Prothomalo:
2025-04-21@10:03:06 GMT

পেঁয়াজবীজেই হাফিজের হাসি

Published: 28th, March 2025 GMT

হাফিজ উদ্দিন মৃধা তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়েন। বড় ভাই একদিন ডেকে বললেন, ‘আমি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। তোকে দুই ক্লাস বেশি পড়ালাম। এখন লাঙল ধর।’ ভাইয়ের এ কথা শুনে শিশু হাফিজ মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিলেন। বাবা নেই, তাই মা সেদিন কিছু করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে কলম ছেড়ে লাঙল ধরেন হাফিজ। তবে তিনি লাঙলেই ফলিয়েছেন সোনা।

এখন মাটিতে হাত দিলেই বুঝতে পারেন, কোন মাটি পেঁয়াজের। সংকরায়ণের মাধ্যমে পেয়েছেন ছয় জাতের বীজ। দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ১৪ জেলায় ছড়িয়ে আছে সেই পেঁয়াজবীজের বাজার। তাঁর রয়েছে সাড়ে ৩০০ কন্টাক্ট ফারমার (চুক্তিবদ্ধ চাষি)। হাফিজ উদ্দিন (৫৭) সেই চাষিদের বপনের জন্য বীজ দেন, বিনা সুদে ঋণ দেন। তাঁদের উৎপাদিত পেঁয়াজবীজ নিয়েও চাষির দুশ্চিন্তা থাকে না। সব বীজ তিনিই নগদ টাকায় কিনে নেন। এভাবে তিনি নিজের পাশাপাশি দিন বদলে দিয়েছেন ভিটেমাটিহীন শতাধিক চাষির। কেউ জায়গাজমি কিনছেন, কেউ পাকা ঘরবাড়ি করেছেন।

সাধারণ পেঁয়াজ সহজে পচে যায়। চাতালে বেশি দিন টেকে না। একাধিক কন্দবিশিষ্ট হয়, ফেটে যায়। সংকরায়ণের মাধ্যমে পাওয়া হাফিজের বীজের পেঁয়াজ হয় এক কন্দবিশিষ্ট, এক মাপের ও চাতালে টেকে বেশি দিন। তাই চাষিরা ঝুঁকেছেন তাঁর বীজের দিকে। গত বছর হাফিজ উদ্দিনের উৎপাদিত পেঁয়াজবীজের পরিমাণ ছিল ২৯ মেট্রিক টন। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ৪০ মেট্রিক টন। তাঁর জীবনের ৩২ বছরের লড়াই তাঁকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। পেঁয়াজবীজ উৎপাদনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা এই কৃষকের বাড়ি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মেলান্দি গ্রামে।

হাফিজ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে তাঁর উৎপাদিত পেঁয়াজ ও বীজ দেখছেন স্বশিক্ষিত কৃষি বিজ্ঞানী নুর মোহাম্মদ ও বীজ প্রত্যায়ন এজেন্সির কর্মকর্তারা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষমতার প্রথম ১০০ দিনে ট্রাম্পের যত আলোচিত উক্তি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে ফেরার প্রথম ১০০ দিনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবারও প্রমাণ করেছেন, প্রচণ্ড ধাক্কা দেওয়ার পাশাপাশি মানুষকে আমোদিত করার তাঁর বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। তিনি যা বলেন, তাতে কখনোই কোনো কিছুর ঘাটতি রাখেন না।

নিজের প্রশংসা থেকে শুরু করে মিত্রদেশগুলোকে অপমান করা—হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে ট্রাম্পের কিছু আলোচিত কথা নিচে তুলে ধরা হলো:

ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমেরিকাকে আবার মহান করার জন্য ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়েছেন।’

ক্ষমতায় ফেরার প্রথম দিনেই ট্রাম্প নিজেকে একজন ‘মেসিহ’ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। তিনি আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে বলেছিলেন—গত বছর পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী সভায় তিনি কীভাবে হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টর দিকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া এক স্বৈরশাসক।’

ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই অভাবিত মন্তব্যটি যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। জেলেনস্কি অভিযোগ করেছিলেন, রুশদের ‘ভুয়া তথ্যের’ শিকার হয়েছেন ট্রাম্প।

পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেব্রুয়ারিতে তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এই মন্তব্য থেকে সরে আসেন এবং এক সাংবাদিককে উল্টো প্রশ্ন করে বসেন, ‘আমি কি এটা বলেছিলাম?’

আবার ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘এসব দেশ আমাদের ফোন করছে, আমাকে তেল দিচ্ছে।’

চলতি এপ্রিলে রিপাবলিকানদের এক সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের নিয়ে এই কটাক্ষমূলক মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। বিভিন্ন দেশের ওপর তাঁর পাল্টা শুল্ক আরোপের ব্যাপারে যখন বিশ্বনেতারা তাঁকে শান্ত করার জন্য যোগাযোগ করছিলেন, তখন তিনি এই মন্তব্য করেন। পরে ট্রাম্পে এই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন।

গাজাকে মালিকানা নিজেদের করে নেওয়ার পরিকল্পনা জানাতে গিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের দর্শনীয় উপকূলীয় অবকাযাপনকেন্দ্র’।

ইসরায়েলি নৃশংস ও নির্বিচার হামলায় গাজার বিধ্বস্ত অঞ্চলে একটি বিলাসবহুল অবকাশযাপনকেন্দ্র বানানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করার সময় ট্রাম্পের এমন বক্তব্য সবাইকে চমকে দেয়। এটি তিনি ফেব্রুয়ারিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন।

শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, প্রতিবেশি কানাডাকে নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘কানাডাকে আমাদের লালিত–পালিত ৫১তম রাজ্য হওয়া উচিত।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া পোস্টে এই মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর এই মন্তব্যে কানাডায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। অনেকেই আশঙ্কা করেন, এটি যেন মার্কিন দখলদারত্বের চেষ্টার কোনো ইঙ্গিত না হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও ছেড়ে কথা বলেননি ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে রাখার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন তৈরি হয়েছে।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প তাঁর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে এই বক্তব্য দেন। এর মাধ্যমে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক দশকের ইতিবাচক সম্পর্ককে সম্পূর্ণ উল্টে দেন এবং একধরনের বাণিজ্যযুদ্ধের ইঙ্গিত দেন।

দেশের বিচার বিভাগকে আক্রমণ করতেও পিছু হটেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘এই বিচারক, আর পাঁচজন দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারকের মতোই। যাঁদের সামনে আমাকে হাজির হতে হয়, তাঁকে অভিশংসন করা উচিত।’

মামলায় অভিযুক্ত এমনকি আর্থিকভাবে দণ্ডিত প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত মার্চে তিনি ‘ট্রুথ সোশ্যাল’–এ এক পোস্টে বিচারক জেমস বোয়াসবার্গকে আক্রমণ করে এই মন্তব্য করেন। পরে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ট্রাম্পের এই মন্তব্যের নিন্দা জানান, যা অনেকটা বিরল।

বোয়াসবার্গ ছিলেন সেসব বিচারকের একজন, যাঁরা অভিবাসী বহিষ্কারের বিষয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী ক্ষমতার সীমা টেনেছেন, প্রশাসনের কাজের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ