রাজশাহীর তানোরে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যার পরে উপজেলার রাতৈল বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাজারের একটি মুদি দোকানে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।

দোকান মালিক বলছেন, ‘‘ইফতার মাহফিলে চাঁদা না দেওয়ার কারণে দোকানে হামলা চালানো হয়েছে।’’

এর আগে, বৃহস্পতিবার উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিনের বাড়িতে এই ইফতারের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.

) শরীফ উদ্দিন।

তবে, ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি আজাদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলী এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পরে মফিজ উদ্দিনের সমর্থক ও আজাদ আলীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে আজাদ আলীর পক্ষের মো. রনি, তার ভাই মো. সজীব, গোলাম রাব্বানী, মো. শামীম, মো. জনি, রুহুল আমিন, নুরুল ইসলাম, মুদি দোকানি দুরুল হুদা ও তার ছেলে মো. মিনু আহত হন। এছাড়া, মফিজ উদ্দিনের পক্ষের জিয়াবুর রহমান, আজিজুল ইসলাম, তোফাজ্জল হোসেন, সাহাবুর ইসলাম, মো. সুমন ও নেকশাদ আলী আহত হন। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত ইউনিয়ন বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. রনি বলেন, ‘‘এ বছর ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেই ঘটনায় একজন নিহত হন। তাই আমরা ইফতার মাহফিল আয়োজনের পক্ষে ছিলাম না। ইউনিয়ন বিএনপি এটা বয়কট করেছে। কিন্তু, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মফিজ উদ্দিন ইফতার মাহফিল করবেনই। তিনি বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা তুলেছেন। এসবের অডিও রেকর্ড আমরা পেয়েছি।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘ইফতার মাহফিলের জন্য মুদি দোকানি দুরুলের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়েছিল। চাঁদা না দেওয়ার কারণে শুক্রবার মফিজের লোকজন দুরুলের দোকানে হামলা চালায়। লুটপাট শুরু করলে আমরা গিয়ে বাধা দেই। তখন আমাদেরও মারধর করা হয়। এতে আমরা ৯ জন আহত হই। আমাদের মেরে দোকান থেকে প্রায় ১৪ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘এসব গল্প কারা বানিয়ে বলে? এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। ’’

এ বিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, ‘‘বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তবে কী নিয়ে ঘটনা তা জানি না। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/কেয়া/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ব এনপ র জ দ আল স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

গাঁজা সেবন করে ধর্ষণের পরিকল্পনা: পুলিশ

প্রবাসী বাবার খালার (দাদি) বাড়ি পাশের গ্রামে হওয়ায় প্রায়ই সেখানে যাওয়া-আসা করতো মেয়েটি। দাদির বাড়িতে মাঝেমধ্যে রাতেও থাকতো। পহেলা বৈশাখের দিন বিকেলেও দাদির বাড়িতে সেমাই খাওয়ার কথা বলে বের হয়। পরদিন সকালে মেয়েকে আনতে যান মা। কিন্তু তাকে আর পায়নি। দাদির ভাষ্য, আগের দিনই সে কিছুক্ষণ থেকে চলে গেছে। এরপরই উদ্বিগ্ন হয়ে মাসহ স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন শিশুটিকে। একপর্যায়ে খোঁজ মেলে শিশুটির। কিন্তু ততক্ষণে তাঁর শরীরে প্রাণ নেই। এলাকার একটি ভুট্টা ক্ষেতে মুখ ঝলসানো অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। 

পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, পহেলা বৈশাখের দিন দাদির বাড়ি থেকে ফেরার পথে তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে চার কিশোরসহ পাঁচজন। পরে শ্বাসরোধ করে ঘাড় মটকে হত্যা নিশ্চিতের পর মুখে এসিড নিক্ষেপ করে মরদেহ ফেলে চলে যায়। এরপর বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মেতে ওঠে তারা। 

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সোহেলসহ চারজন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ-ফুর্তি করবে বলে পরিকল্পনা করেছিল। নিজেরা চাঁদা তুলে গাঁজা কিনে সেবন করে।

শিশুটির বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রামে। ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার চাটমোহরে। দুই উপজেলার দুটি গ্রামই পাশাপাশি। শিশুটির বাবা মালয়েশিয়াপ্রবাসী। স্থানীয় একটি ক্যাডেট মাদ্রাসা পড়ত শিশুটি। ঘটনার পর শিশুটির মা চাটমোহর থানায় মামলা করেন। পাবনার পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খাঁনের নির্দেশে ওসি মনজুরুল আলমে নেতৃত্বে এসআই আওলাদ হোসাইনসহ অন্যরা তদন্ত শুরু করেন। 

আজ রোববার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান ওসি মঞ্জুরুল আলম। তিনি জানান, চাটমোহর ও বড়াইগ্রাম থানা এবং ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়েছে।  জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটিকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছে। গ্রেপ্তার চার কিশোরের বাড়ি চাটমোহর ও বড়াইগ্রামে। তাদের সবার বয়স ১৩ থেকে ১৬ বছর। অপর আসামি সোহেল রানার বয়স ২৫ বছর।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচজনই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করেছে। ডিএনএ সংরক্ষণ ও পরীক্ষাসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

চাটমোহর থানার ওসি বলেন, রোববার আসামিদের পাবনার আদালতে তোলা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ