ভুটানের ক্লাব ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডে খেলার জন্য এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ছাড়পত্র পেয়েছিলেন গোলরক্ষক রুপনা চাকমা ও ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন। এবার আরও চার নারী ফুটবলারকে ছাড়পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তাঁরা হলেন ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, মাতসুশিমা সুমাইয়া ও সাবিনা খাতুন।

গত ৩০ জানুয়ারি নারী ফুটবলে বিদ্রোহ করা ১৮ খেলোয়াড়ের মধ্যে ছিলেন এই চারজনও। চারজনকেই নিচ্ছে ভুটান প্রিমিয়ার লিগের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন পারো এফসি।

আজ প্রথম আলোকে এমনটাই জানিয়েছেন সর্বশেষ সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা ফুটবলার ঋতুপর্ণা। কয়েক দিন আগেই তাঁরা বাফুফের কাছ থেকে ছাড়পত্র পান।

এখন দেশ ছাড়ার অপেক্ষা। রুপনা–মাসুরার ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডের হয়ে খেলার কথা থাকলেও এখনো তাঁদের ভুটান যাওয়ার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। তবে ঋতুপর্ণা, মনিকা, সুমাইয়া ও সাবিনার ৬ এপ্রিল ভুটানের বিমান ধরার কথা রয়েছে।

এ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত রাঙামাটির মেয়ে ঋতুপর্ণা। বললেন, বিদেশি লিগে খেলা সব সময়ই আনন্দের। সেখান থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশের হয়ে আরও সাফল্য বয়ে আনতে চান, ‘বিদেশি লিগে খেলতে পারলে অনেক কিছুই শেখা যায়। আমাদের অনেক অভিজ্ঞতাও হয়। সেই অভিজ্ঞতা আবার জাতীয় দলে কাজে লাগাতে পারি।’

এদিকে ছুটিতে থাকা নারী দলের কোচ পিটার বাটলারও মনিকা–সাবিনাদের ভুটান লিগে খেলার খবর পেয়ে খুশি। প্রথম আলোর মাধ্যমে জানিয়েছেন শুভকামনা, ‘খুবই ভালো। তাদের জন্য শুভকামনা রইল।’

বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, ঋতুপর্ণা, মনিকা, সুমাইয়া, সাবিনা, মাসুরা, রুপনা ছাড়াও মোসাম্মাৎ সাগরিকা ভুটানের লিগে খেলার প্রস্তাব পেয়েছেন। শিগগিরই ছাড়পত্র পেয়ে যেতে পারেন ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের এই নারী ফুটবলার।

বিদেশি ক্লাবের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের নতুন নয়। এর আগে মালদ্বীপ ও ভারতের ঘরোয়া নারী লিগে খেলেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। কলকাতা ইস্ট বেঙ্গলের জার্সিতে মাঠে নামার সুযোগ হয়েছে সানজিদা আক্তারের।

এরপর গত বছরের আগস্টে ভুটানের ক্লাব রয়্যাল থিম্পু কলেজ এফসির হয়ে খেলতে যান বাংলাদেশের চার ফুটবলার সাবিনা, ঋতুপর্ণা, মারিয়া মান্দা ও মনিকা। তখন এএফসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার জন্য তাঁদের নিয়েছিল ভুটানের ক্লাবটি।

১৫ এপ্রিল ভুটানের নারী লিগ শুরু হওয়ার কথা। এই লিগ প্রায় ছয় মাস চলে। ভুটানের লিগ চলাকালে এই খেলোয়াড়েরা জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেলে তাঁরা ঢাকায় ফিরে আসবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ টবল র ছ ড়পত র

এছাড়াও পড়ুন:

শোলাকিয়া ঈদগাহে নামাজ পড়তে এক দিন আগেই চলে আসেন অনেকে

মো. সুরুজ আলীর বয়স ৮৫ বছর। পাকিস্তান আমল থেকে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়তে আসেন তিনি। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দা এলাকায়। প্রতিবারের মতো এবারও এক দিন আগেই তিনি শোলাকিয়ায় নামাজ পড়তে চলে এসেছেন। সুরুজ আলী জানান, বড় মাঠে বেশি সওয়াব ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তিনি প্রায় ৬৫ বছর আগে থেকে শোলাকিয়ায় আসছেন। প্রতিবারই এক-দুই দিন আগেই তিনি কিশোরগঞ্জে এসে মাঠের আশপাশে থাকেন। এবার শোলাকিয়া বাগে জান্নাত গোরস্তান মসজিদে গতকাল রোববার থেকে অবস্থান নেন।

শুধু সুরুজ আলী নন, দেশের নানা প্রান্ত থেকে এ রকম কয়েক শ লোক শোলাকিয়ায় নামাজ পড়তে এক থেকে দুই দিন আগেই চলে আসেন। কেউ আবার দূর থেকে দুই-তিন দিন আগেও চলে আসেন। তেমনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে মফিজুর রহমান নামের আরেকজন গত শনিবার সকালেই কিশোরগঞ্জে চলে আসেন। তিনি জানান, তিনি পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক প্রবাসী। ২০-২৫ বছর থেকে তাঁর ইচ্ছা ছিল শোলাকিয়ার ঈদগাহে নামাজ পড়বেন। কিন্তু দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকায় সময়–সুযোগ হয়ে ওঠে না। তাই এবার মোজাম্বিক থেকে নিয়ত করেই দেশের বাড়িতে আসেন এবং সেখান থেকে শোলাকিয়ায় চলে আসেন।

বাগেরহাট থেকে মো. ইব্রাহীম নামের একজন শিক্ষক তাঁর ভাই মোস্তফাকে নিয়ে গতকাল শোলাকিয়া বাগে জান্নাত মসজিদে এসে ওঠেন। ফজর আলী নামের আরেকজন নাটোর সদর থেকে এসেছেন। একসময় দূর থেকে আসা মুসল্লিরা সবাই শোলাকিয়া মাঠের মিম্বরেই অবস্থান করতেন। কিন্তু ২০১৬ সালে ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়া মাঠের অদূরে জঙ্গি হামলার কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে এখন আর কাউকে মাঠের ভেতর থাকতে দেওয়া হয় না। যার কারণে প্রশাসন থেকে শোলাকিয়া বাগে জান্নাত গোরস্তান মসজিদ, পার্শ্ববর্তী আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়সহ কয়েকটি জায়গায় দূরের মুসল্লিদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

রোববার রাতে শোলাকিয়া বাগে জান্নাত গোরস্তান মসজিদে অনেক মুসল্লি অবস্থান করেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ