ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ
Published: 28th, March 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় পাশবিক হামলা ও নিরীহ গাজাবাসীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে শুক্রবার (২৮ মার্চ) বাদ জুমআ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে মিছিলটি প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে বিক্ষোভকারীরা ইন্তিফাদা ইন্তিফাদা, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, জায়োনবাদ নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তিপাক ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
মিছিল শেষে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। মানববন্ধনে বক্তারা ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, আজ সারা বিশ্বের মুসলিমরা যেখানে রমজান, ইফতার, সাহরি করছে সেখানে ফিলিস্তিনের শিশু-নারীরা লাশের মিছিলে শরিক হচ্ছে। বিনা নোটিশে ইসরায়েল আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের ওপর হামলা করছে। তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছে। বক্তারা ইহুদীবাদী সেনাদের এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং তাদের এই নৃশংস অপরাধযজ্ঞ বন্ধ করতে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, আজ রমজানের শেষ শুক্রবার, আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস। মুসলমানদের প্রথম কেবলা পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস দখলমুক্ত করার আন্দোলনে বিশ্ব মানবতাকে উজ্জীবিত করার প্রতীকী দিন এটি।
বিশ্বজুড়ে দিনটি এমন এক সময় পালিত হতে যাচ্ছে যখন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক হামলা অব্যাহত রয়েছে।
সম্প্রতি যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে পুনরায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। নতুন করে শুরু হওয়া এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৭৩০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ এবং ১,৩৬৭ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে গাজায় শহীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০,০৮২ জনে এবং আহতের সংখ্যা ১,১৩,৪০৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলের আগ্রাসন পুনরায় শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে।
বক্তারা বলেন, ইরানে ইসলামি বিপ্লব বিজয়ী হওয়ার পর ইমাম খোমেনি (র) ফিলিস্তিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে রমজান মাসের শেষ শুক্রবার আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস পালনের আহ্বান জানান। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি দখলদার ইহুদীবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে সংগ্রামের পতাকা উড্ডীন করেন এবং কুদস শরীফ ও ফিলিস্তিনের ইসলামি ও পবিত্র ভূমির মুক্তির বিস্মৃত লক্ষ্য ও আদর্শকে পুনরুজ্জীবিত করেন। ইমাম খোমেইনী (র.
বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আল কুদস কমিটি বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মোস্তফা তারিকুল হাসান।
ঢাকা/হাসান/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক রব র বক ত র রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সামনের নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে: আখতার হোসেন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে নতুন সংবিধান করতে হবে। এ কারণে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি সামনের নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। সংসদ নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর যৌক্তিক কারণ নেই। গণপরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সংবিধান প্রণয়ন ও সংসদ সদস্যের কাজ একসঙ্গে যৌথভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।
শুক্রবার বিকেলে রংপুর জিলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবীদ, ছাত্র-জনতা, শ্রমিক, পেশাজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, ওলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে এনসিপি।
এতে আখতার হোসেন বলেন, যে সংবিধান দিয়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে, সেটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই সংবিধানের এক তৃতীয়াংশকে পরবর্তীতে কোনও সংসদ সংশোধন করতে পারবে না এমন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ সংবিধানে রাষ্ট্রের তিনটি অর্গানের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীকে এমনভাবে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে একজন প্রধানমন্ত্রী এ দেশে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সুযোগ পায়। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে দেশের শাসন কাঠামো, বিচার কাঠামো, পুলিশ প্রশাসন প্রত্যেক জায়গায় আমূল সংস্কার দরকার। সরকারের তরফ থেকে সংস্কার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় আমরা সংহতি ব্যক্ত করেছি। দেশের গণহত্যার বিচার সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বিষয়। গণহত্যার বিচার না হলে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী শক্তি ভবিষ্যতে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে দেশে আরেকবার গণহত্যা, খুন, রাহাজানির সুযোগ পেয়ে যাবে। দেশকে নিরাপদ করতে হলে চব্বিশের আন্দোলনে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের ব্যক্তি ও দল হিসেবে বিচার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বার্তা নিয়ে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে যাচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্পকে স্বনির্ভর করতে হবে। প্রত্যেক সেক্টরকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা হলে দেশের মানুষের মুক্তির অর্জন সম্ভব। দেশে কাঠামো উন্নয়ন নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে, জনগণের সেবায় তারা সচেষ্ট থাকবে এমন দেশ বিনির্মাণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, আসাদুল্লাহ গালিব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হাবিবুর রহমান প্রমুখ।