রমজান শেষ হওয়ার বাকি আর মাত্র তিন দিন। ঈদের আগের এ সময়টায় ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের ফুটপাত থেকে শুরু করে নগরীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমল।
বিক্রেতারা বলছেন, শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। দোকানে ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। সব মিলিয়ে বেচাকেনা চলবে আরো চার দিন।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, কান্দিরপাড় পূর্বালী চত্বর, খন্দকার শপিং কমপ্লেক্স, সাত্তার খান শপিং কমপ্লেক্স, রূপায়ন টাওয়ার, নিউ মার্কেট, এস আর প্ল্যানেট, এস এম মার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা, গোমতি টাওয়ার ঘুরে দেখা যায়, সব মার্কেটে চলছে বেচাকেনার ধুম। সব বয়সী মানুষ যার যার পছন্দের পোশাক কিনছেন। মার্কেটে আসার ক্ষেত্রে ক্রেতারা ইফতারের পরবর্তী সময়কে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ঈদে পুরুষের পাঞ্জাবির পাশাপাশি নারীদের শাড়ি, থ্রি-পিস, জিন্স ও জুয়েলারি সামগ্রী পছন্দের শীর্ষে থাকছে।
আরো পড়ুন:
স্কুলের মাঠে বসানো হচ্ছে মরিচের হাট
টিসিবির ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায়, আলোকসজ্জার সঙ্গে হরেক রকমের পোশাকে সেজেছে দোকানগুলো। পায়জামা-পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, গেঞ্জি, টি-শার্ট, নারীদের শাড়ি, থ্রি-পিস, ওয়ান পিস, কুর্তা এবং বাচ্চা ও শিশুদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, ফ্রক, গেঞ্জিসহ আধুনিক ডিজাইনের পোশাক-সবই মিলছে।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের ঈদে সব ধরনের পোশাকের দাম আকাশচুম্বী। বিশেষ করে পাঞ্জাবি ও থ্রি-পিসের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। গতবারের তুলনায় এবারের প্রতিটি পাঞ্জাবিতে ২৫০ থেকে ৩০০ এবং থ্রি-পিসে ৪০০ টাকা বাড়তি গুণতে হচ্ছে।
নগরীর রেসকোর্স এলাকায় ইস্টার্ন প্লাজায় চৌদ্দগ্রাম থেকে সপরিবারে ঈদের কেনাকাটা করতে আসেন মো.
এটি শুধু শরীফের একার গল্প নয়। ঈদের কেনাকাটা করতে আসা প্রত্যেক পরিবারের একই পরিস্থিতি। শহরের রামঘাটস্থল ইজির শোরুমে কথা হয় কলেজ শিক্ষক ফয়সাল মিয়া সঙ্গে। তিনি বলেন, “ঈদের আগে পোশাকের দাম কিছুটা বাড়ে। কিন্তু এবার অতিরিক্ত বেড়েছে।”
এবার পোশাকের অতিরিক্ত দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, গার্মেন্টস থেকে পাইকারি মার্কেট সবখানেই পোশাকের দাম বেড়েছে। প্রতি পাঞ্জাবিতে ১০০ থেকে ১৫০, পায়জামায় ৫০ থেকে ৬০, শাড়িতে ২০০ এবং থ্রি-পিসে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা পাইকারিতে বেড়েছে। যার প্রভাব খুচরা বাজারগুলোয় পড়ছে।
নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার রূপায়ন টাওয়ারের একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, “গতবারের তুলনায় এবার অনেক বেশি পোশাকের দাম। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই।’
সাত্তার খান কমপ্লেক্স শপিং কমপ্লেক্স সিড়ি ফ্যাশনের কর্ণধার সাকিব আহমেদ বলেন, “গত শুক্রবার থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। আগামী চার-পাঁচ দিন সর্বোচ্চ কেনাকাটা হবে। কারণ ঈদের আগে একটা শুক্রবার আছে, বাড়ি যাওয়ার আগে অনেকেই মার্কেটে আসবেন।”
এদিকে ঈদ কেন্দ্র করে পোশাকের দাম বাড়ায় মধ্যম আয়ের মানুষ ফুটপাতের পোশাককেই একটু বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। নিউ মার্কেট ও কান্দিরপাড় এলাকার আশপাশে ঈদ কেন্দ্র করে ফুটপাতেও প্রচুর দোকান বসেছে। সেগুলোতেও ছিল ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
টাউন হল সামনে আশপাশে বেশ কিছুক্ষণ ঘুরে দেখা যায়, ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা। জানতে চাইলে ভ্যানে পাঞ্জাবির দোকানদার সাগর আহমেদ বলেন, “ফুটপাতে পাঞ্জাবির দোকানে একের পর এক ক্রেতা আসছেন। পছন্দ হলে দরদাম করে পাঞ্জাবি কিনছেন। ক্রেতারা মার্কেট থেকে অনেকটা কম দামে পাঞ্জাবি কিনতে পেরে অনেক খুশি।”
ঈদের কেনাকাটাকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তায় ২৪ ঘণ্টা জেলা পুলিশ অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
ঢাকা/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কমপ ল ক স ফ টপ ত
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের সেরা ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ চট্টগ্রামের অভিষেক দাশ
এবছরের সেরা ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’ হয়েছেন চট্টগ্রামের অভিষেক দাশ। শুক্রবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ের চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাঁকজমকপূর্ণ এক আয়োজনে ষষ্ঠ পর্বের সেরা বাংলাবিদ নির্বাচন করা হয়। ছয়জনের উপস্থিতিতে ইতিহাস, বানান, সাহিত্য, শব্দার্থ, কবিতা, সংস্কৃতি বিভাগে জমজমাট প্রশ্নোত্তর, শব্দসৃষ্টি, শব্দরহস্যসহ বেশকয়েকটি পর্বের প্রতিযোগিতায় সেরাদের বাছাই করা হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা বাংলাবিদ হয় যথাক্রমে রিফা তাসনিয়া ও রশ্মি তুলতুল চৌধুরী। চূড়ান্ত পর্বের উপস্থাপনা করেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম।
দেশজুড়ে দীর্ঘ ১০ মাস ধরে বাছাইপর্ব এবং স্টুডিও পর্ব শেষে সেরা ছয়জন বাংলাবিদকে নিয়ে আয়োজিত হয় এ প্রতিযোগিতা। চূড়ান্ত পর্যায়ের সেরা ৬ বাংলাবিদ ছিলেন বরিশালের আদিবা মহসিন, সিলেটের প্রিয়ন্তি দাশ প্রান্তি, চট্টগ্রামের রশ্মি তুলতুল চৌধুরী, খুলনার সানিয়ান শুভ্র বিশ্বাস, ঢাকার রিফা তাসনিয়া, চট্টগ্রামের অভিষেক দাশ। দেশজুড়ে ৯টি অঞ্চলের বাছাই পরীক্ষা এবং ১৯টি স্টুডিও পর্বের জমজমাট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশব্যাপী লক্ষাধিক শিক্ষার্থী থেকে বাছাই করে নেওয়া হয় শীর্ষ ছয় প্রতিযোগিকে। এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিযোগিদের কণ্ঠে গাওয়া গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও আগুন, মাশা এবং ফেরদৌস গান পরিবেশন করেন।
মহোৎসবের সেরা ৬ বাংলাবিদের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকারী জিতে নেবেন ১০ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী পাবেন যথাক্রমে ৩ লাখ ও ২ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। এ ছাড়া প্রথম ১০ জন প্রতিযোগী পাচ্ছেন একটি ল্যাপটপসহ ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার করার জন্য ৫০ হাজার টাকার বাংলা বই ও বইয়ের আলমারি।
নতুন প্রজন্মের কাছে শুদ্ধ বাংলা, বানান ও ব্যবহার ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননকে শাণিত করা এবং বাংলাকে হৃদয়ে ধারণ করানোর উদ্দেশ্যে ইস্পাহানি মির্জাপুরের উদ্যোগে ও পৃষ্ঠপোষকতায় চ্যানেল আইয়ে প্রচার হয় প্রতিযোগিতাটি।
শুক্রবারের উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ইস্পাহানি টি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর হান্নান এবং চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ।
ওমর হান্নান তার বক্তৃতায় জানান, এবার প্রথম বাংলাবিদ প্রতিযোগিতায় মাদ্রাসা এবং ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিলেন। শীর্ষ ছয়জনের মধ্যেও একজন ইংরেজি মাধ্যমের একজন রয়েছেন।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন অতিথি বিচারক বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ফজলুল হক, প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারক লেখক আনিসুল হক, বিচারক অভিনয়শিল্পী ত্রপা মজুমদার ও বিচারক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, শাইখ সিরাজ, ইস্পাহানি গ্রুপের পরিচালক জাহিদা ইস্পাহানী, মির্জা আহমেদ ইস্পাহানি, ইমাদ ইস্পাহানি, ড. তারিক মনজুর প্রমুখ।
রাজশাহীর ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী বাংলাবিদ তৌফিক আলম এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মুহাম্মাদ ইবরাহিমকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।