রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি কিংবা ট্রাভিস হেড নন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সেরা তারকা হিসেবে নিকোলাস পুরানকেই এগিয়ে রাখলেন হরভজন সিং। গতকাল হায়দরাবাদের বিপক্ষে ২৬ বলে ৭০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে আরও একবার নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন ক্যারিবিয়ান তারকা। তার ঝড়ো ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৬টি ছক্কা।
এই মৌসুমে আইপিএলে পুরান এখন পর্যন্ত ১৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। গত আসরে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে প্রায় ১৮০ স্ট্রাইক রেটে ৫০০ রান করেছিলেন তিনি। এবারও একই ধাঁচে প্রতিপক্ষ বোলারদের কাঁপিয়ে দিচ্ছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। এই ফর্ম দেখে হরভজন সিং এক্সে লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তে নিকোলাস পুরানই সেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার।’
এদিকে আইপিএলে লক্ষ্ণৌয়ের হয়ে হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন পুরান। মাত্র ৩১ ম্যাচে ১০০২ রান করেছেন তিনি, যেখানে তার গড় ৪৫.
খেলা শেষে পুরান জানান, ‘ছয় মারার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। শুধু নিজের সেরাটা দিয়ে দলকে ভালো জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করেছি। বল ব্যাটে ভালো আসছিল। গত নয় বছর ধরে আইপিএলে নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এবারও সুযোগ পেয়েছি, সেটাকে কাজে লাগাতে চেয়েছি।’
তার ছক্কা মারার শক্তির রহস্য কী? পুরান বললেন, নিজের ব্যাট স্পিড নিয়ে কখনো কাজ করিনি। এটা ঈশ্বরপ্রদত্ত প্রতিভা। তবে বছরের পর বছর কঠোর পরিশ্রমের ফল এখন পাচ্ছি, আর দলকে জেতাতে পেরে দারুণ লাগছে।’
শক্তিশালী ব্যাটিংয়ের সুবাদে ১৯০ রানের লক্ষ্যও সামান্য মনে হয়েছে লক্ষ্ণৌর কাছে। ১৬.১ ওভারেই ম্যাচ জিতে নেয় তারা, হাতে ছিল ২৩ বল ও ৫ উইকেট। ২৩ বল বাকি থাকতেই এই ম্যাচ জয়ের নায়ক নিকোলাস পুরান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
তপ্ত দুপুরে হাওরের পথে
মাঝ আকাশে সূর্য। প্রখর তীব্রতা নিয়ে যেন ঝরছে রোদ। চামড়াপোড়া এমন থমথমে গরমেও মাঝেমধ্যে শীতল বাতাস শরীর ধুয়ে দিচ্ছে! সুদূরে ডাকছে পাখি। পানি কমে চিকন হয়ে আসা খালে চুপটি মেরে শিকারের আশায় দাঁড়িয়ে আছে একঝাঁক সাদা বক। রাস্তার ধারে ফুটে আছে পিউম ফুল। ডানে-বাঁয়ে দিগন্তবিস্তৃত সবুজ ধানখেত। খেতে দাঁড়িয়ে থাকা হিজল-করচে গজিয়েছে কচি পাতা।
সম্প্রতি হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হাওর ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে। বর্ষায় হাওরের যে রূপ, শুকনা মৌসুমে তা একেবারেই বিপরীত। যে হাওর বর্ষায় অনেকটা সমুদ্রের মতো, শুকনা মৌসুমে সেখানেই মাটি ফেটে চৌচির। কিছু খাল-নদীতে পানি থাকলেও তা যৎসামান্য। আবার কোনো কোনো জলাশয় তো শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে! কোথাও একাকী, আবার কোথাও দলবেঁধে দাঁড়িয়ে আছে হিজল-করচগাছ।
সদ্য শেষ হওয়া চৈত্র মাসের এক দুপুরে হাওরের আঁকাবাঁকা পাকা-কাঁচা রাস্তা ধরে এই প্রতিবেদক যান। বানিয়াচং উপজেলা সদর থেকে রওনা হয়ে লক্ষ্মীবাঁওড় জলাবন (খরতির জঙ্গল) পেরিয়ে জেলার আজমিরীগঞ্জের পাহাড়পুর বাজার পর্যন্ত যাওয়ার পথে দেখা মেলে শতাধিক গ্রাম, গোটা দশেক হাওর-নদী-বিল-খালের। পথে পথে সৌন্দর্য। মাঠ, হাওরের উন্মুক্ত প্রান্তর যেন এখন সবুজ ঘাসের গালিচা। সেখানে চরে বেড়াচ্ছে গরু-ছাগল। বক, শামুকখোল পাখিরা জলাশয়ে একসঙ্গে খুঁজছে খাবার।
বানিয়াচং উপজেলা সদর পেরিয়ে হাওরের মূল ভূখণ্ড ঢুকতেই স্বাগত জানায় পাকা একটি সড়ক। সড়ক ধরে কেউ-বা হেঁটে যাচ্ছেন, কেউ-বা যাচ্ছেন ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে চেপে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, বর্ষায় এই সড়ক পানির নিচে ডুবে থাকে আর হেমন্তে ভেসে ওঠে। সড়কের বিভিন্ন অংশ ভাঙাচোরা, কোথাও আবার পিচহীন। গবাদিপশুর জন্য ঘাস কেটে কেউ-বা সড়ক ধরে বাড়ি ফিরছেন, কেউ-বা সড়ক-লাগোয়া খাল-নালায় ব্যস্ত মাছ শিকারে। মাথার ওপরে চক্কর খাচ্ছে চিল, সারস, কাক, ফেসকুন্দাসহ নানা জাতের পাখি।
বানিয়াচং উপজেলার খরতির জঙ্গলে হিজল-করচবাগ