আওয়াজটা উঠেছিল কাতার বিশ্বকাপের পরপরই। দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই ইউরোপের ক্লাবে খেলে থাকেন। সেখানকার কৌশলগুলোর সঙ্গে তারা নিজেদের রপ্ত করেছেন। সেখানে বছরে তিন-চারবার দেশের হয়ে খেলতে এসে ব্রাজিলিয়ান কোচের অধীনে ঠিক মানিয়ে নিতে পারেন না। এমন এক জোরালো যুক্তি ভিনি-রাফিনিয়াহদের লকার রুম থেকেই উঠেছিল। তার পরই ইউরোপিয়ান কোচের সন্ধানে উঠে পড়ে লাগে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল সংস্থা। 

তাদের প্রথম লক্ষ্যই ছিল রিয়াল মাদ্রিদের ইতালিয়ান কোচ কার্লো আনচেলত্তির দিকে। তবে দেড় বছরের বেশি অপেক্ষায় রাখার পর আনচেলত্তি রিয়াল ছাড়েননি, বরং নতুন করে ২০২৬ সালের ফুটবল মৌসুম পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেছেন। তবে সম্প্রতি কোচ দরিভাল জুনিয়রের তত্ত্বাবধানে ব্রাজিলের পারফরম্যান্সে প্রচণ্ডভাবে হতাশ তাদের ফেডারেশন কর্তারা। ব্রাজিলের প্রভাবশালী দৈনিক ও গ্লোবার রিপোর্ট– আজকালের মধ্যেই দরিভাল জুনিয়রকে ডেকে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডনাল্ডো রদ্রিগুইজ পত্রপাঠ কোচকে বিদায় করে দেবেন। 

কিন্তু তাঁর জায়গায় কে হবেন নতুন কোচ? ফুটবলবিশ্বে এসব খবরে যে ব্রেকিং দিয়ে থাকেন, সেই ইতালিয়ান সাংবাদিক ফেব্রিজিও রোমানো জানাচ্ছেন, রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে ফের যোগাযোগ করেছে ব্রাজিল ফুটবল সংস্থার প্রধান এবং এবারও নাকি পাকা কথা হয়েছে আনচেলত্তির সঙ্গে। জুলাইয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের পর তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। রিয়াল মাদ্রিদের দায়িত্ব ছেড়ে তার পর থেকেই তিনি ব্রাজিলের দায়িত্ব নিতে পারেন।

এই মুহূর্তে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে আর চারটি ম্যাচ রয়েছে ব্রাজিলের। যার দুটি জুনে ইকুয়েডর ও প্যারাগুয়ের সঙ্গে। বাকি দুটি সেপ্টেম্বরে চিলি আর বলিভিয়ার বিপক্ষে। জুনে আনচেলত্তি ব্রাজিলের দায়িত্ব না নিতে পারলে সেপ্টেম্বরে নিশ্চিত থাকবেন বলেও গ্লোবোর খবর। আর জুনে অন্তর্বর্তী স্থানীয় কোচদের দিয়ে কাজ সারাবে ব্রাজিল। কিন্তু ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য আনচেলত্তিকে চাই চাই ব্রাজিলের এবং এ ব্যাপারে নাকি ভিনি, রদ্রিগো, রাফিনিয়াহদের মতো খেলোয়াড়ের জোর দাবি রয়েছে। তাই আনচেলত্তি রিয়াল ছেড়ে এলে সেখানে কোচ হবেন কে? মিডিয়ার গুঞ্জন রিয়াল তাঁর ঘরের ছেলে বর্তমান লিভারকুজেনের কোচ জাভি আলোনসোকে নিয়ে আসবে।

কিন্তু দরিভালের প্রতি কেন বিরক্ত ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা? ও গ্লোবোর খবর, দরিভালের প্রচণ্ড রক্ষণশীল কৌশল পছন্দ নয় তাদের। কাতার বিশ্বকাপের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩১টি গোল হজম করেছে ব্রাজিল, যেখানে গোল করেছে ৩০টি। ১৬ ম্যাচের মধ্যে মাত্র সাতটিতে জিতেছে তারা, সাতটিতে ড্র করেছে। জয়ের শতাংশ ৫৮.

৭, যা কিনা ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে কোচদের পারফম্যান্সে চতুর্থ। লুইস ভিনহাইসের জয়ের শতাংশ ছিল ৫৩.৩, ফার্নান্দো ডিনিজের ৩৮.৯ আর রামোন মেনিজিসের ৩৩.৩। দরিভালকে দিয়ে তাই কোনোভাবেই আর ব্রাজিল দলকে খেলাতে চাইছেন না ফেডারেশনের কর্মকর্তারা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ বক প র দর ভ ল ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় মাসে ২১ ম্যাচের ব্যস্ততা

নিয়োগ পেয়েই নাভিদ নেওয়াজ দল গোছানোর কাজে নেমে পড়েছিলেন ২০২৪ সালে। প্রাথমিকভাবে বড় স্কোয়াড নিয়ে শুরু করে সীমিত করে এনেছিলেন জুলাই মাসে। গত ৯ মাসে দল গড়ার কাজ শেষ করে এবার বিশ্বকাপে মনোযোগ কোচের। আগামী মাস থেকে ম্যাচ খেলায় মনোযোগী হবেন নাভিদ নেওয়াজরা। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে আগামী ছয় মাসে ২১টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। দ্বিপক্ষীয় এবং ত্রিদেশীয় সিরিজগুলো হবে বিদেশের মাটিতে। শ্রীলঙ্কা দিয়ে শুরু, শেষ ইংল্যান্ডের মাঠে।

বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ম্যানেজার আবু ইমান মো. কাউসার জানান, বাংলাদেশের যুবারা ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কা যাবে ছয় ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে। সিরিজের সব ম্যাচই হবে হাম্বানটোটায়। লঙ্কা থেকে দেশে ফিরে আজিজুল হাকিম তামিমদের প্রস্তুতি নিতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের। জুলাই মাসে জুনিয়র প্রোটিয়াদের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ও তিন ম্যাচের সিরিজ খেলবে বলে জানান কাউসার। বেনুনী ও প্রিটোরিয়ায় হবে সিরিজগুলো। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ মাথায় রেখে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে জিম্বাবুয়েতে। 

কাউসার বলেন, ‘আগামী বিশ্বকাপ হবে জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়াতে। ভেন্যুকেন্দ্রিক ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা থাকবে। জিম্বাবুয়ের কাছাকাছি কন্ডিশন দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ত্রিদেশীয় সিরিজে ভালো খেলা হবে আশা করা যায়। জুলাই-আগস্টে খেলা শেষ করে যেতে হবে ইংল্যান্ডে। ওখানে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ছাড়াও একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ হতে পারে। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড চেষ্টা করবে আরেকটি দল নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজনের।’ 

ইংলিশ যুবাদের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলবেন আজিজুলরা। সেপ্টেম্বরে হবে খেলাগুলো। এই সিরিজগুলো শেষে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি নেবেন খেলোয়াড়রা।

বাংলাদেশ এশিয়া কাপে টানা দুই বারের চ্যাম্পিয়ন। বিশ্বকাপের আগে এই টুর্নামেন্টে ভালো খেলা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন কোচ নাভিদ। কারণ এশিয়া কাপ-পরবর্তী সময়ে তেমন ম্যাচ খেলার সুযোগ থাকবে না। টুর্নামেন্ট হিসেবে ফাইনাল মহড়া হবে সেটি। কাউসার জানান, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে জিম্বাবুয়ে যাওয়ার আগে দেশের মাটিতে একটি সিরিজ খেলার চেষ্টা করবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছেন তারা। মূলত ২০২০ সালের বিশ্বকাপের সাফল্য মাথায় রেখে প্রস্তুত করা হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে। 

২০২০ সালে শিরোপা জেতার পর মাঝে দুটি বিশ্বকাপ খেলে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। মূলত সেই মানের খেলোয়াড় ছিল না। এবারের দলটা ২০২০ সালের দলের মতোই। ব্যাটিং, বোলিং বিভাগ দারুণ কার্যকর। পারভেজ হোসেন ইমনের মতো পেস বোলার আছেন দলে। বিপিএল, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলে যারা পরিণত হচ্ছেন বড় মঞ্চের জন্য। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও খেলেন যুবাদের কেউ কেউ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আনচেলত্তিকে ব্রাজিলের চাই-ই চাই
  • ছয় মাসে ২১ ম্যাচের ব্যস্ততা