এবার ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে কেমন ভিড় হবে, বেড়াতে যাচ্ছেন কতজন
Published: 28th, March 2025 GMT
এবার ঈদুল ফিতরের ৯ দিনের লম্বা ছুটি কাজে লাগিয়ে অনেকেই বেড়াতে বেরিয়ে পড়বেন। দেশের ভ্রমণপ্রিয় মানুষের সবচেয়ে পছন্দের স্থান কক্সবাজার। তাই এবার এই সৈকত শহরে আগের বছরের চেয়েও বেশি ভিড় হবে বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ী ও হোটেল–মোটেলের মালিকেরা।
হোটেল–মোটেল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে ৯ লাখ ৭০ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেছিলেন কক্সবাজারে। এবারের ঈদের ছুটির দ্বিতীয় দিন থেকে হোটেল–মোটেলগুলো বুকিং হয়েছে। ঈদের ছুটি ৫ এপ্রিল পর্যন্ত হলেও ১২ এপ্রিল পর্যন্ত টানা কক্ষ বুকিং রয়েছে বেশির ভাগ হোটেলে। ইতিমধ্যে শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল গেস্টহাউস, রিসোর্ট ও কটেজে ৫৫ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। অবশিষ্ট কক্ষগুলোও ৩১ মার্চের আগে বুকিং হয়ে যাবে। পাঁচ শতাধিক হোটেলের দৈনিক ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৮৭ হাজার।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের ছুটির ৯ দিনে ৭-৮ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আগামী ১২ এপ্রিল শনিবার পর্যন্ত আরও ৩ দিনে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটতে পারে। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি হোটেল–মোটল, রেস্তোরাঁ এবং যানবাহনে যাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় না করা হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে প্রশাসনকে।
রেস্তোরাঁর খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম সক্রিয় রাখার দাবি জানিয়েছেন কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল–রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পবিত্র রমজান মাসে পর্যটক টানতে হোটেলমালিকেরা কক্ষভাড়ার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যটক ছাড় দিয়েছেন। ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই সুবিধা বলবৎ থাকবে। তবে ১ এপ্রিল থেকে বিশেষ ছাড় তুলে নেওয়া হচ্ছে। হোটেলমালিকেরা ছাড় দিলেও সুযোগ বুঝে রেস্তোরাঁগুলো খাবারের দাম বাড়িয়ে দেয়। এ ব্যাপারে নজরদারি প্রয়োজন।
কত ব্যবসা হবে এবার
হোটেল–মোটেলমালিকেরা ধারণা করছেন, এবার ঈদের ছুটিতে অন্তত ১২ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটতে পারে কক্সবাজারে। কক্সবাজার চেম্বারের দেওয়া তথ্যমতে, ঈদের ছুটিতে হোটেল-রেস্তোরাঁ, পর্যটন–সংশ্লিষ্ট ১৩টি খাতে অন্তত ৯০০ কোটি টাকার ব্যবসা হতে পারে।
সৈকতের কলাতলী হোটেল মোটেল জোন ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটক বরণে প্রস্তুতি নিচ্ছেন হোটেলমালিকেরা। ইতিমধ্যে অসংখ্য হোটেল-রেস্তোরাঁর সংস্কারকাজ সম্পন্ন করা হয়। বেশ কিছু হোটেলে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসানোর কাজ চলছে।
কলাতলীর সৈকতে সাততলা রেইন ভিউ রিসোর্টে কক্ষ আছে ৫১টি। রিসোর্টের কর্মচারীরা জানান, আগামী ১ এপ্রিল থেকে টানা ৫ দিনের জন্য ৬০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। অবশিষ্ট কক্ষগুলোও কয়েক দিনের মধ্যে বুকিং হয়ে যেতে পারে।
কলাতলী লাইটহাউস সড়কের ১০ তলা ওয়েল পার্ক হোটেলে কক্ষ আছে ৭৩টি। ৯০ শতাংশ কক্ষ এখন খালি পড়ে থাকলেও ১ এপ্রিল থেকে ৬০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে জানিয়ে হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটকের উপচে পড়া ভিড় থাকবে।
সৈকতে ছাতার নিচে কিটকট চেয়ারে বসে সমুদ্র দেখতে ভালোবাসেন পর্যটকেরা। গতকাল দুপুরে কক্সবাজার সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ আমার সেকেন্ড হোম, বাটার চিকেন সুস্বাদু: মাসাকাদজা
দুই বছর পর টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন দারুণভাবে রাঙিয়েছেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪ মেডেনে ২১ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন। মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হকের উইকেটের পর তার পকেটে ঢুকেছে তাইজুলের উইকেট। জানিয়ে রাখা ভালো, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও সিঙ্গি মাসাকাদজার ছোট ভাই ওয়েলিংটন মাসাকাদজা।
২০১৮ সালে সিলেটে টেস্ট ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে পা রেখেছিলেন মাসাকাদজা। যদিও এরপর খুব বেশি টেস্ট খেলা হয়নি তার। ২০২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্ট। দুই বছর বাইরে থাকার পর আবার সিলেটেই তার ফিরে আসা। ৩১ বছর বয়সী এই স্পিনার অনুভব করেন, বাংলাদেশ তার সেকেন্ড হোম। ফিরে এসে আনন্দ পান। পছন্দ করেন বাংলাদেশের খাবারও।
সোমবার টেস্টের দ্বিতীয় দিনের সকালে ব্রডকাস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাসাকাদজা বলেছেন, ‘‘নিশ্চিতভাবেই (বাংলাদেশে ফিরে ভালো লাগে) । আমি অনুভব করি এটা আমার সেকেন্ড হোম। বিশেষ করে স্পিনার হিসেবে এখানকার কন্ডিশন বেশ মানানসই। তারা সুবিধা পেয়ে থাকে। এখানের বাটার চিকেনও সুস্বাদু।’’
‘‘হ্যাঁ, নিশ্চিতভাবেই এটা দারুণ কিছু (বাংলাদেশে ফেরা) । আমার টেস্ট অভিষেক এখানে হয়েছিল। যেই প্রান্ত থেকে বোলিং শুরু করেছিলাম সেখান থেকেই গতকাল করেছিলাম। কয়েক বছর টেস্ট ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। এখন ফিরে এসে ভালো কিছু করেছি যা ভালো লাগছে।’’ – যোগ করেন মাসাকাদজা।
মুশফিকুর ও মুমিনুলকে ফেরাতে দুর্দান্ত কোনো ডেলিভারী করতে হয়নি মাসাকাদজাকে। মুশফিক লেন্থ বল উড়াতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন। মুমিনুল ফিফটি ছোঁয়ার পর হাওয়ায় ভাসানো বল স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিড উইকেটেই ক্যাচ দেন। এছাড়া তাইজুল বল পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
উইকেটের সহায়তা পেয়ে ভালো করায় উচ্ছ্বসিত মাসাকাদজা, ‘‘আমরা এই উইকেটে সঠিক লাইনে বলটা করতে চেয়েছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম এখানে সিমারদের জন্য কিছু সাহায্য থাকবে। সেরকমই হয়েছে। সেই সাথে আমরা স্পিনাররা কিছু উইকেট পেয়েছি যা নিশ্চিতভাবেই দারুণ সংকেত।’’
সিলেট/ইয়াসিন