শরীয়তপুরের ডামুড্যায় মোহাম্মদ জুয়েল সরদার (৩২) ও ফয়সাল সরদার (২৪) নামে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় চার ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে তিনজন পুলিশের কনস্টেবল বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাত ১টার দিকে ডামুড্যা শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে অপহরণকারীদের আটক করা হয়। 

উদ্ধার হওয়া মোহাম্মদ জুয়েল সরদার ভেদরগঞ্জ উপজেলার  ইকর কান্দি এলাকার মৃত সোহরাব সরদারের ছেলে ও ফয়সাল সরদার একই এলাকার মোহাম্মদ কাসেম সরদারের ছেলে। তারা ডামুড্যা বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে ২ মহাসড়কে বেড়েছে যাত্রীর চাপ, স্টেশনেও ভিড়

দিনাজপুরে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার  

ভুক্তভোগীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ধূসর রঙের একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ-১৫-৯৮৫৮) ও একটি সুজুকি জিকসার কালো রঙের মোটরসাইকেল এসে রাস্তার পাশে দাঁড়ায়। এসময় চারজন নেমে এসে জুয়েল ও ফয়সালকে জোর করে মাইক্রোবাসটিতে উঠায়। পরে অপহরণকারীরা ব্যবসয়ীদের নিয়ে রাত ১টার দিকে ডামুড্যা শহরের বাসস্ট্যান্ডের দিকে যান। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয়রা মাইক্রোবাসটি থামান। এসময় দুই ব্যবসায়ী স্থানীয়দের সহযোগিতা চান। পরে স্থানীয়রা তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সপর্দ করেন। পাঁচজন পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে একজনকে শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে আটক করেছে পুলিশ। 

আটকরা হলেন- বাগেরহাট জেলার মোল্লার হাট থানার গারফা এলাকার বাচ্চু মিয়া শেখের ছেলে কৌশিক আহমেদ সেতু (৩০), তিনি খুলনা জেলা পুলিশ লাইনসে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার বড় শিধুলকুড়া এলাকার মৃত আব্দুর রহমান তালুকদারের ছেলে কাউসার তালুকদার (২৯), তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। মাগুরা জেলার বাসিন্দা রুবায়েত মীর (২৭),  তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত এবং শরীফ হোসেন (৩৫) কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার আমৌদা এলাকার মৃত আনা মিয়ার ছেলে।

অপহরণকারী রুবায়েত মীর বলেন, “কাউসার তালুকদার হচ্ছে আমাদের বস। অপহরণের সময় যে টাকা পেয়েছিলাম তা কাউসারের কাছে। আমি আর কিছু জানি না।”

প্রত্যক্ষদর্শী ফাহিম আব্বাস বলেন, “এলাকায় ডাকাত পড়েছে শুনে আমি বাড়ি থেকে বের হই। পরে শুনি ডামুড্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। পরে এলাকাবাসী তাদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেন। ঘটনার সময় কয়েকজন পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে শুক্রবার সকালে একজন আটক হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।”

ভুক্তভোগী জুয়েলের স্বজন মিজানুর রহমান বলেন, “আমার চাচাতো ভাই জুয়েল ও ফয়সাল অপহরণ হন। তাদের ডামুড্যা ও ভেদরগঞ্জ তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অপহরণকারীরা ফয়সালকে দিয়ে তার আপন ভাই স্বাধীন সরদারকে মোবাইলে ফোন করায়। তার কাছে ২০ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা। তখন ব্যাংক, বিকাশ ও নগদ থেকে ৩ লাখ ৯১ হাজার টাকা পাঠায় তাদের। পরে আরো টাকা দাবি করলে তাদের লোভ দেখিয়ে ডামুড্যা শহরের বাসস্ট্যান্ডে আনা হয়। সেখানে আসলে জুয়েল ও ফয়সালকে উদ্ধারের পর তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেওয়া হয়। আজ একজনকে আটক করেছে পুলিশ।” 

ভুক্তভোগী ফয়সাল ও জুয়েল জানান, তারা কাপড় ব্যবসায়ী। গতকাল রাতে দোকান থেকে তারা বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। দারুল আমান বাজারের কাছে মদন বেপারীর বাড়ির সামনে হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস ও একটি মোটরসাইকেল তাদের গতিরোধ করে। পরে তাদের মাইক্রোবাসে তুলে নেয় গাড়িতে থাকা লোকজন।

হাতে পুলিশের হাতকড়া পরিয়ে ও পিস্তল ঠেকিয়ে তারা ২০ লাখ টাকা দাবি করে। নিজেদের পুলিশের লোক বলেও তারা পরিচয় দেয়।

তারা আরো জানান, অপহরণকারীরা তাদের মাদারীপুর লেক পাড় নিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা স্বাধীনকে ফোন করান। স্বাধীন ৩ লাখ ৯১ হাজার টাকা দেয় তাদের। পরে বাকি ৬ লাখ ৯ হাজার টাকার জন্য অপহরণকারীরা ডামুড্যা শহরের বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায়। সেখানে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করেন।

ডামুড্যা থানার ওসি হাফিজুর রহমান মানিক বলেন, “দুইজন ব্যবসায়ী রাতে দোকান থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পথে তাদের অপহরণ করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অপহরণের ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। তাদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক অপহরণ অপহরণক র র এল ক র ম ল সরদ র ব যবস য় ফয়স ল

এছাড়াও পড়ুন:

চবির অপহৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে সমাবেশ 

খাগড়াছড়ি শহরের গিরিফুল এলাকা থেকে অপহরণ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তি এবং রাঙামাটির কাউখালীতে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।

রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে খাগড়াছড়ি আদিবাসী ছাত্র সমাজের ব্যানারে খাগড়াছড়ি শহরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

খাগড়াছড়ির কোট চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তুষন চাকমা। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুজন চাকমা ঝিমিট, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলর উক্যনু মারমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরামের সদর শাখার সভাপতি আকাশ ত্রিপুরা, চবির সাবেক শিক্ষাথী রহেল চাকমা, শিক্ষাথী মায়া চৌধুরী।

আরো পড়ুন:

কুয়েটে ভিসির প্রতীকী চেয়ারে আগুন দিলেন শিক্ষার্থীরা

সিকৃবিতে ‘ম্যানার’ শেখানোর নামে গভীর রাতে ডেকে নিয়ে র‌্যাগ

বক্তারা জানান, ইউপিডিএফ শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং অপহরণ বানিজ্য শুরু করেছে। বক্তারা এ ঘৃন তৎপরতা থেকে ইউপিডিএফকে বের হয়ে আসার আহবান জানান।

গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। একইসঙ্গে তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও অপহরণ করা হয়।

অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও পিসিপির চবি শাখার সদস্য রিশন চাকমা, চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, একই বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা ও প্রাণি বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। 

ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানিকছড়িতে মোবাইল টাওয়ারের দুই টেকনিশিয়ানকে অপহরণের অভিযোগ
  • খাগড়াছড়িতে এবার ২ টেকনিশিয়ান ‘অপহরণ’
  • চবির অপহৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে সমাবেশ 
  • পাহাড়ি পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভের ডাক
  • চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি ছাত্রদল ও মৈত্রীর
  • ৭২ ঘণ্টায়ও খোঁজ মেলেনি চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর
  • তিন দিনেও উদ্ধার হয়নি পাহাড়ি পাঁচ শিক্ষার্থী
  • রাজশাহীতে অপহৃত মাদ্রাসা শিক্ষক উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
  • রাজশাহীতে অপহৃত শিক্ষককে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
  • প্রতিবেশীকে বাঁচাতে গিয়ে যেভাবে ‘ফেঁসে’ গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী