গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার পরিকল্পনা দেশটি গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে বলে মনে করছে রাশিয়া। মস্কোর আশঙ্কা, ভবিষ্যতে বিভিন্ন সংঘাতের সময় আর্কটিক অঞ্চলকে পশ্চিমারা ব্যবহার করতে পারে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসব কথা বলেছেন।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর ডেনমার্কের স্বশাসিত দ্বীপটির দখল নিতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ভাষ্য, ‘আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার’ জন্য এই দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া প্রয়োজন ওয়াশিংটনের।

রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর মুরমানস্কে আর্কটিক ফোরামে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘(গ্রিনল্যান্ড দখলের বিষয়ে) আমেরিকার নতুন প্রশাসনের বক্তব্যকে ফাঁকা বুলি মনে করা হবে বড় ধরনের ভুল। এটা ওই ধরনের কথা নয়।’

পুতিন আরও বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডের বিষয়ে আমেরিকার গুরুত্বসহকারে নেওয়া পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কথা বলছি। এসব পরিকল্পনার দীর্ঘ দিনের ঐতিহাসিক যোগসূত্রতা রয়েছে।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, যদিও গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা প্রশ্নে রাশিয়া সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, মস্কোর উদ্বেগের বিষয় হলো ন্যাটো জোটের দেশগুলো সম্ভাব্য সংঘাতের ক্ষেত্রে পৃথিবীর একেবারে উত্তরের অংশকে ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে ক্রমশ এগোচ্ছে।

ডেনমার্কের কাছ থেকে স্বাধীনতা চাইছে গ্রিনল্যান্ড। স্বশাসিত দ্বীপটিতে আগে থেকেই মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অব্যাহত হুমকির মধ্যেই শুক্রবার দেশটি সফর করার কথা ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের। তাঁর এই সফরের সমালোচনা করে আসছেন গ্রিনল্যান্ডের নেতারা।

আরও পড়ুনগ্রিনল্যান্ড দখলে নিতে ট্রাম্প কেন এত মরিয়া২৫ মার্চ ২০২৫

উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের মাঝামাঝি কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে গ্রিনল্যান্ড। আর্কটিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া নিজেদের স্বার্থ নিয়ে তৎপর হচ্ছে, যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সেখানকার সমুদ্রপথগুলোও উন্মুক্ত হচ্ছে।

গ্রিনল্যান্ড দখল নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছে ডেনমার্ক। দেশটি বলেছে, গ্রিনল্যান্ডের মানুষ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান না।

আরও পড়ুনট্রাম্প প্রথম নন, ৭৯ বছর আগেও গ্রিনল্যান্ড কিনতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র২৭ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মা সেতুতে সর্বমোট টোল আদায় ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা 

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত উভয় প্রান্তের টোল প্লাজায় সর্বমোট টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ৪৫৯ টাকা। আর ঈদযাত্রার পাঁচ দিনে শনিবার পর্যন্ত পদ্মা সেতু হয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময়ে ১৭ কোটি ৪২ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।

সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শেষ মুহূর্তের ঈদযাত্রায় পদ্মা সেতু অতিক্রম করে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার লাখ লাখ মানুষ। তবে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ নেই। কখনও কখনও একেবারেই ফাঁকা থাকছে টোল প্লাজা। 

শনিবার পদ্মা সেতু দিয়ে ৩৬ হাজার ৯২৪ যান পারাপার হয়। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ছিল ৮ হাজার ৭৫০টি। টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৭ লাখ ৯২ হাজার ২০০ টাকা।

এছাড়া শনিবার পর্যন্ত ঈদযাত্রার পাঁচ দিনে পদ্মা সেতু হয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময়ে টোল আদায় হয়েছে ১৭ কোটি ৪২ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা।

সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক আলতাফ হোসেন আরও জানান, লম্বা ছুটির কারণে এবার ঈদযাত্রায় চাপ অপেক্ষাকৃত কম। রোববার ভোরেও টোল প্লাজা ঘিরে যানবাহনের লম্বা লাইন ছিল। কিন্তু বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে থাকে।

টোল আদায়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, রাত পোহালেই ঈদ, কর্মজীবী ও ব্যবসায়ী অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। তাই রোববারও অস্থায়ী টোল বুথটি চালু রাখা হয়। এখন ৯টি লেনে টোল আদায় করা হচ্ছে। তবে অনেকেই গরম এবং যানজট এড়াতে সেহেরির পরপরই বেরিয়ে পড়েন। তাই সকালে কিছুটা চাপ থাকলেও বেলা গড়ানোর পর চাপ কমতে থাকে।

একই চিত্র দেখা গেছে জেলার অপর মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রামের পথেও। রোববার সকাল থেকে এ মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ১৩ কিলোমিটারে ছিল না কোনো যানজট।

সম্পর্কিত নিবন্ধ