাতাসে মিশে গেল। তাঁর পাশে তখন পাখির ছানার মতো বসা দুই সন্তান সাহানা (৫) ও আবির (৩)। তাদের চোখ কড়াইয়ে, তেলের ওপর ভাসতে থাকা বড়ার দিকে।
লাভলী বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরপারের কান্দাহাটি গ্রামে। গতকাল রোববার পড়ন্ত বিকেলে ওই গ্রামে গিয়ে কথা হয় লাভলী ও তাঁর পরিবারের অন্যদের সঙ্গে। এর আগে গত বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বন্যার সময় ওই গ্রামের যাওয়ার পর প্রথম দেখা হয়েছিল। বন্যা সব শেষ করে দিয়ে গেছে তাঁদের। হাওরের ঢেউয়ে তখন ঘরটি ভেঙে পড়ে।
লাভলী তিন সন্তান নিয়ে মা সবুরা বেগমের সংসারে আছেন। বাবা নেই; নেই মানে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে চলে গেছেন বহু আগে। লাভলীরও একই অবস্থা, স্বামী আরেকটা বিয়ে করে আলাদা থাকেন। এখন সবুরার আটজনের সংসার। ছেলে জহুরুল ইসলামের (২০) স্ত্রী ও এক মেয়ে আছে। এই সংসার মূলত সবুরা বেগম ও ছেলে জহুরুল ইসলামের শ্রম-ঘামে চলে। সবুরা, জহুরুল দুজনই শ্রমিক। যখন যে কাজ পান, সেটাই করেন, কিন্তু অভাব যায় না।
ঘরের চুলায় তেলের বড়া ভাজছেন লাভলী বেগম। সুনামগঞ্জের দেখার হাওরপারের কান্দিগাঁও গ্রাম থেকে গতকাল রোববার বিকেলে