আন্তর্জাতিক ফুটবলের ধকল কাটিয়ে না উঠতেই বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাতে ওসাসুনার বিপক্ষে ম্যাচে নামতে হয় বার্সেলোনাকে। কাতালান জায়ান্টরা ইচ্ছের বিরুদ্ধে খেলে ওসাসুনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে। তবে ম্যাচে বার্সা মিডফিল্ডার দানি ওলমো চটে পড়েন।

এই অবস্থায় আবারও সামনে চলে আসে ফুটবলাদের সাথে খেলার সূচির সাংঘর্ষিকতার বিষয়টি। বার্সা ম্যানেজার হান্সি ফ্লিক জানালেন, খেলোয়াড় ও কোচদের কথাও মাথায় রাখা উচিৎ সবার। অন্যদিকে বার্সা ডিফেন্ডার জুল কুন্দে বলেন ফুটবলাররা যন্ত্র না।

একটা সময় ইউরোপিয়ান ফুটবল মৌসুম শেষ হওয়ার পর টানা দুই মাস বিশ্রাম নিতেন খেলোয়াড়রা। এরপর ক্লাবে যোগ দিলেও প্রাক মৌসুম কিংবা প্রদর্শনী ম্যাচে খেলার বাধ্যবাধকতা ছিল না ফুটবলারদের। তবে ধীরে-ধীরে ফুটবল এখন পৃষ্ঠপোষকরা নিয়ন্ত্রণ করছে। তাই আয়োজক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা গুলোও গা ভাসাচ্ছে সেই স্রোতে। এই মৌসুম থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন ফরম্যাটে ফুটবলারদের খেলতে হচ্ছে অতিরিক্ত ম্যাচ। আছে ন্যাশনস লিগের ব্যস্ততা। এসবের সাথে যুক্ত হয়েছে ক্লাব বিশ্বকাপ।

আরো পড়ুন:

জয়ের পর আনচেলত্তি জানালেন, নজর কেবল ‘তিন পয়েন্টে’

পয়েন্টে শীর্ষে বার্সা, গোলে লেভানডোফস্কি

এদিকে ওসাসুনার বিপক্ষে ম্যচটা ধরলে ২০ দিনের মাঝে বার্সেলোনা মোট ৭ বার মাঠে নাম্বে। ৬৪ ঘন্টার মাঝেই রবিবার আরেকটি লা লিগার ম্যাচ খেলতে হবে কাতালান জায়ান্টদের। এই ব্যাপারে ফ্লিক বলেন, “আমি মনে করি, আপনাকে খেলোয়াড়দের কথা শুনতে হবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গ্রীষ্মে ক্লাবের জন্য বিশ্বকাপ আছে। এটা কঠিন। ন্যাশনস লিগ, আন্তর্জাতিক বিরতি।  আমার মতে, এই বিশ্বকাপটা (ক্লাব) ভাল নয়। ঠিক আছে, আপনি অনেক টাকা উপার্জন করতে পারছেন, কিন্তু খেলোয়াড়দের জন্য এটা ভাল নয়। খেলোয়াড়দের কথা ভাবতে হবে।”

বেশি খেলার ফলে খেলার মানের সাথে আপোষ করতে হয় বলে জানান জার্মান কোচ ফ্লিক, “ভক্তরা চায় যে, প্রতিটি খেলোয়াড় শতভাগ দিয়ে খেলুক। জমজম্যাট ম্যাচ দেখতে চায়। যখন ব্যাপারটা এইভাবে চলে, আমার মনে হয় খেলাটা আর ওই স্তরে থাকে না। আমরা এই পর্যায়ে (সর্বোচ্চ) খেলতে পারি না। শুধু আমরা না, যারা বিশ্বকাপে খেলবে তারা কেউই ওই পর্যায়ে খেলতে পারবে না।”

বার্সেলোনা ডিফেন্ডার কুন্দে রবিবার ফ্রান্সের হয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ন্যাশনস লিগের কোয়ার্টারফাইনালে ১২০ মিনিট খেলেছিলেন। ফ্লিকের অভিযোগের সাথে একমত হয়েছেন তিনিও। কুন্দে বলেন, “আমি এই ম্যাচের তারিখের নির্বাচনের ব্যাপারে রাগান্বিত। ব্যাপারটা স্বাভাবিক নয়। সত্যি বলতে, আমি যে কাজটি করি, তার জন্য আমি ভাগ্যবান। কিন্তু বার্সা ও ওসাসুনা যারা আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের নিয়ে এই ম্যাচ খেলেছে, তাদের প্রতি অমর্যাদা ও অস্মমান প্রদর্শন করে, এই তারিখটি নির্বাচন করা হয়েছে।”

এরপর ফরাসি ডিফেন্ডার উয়েফা ও ফিফার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ফুটবলারদেরও বিশ্রাম প্রয়োজন। কুন্দে বলেন, “আমরা যন্ত্র নই যে, খেলে কেবল ভক্তরা যা চায় সেটার প্রদর্শনী করব। আমাদেরও বিশ্রাম প্রয়োজন। মূল কথা হচ্ছে, এটা খেলোয়াড়দের প্রতি অমর্যাদা প্রদর্শন করে। সকল প্রতিষ্ঠানকে এটা বোঝা উচিত। শুধু লা লিগা নয়, সবাই(উয়েফা,ফিফা)।”

কিছুটা বৈপ্লবিক সুরে কুন্দে মনে করিয়ে দিলেন যে, ফুটবলের মূল নায়ক ফুটবলাররাই, “আমরা আগে কিছু বলিনি, কারণ আমরা অজুহাত খুঁজতে চাইনি। কিন্তু এক সময় আপনার কথা শোনা উচিৎ। আমরা হচ্ছি প্রধান কুশীলব। তারা শুধু তাদের চাওয়া মতো কিছু করতে পারে না।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কারখানাতেই শ্রমিকের ‘আত্মহত্যা’, ছুটি ঘোষণা

গাজীপুরে একটি কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে কারখানাতেই এক শ্রমিক বিষাক্ত কেমিক্যাল পানে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় রাতের পালার কাজ চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এরপর কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

মারা যাওয়া মো. ইদ্রিস আলী (২৩) উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সপরিবার ভাড়া বাসায় থেকে মনট্রিমস্‌ লিমিটেড কারখানার কার্টন সেকশনে কাজ করতেন।

কারখানার বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানান, এক বছর হয়ে গেলেও ইদ্রিস আলীর চাকরি এখনো স্থায়ী করা হয়নি। স্থায়ী করার বিষয়ে তিনি যখনই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেছেন, তখনই তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। এ ছাড়া তিনি নানা বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হতাশার মধ্যে ছিলেন। গতকাল রাতের পালার কাজ চলাকালে কোনো এক সময় ইদ্রিস আলী কারখানার কেমিক্যাল পান করেন। পরে তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইদ্রিস আলী মৃত্যুর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, এক বছর ধরে তিনি চাকরি করছেন। কিছু মানুষ আসার তিন মাস, ছয় মাসের মধ্যে স্থায়ী হচ্ছেন, কিন্তু তাঁর চাকরি স্থায়ী করা হচ্ছে না। কারখানার দুজন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে তিনি আরও লেখেন, ‘ওরা মানুষকে মানুষ মনে করে না। তারা মনে করে, ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির তৈরি। আমি আজকে সুইসাইড করব।’

কারখানার শ্রমিকেরা বলেন, ওই দুই কর্মকর্তা যোগ দেওয়ার পর থেকে শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার করছেন। তাঁরা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। কথায় কথায় চাকরি থেকে ছাঁটাই করেন। অবিলম্বে তাঁদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। না হলে আরও শ্রমিক মারা যাবেন।

এ বিষয়ে মনট্রিমস্ লিমিটেডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কারখানার একজন শ্রমিক বিষজাতীয় কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কেন বা কী কারণে, জানতে চাইলে তিনি সংযোগ কেটে দেন। এরপর একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি আর ধরেননি।

কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. যোবায়ের বলেন, গতকাল মধ্যরাতে এক শ্রমিক কারখানার ভেতরে বিষাক্ত কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন, চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে সরাসরি ভোট না করার সুপারিশ
  • গাঁজা সেবন করে ধর্ষণের পরিকল্পনা, আদালতে স্বীকারোক্তি
  • পাবনার শিশুটিকে হত্যা ও মুখ ঝলসে দেওয়ার আগে ধর্ষণ করা হয়: পুলিশ
  • যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতাদের বাড়িতে পুলিশ
  • গাজীপুরে সাফারি পার্ক থেকে চুরি হওয়া একটি লেমুর উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১
  • ফেসবুক দেখে জানলেন তিনি খুন হয়েছেন, এরপর যা ঘটল
  • পাকিস্তানের কাছেও হেরে আরও অপেক্ষায় বাংলাদেশের মেয়েরা
  • নিজ ঘরে মিলল যুবদল নেতার অর্ধগলিত মরদেহ
  • ‘ও’ পজিটিভের বদলে ‘বি’ পজিটিভি রক্ত পুশ, রোগীর মৃত্যু
  • গাজীপুরে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কারখানাতেই শ্রমিকের ‘আত্মহত্যা’, ছুটি ঘোষণা