ঈদের আগে ১২০ জন অস্থায়ী কর্মচারীকে ছাঁটাই করেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। এই অস্থায়ী তালিকায় থাকা ১৬৫ জনের বাকি ৪৫ জনকে বিভিন্ন শাখা ও দপ্তরে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) এক অফিস আদেশে রাসিকের ভারপ্রাপ্ত সচিব তৈমুর রহমান তাদের ছাঁটাই করেন। আদেশ অনুযায়ী, আগামী ১ এপ্রিল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

অনেকেই বলছেন, ঈদের আগে কর্মচারীদের এভাবে চাকরিচ্যুত করা অমানবিক।

‘অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামোর বাইরে থাকা বিভাগ/শাখা বিলুপ্তকরণসহ প্রয়োজনীয় জনবল সংযুক্তি এবং কর্মরত দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীদের যাচাই-বাছাই’-এমন শিরোনামের অফিস আদেশে মোট ১৬৫ জন কর্মচারীর নাম রয়েছে।

এর মধ্যে ১২০ জনের নামের পাশে লেখা হয়েছে ‘প্রয়োজন নাই’, অর্থাৎ তাদের আর প্রয়োজন নেই বলে মনে করা হয়েছে এবং ছাঁটাই করা হয়েছে। বাকি ৪৫ জন কর্মচারীকে বিভিন্ন শাখা ও দপ্তরে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।

রাসিকের ভারপ্রাপ্ত সচিব তৈমুর রহমান বলেন, “তালিকায় থাকা ১৬৫ জনের মধ্যে ১২০ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। বিধিবহির্ভূতভাবে খোলা কিছু শাখা বিলুপ্ত করায় এসব কর্মীর আর প্রয়োজন নেই। তবে যাদের দরকার, তাদের রাখা হয়েছে।”

এর আগে গত বছরের নভেম্বরেও রাসিক ১৬১ জন অস্থায়ী কর্মচারীকে ছাঁটাই করেছিল।

বারবার এভাবে আকস্মিক ছাঁটাইকে অমানবিক বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর রাজশাহী জেলা সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক মানুষ চাকরি হারিয়েছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণ বিশ্লেষণ করা হয়নি। কর্মহীন হলে মানুষ বিপথে চলে যায়।”

“রাসিকের ছাঁটাই প্রক্রিয়া দুঃখজনক ও অমানবিক। আরও চিন্তাভাবনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। উন্নয়ন মানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কর্মহীনতা নয়।”

তিনি আরও বলেন, “সিটি করপোরেশনকে নাগরিক সেবায় প্রায় ৫০ ধরনের কাজ করতে হয়। বর্তমানে এসব সেবা ব্যাহত হচ্ছে। অথচ জনবল বাড়ানোর পরিবর্তে কমানো হচ্ছে। অতীতের সরকার যদি রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দিয়ে থাকে, তাহলে সেটি তাদের দোষ, কর্মচারীদের নয়। এখন দেখা যাবে, ভবিষ্যতে আবার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে নতুন বোতলে পুরনো মদের মতো অবস্থা হবে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসিকের ভারপ্রাপ্ত সচিব তৈমুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় চিঠিতে স্বাক্ষর করেছি।”

ঢাকা/কেয়া/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ই কর

এছাড়াও পড়ুন:

এবার শাটডাউনের হুঁশিয়ারি পটুয়াখালী মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসদের

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা এবার শাটডাউনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আজ শনিবার পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন থেকে এ হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

আন্দোলনের তৃতীয় দিনে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ৮০ জনের মতো ইন্টার্ন চিকিৎসক ও ৩০ জন নার্স অংশ নেন।

আরও পড়ুনচিকিৎসকের ওএসডির আদেশ বাতিলের দাবিতে সেবা বন্ধ করে মানববন্ধনে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা১৭ এপ্রিল ২০২৫

এর আগে গতকাল শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনটি দাবি জানান ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। দাবিগুলো হলো হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও রোগীদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; চিকিৎসক শামীম আল আজাদকে ওএসডি করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালুর জন্য পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া।

১৪ এপ্রিল পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) পুকুরে পানিতে ডুবে হুসাইন মোহাম্মদ আশিক নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। পরে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি করে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই ১৭ এপ্রিল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম শামীম আল আজাদকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেদিন থেকে সেবা বন্ধ রেখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একজন বলেন, চিকিৎসক শামীম আল আজাদের ওএসডি আদেশ বাতিল এবং আশিকের মৃত্যুর পোস্টমর্টেমসহ সঠিক তদন্ত না হলে সেবা বন্ধের পাশাপাশি শাটডাউন কর্মসূচি পালন করা হবে।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাষ্য, কোনো রোগীর মৃত্যু হলে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর হামলা হয়। এ ধরনের ঘটনায় তাঁরা শঙ্কিত। তাই চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি করছেন তাঁরা।

মানববন্ধনে বলা হয়, ২০ বছর আগের ২৫০ শয্যার হাসপাতাল এখন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নীত হলেও আগের জনবল কাঠামোই রয়েছে। তা ছাড়া রোগীর সংখ্যা বাড়লেও চিকিৎসক আছেন মাত্র ২০ জন। সীমিত জনবল ও সরঞ্জাম নিয়ে রোগীর চাপ সামাল দেওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। তার ওপর নিরাপত্তাহীনতা এবং দোষারোপের সংস্কৃতি চিকিৎসকদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে। এসব জটিলতার নিরসন না হলে শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সেবা বন্ধ করে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনের বিষয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, সেবায় ফিরিয়ে নিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামীকাল স্বাস্থ্য বিভাগের একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা ও পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে বসেন। আশা করা যায়, দ্রুতই বিষয়টির সমাধান হবে।

ইনটার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। আজ শনিবার কয়েকজন রোগী এ কথা বলেন। ৯ দিন ধরে মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মো. আচমত আলী (৪৫) বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা ওয়ার্ডে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে তাঁদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছয় দাবিতে রংপুরে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সমাবেশ, আল্টিমেটাম
  • বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি, আবেদন স্নাতকোত্তরে
  • এবার শাটডাউনের হুঁশিয়ারি পটুয়াখালী মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসদের
  • আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সরকারি দপ্তরে জনবল নিয়োগ অমানবিক-অন্যায্য
  • চিকিৎসক ও শিক্ষক–সংকট মেটাতে এআই, হুমকিতে আরও কিছু পেশা
  • আরাকান আর্মিকে সম্পৃক্ত না করে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান সম্ভব নয়
  • বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জনবল বাড়াবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ছয় দাবি আদায়ে কারিগরি শিক্ষার্থীদের ‘কাফন মিছিল’ 
  • খুলনায় এসেনসিয়াল ড্রাগস`র ৪৫ জন চাকরিচ্যুত
  • নি‌য়োগ দুর্নীতি-অর্থ আত্মসাৎ: সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে দুদ‌কের হানা