সরকারের কাছে জুয়েলার্স ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা চেয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) নেতারা।

জুয়েলার্স সমিতির নেতারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও ব্যবসায়ীদের ওপর সরাসরি আক্রমণের ঘটনা বাড়ছে। পাশাপাশি জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও অপহরণ চেষ্টা তাঁদের জানমালের নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমনকি বাসাবাড়িতেও জুয়েলারি ব্যবসায়ী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিরাপদ বোধ করছে না। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়তে পারে—এমন আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

রাজধানীর মগবাজারে জুয়েলার্স সমিতির কার্যালয়ে আজ শুক্রবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনের নেতারা। তাঁরা জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানে সরকারের আরও সহযোগিতা চান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জুয়েলার্স সমিতির সহসভাপতি মো.

নিপনুল হাসান। আরও উপস্থিত ছিলেন জুয়েলার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ, সহসভাপতি এম এ হান্নান আজাদ, সহসভাপতি মাসুদুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, সমিত ঘোষ প্রমুখ। সমিতির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানা যায়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত বুধবার (২৬ মার্চ) ভোর ৫টায় জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অলংকার নিকেতনের কর্ণধার ও জুয়েলার্স সমিতির সহসভাপতি এমএ হান্নান আজাদের বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় ও ছদ্মবেশী ২৫-৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল হামলা চালায়। এ সময় তাঁর বাসা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এমনকি এম এ হান্নান আজাদকে অপহরণের চেষ্টা করে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাজুসের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. ওয়াহিদুজ্জামান সুজনের ওপর ও তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার চেষ্টা হয়, যা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২৬ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ২৩টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ১১টি, আশুলিয়া সাভারে ১টি, মুন্সিগঞ্জে ১টি, খুলনায় ৪টি, কুমিল্লায় ১টি, পটুয়াখালীতে ২টি, ময়মনসিংহে ১টি, সিলেটে ১টি ও হবিগঞ্জে ১টি প্রতিষ্ঠানে চুরি ও ডাকাতি হয়। আশুলিয়া-সাভারে ডাকাতির সময় ডাকাতদের গুলিতে একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী নিহত হয়। বনশ্রীতে সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনায় একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হয়েছেন। বিগত এক বছরে এই চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় দেশের ২৩টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে রিপনুল হাসান বলেন, ‘জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। এ জন্য জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে সরকারের আলাদা দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সশস্ত্র প্রহরার পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের সব জেলার জুয়েলারি মার্কেটে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা দাবি জানাচ্ছি।’ এ ছাড়া জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই হওয়া অলংকার উদ্ধার এবং অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলন থেকে জুয়েলার্স সমিতির নেতারা অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা রোধে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও বাইরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নিশ্চিত, নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠান বন্ধ, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সোনা পরিবহনে প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রদল নেতার টাকা বিতরণের ভিডিও ভাইরাল (ভিডিও)

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদের টাকা বিতরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে চারদিকে চলছে নানা আলোচনা। তবে ঈদ সালামি ও ঈদ উপহার বাবদ ওই টাকা দলের নেতাকর্মীদের দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, শনিবার (২৯ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ তার নিজের ফেসবুকের পেজে ২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করেন। যার ক্যাপশনে লেখা রয়েছে- ‘সালামি শুধু উপহার নয়, এটি ঈদের খুশির প্রতীক।’

ভিডিওতে দেখা যায়, মাসুদুর রহমান মাসুদের চারপাশে ঘিরে আছেন প্রায় ত্রিশ জন যুবক। তাদের সামনে এক হাজার টাকা ও পাঁচশ টাকার নোটের বান্ডিল থেকে টাকা গুনে আশেপাশের যুবকদের মাঝে বিলি করছেন। এ সময় ছাত্রদল নেতা মাসুদের পাশে থাকা এক যুবককে টাকা গুনতে সহায়তা করতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, আমার ওয়াইফাই ও ডিস লাইনের ব্যবসার লাভের অংশ দিয়ে আমি প্রতিবছর নেতাকর্মীদের ঈদ উপহার ও ঈদ সালামি দিয়ে থাকি। 

তবে এ বছর সময় স্বল্পতার কারণে নেতাকর্মীদের পাঞ্জাবি কিনে দেওয়া সম্ভব হয়নি, যে কারণে নগদ টাকা দিয়েছি। সর্বমোট দুই লাখ টাকা দিয়েছি। তাছাড়া দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া ও তাদেরকে ঈদ উপহার দেওয়া কোনো দোষের কিছু নয়। 

আমাদের নেতা তারেক রহমান ঈদ উপহার দেওয়ার নানা নির্দেশনা রয়েছে। সুতরাং আমি দলের নেতাকর্মীদের ঈদ উপহার দিয়েছি।

তিনি বলেন, মূলত এই ভিডিওটি আমি করিনি। আমার পেজের বেশ কয়েকজন এডমিন রয়েছে। তাদের মধ্য থেকে কেউ একজন এই ভিডিওটি করে পেজে প্রকাশ করেছেন। 

তবে এভাবে ভিডিওটি প্রকাশ করা উচিত হয়নি। ভবিষ্যতে আমাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিতরা কীভাবে হিসাব করব
  • সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করে চাকরি হারানোর ঝুঁকি কতটা?
  • ছাত্রদল নেতার টাকা বিতরণের ভিডিও ভাইরাল (ভিডিও)
  • যুক্তরাষ্ট্রের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলেন উমামা ফাতেমা
  • ক্ষোভ থেকে হা–মীমের কর্মকর্তাকে হত্যা: র‌্যাব
  • ট্রাম্প প্রশাসনের ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থী ধরপাকড়ের মধ্যেই কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ
  • আজীবন ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছেন সত্যেন সেন
  • স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা চায় বাজুস
  • নেশার টাকা চেয়ে বাবাকে হুমকি, ভাতিজার মারধরে হুমকিদাতার মৃত্যু