দেশে নদনদীর সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক চলছে বছরের পর বছর। নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের গণনার সঙ্গে মেলে না নদী কমিশনের হিসাব, আবার এ দুই সংস্থার সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সংখ্যার অঙ্কেও ছিল গরমিল। অবশেষে নদনদীর তালিকা তৈরিতে সব সংস্থা একজোট হয়। তাদের সবার সমন্বয়ে তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

সরেজমিন পরিদর্শন, ভূমি জরিপ ও নদী গবেষকসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে সরকার বলছে, দেশে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৯৪টি নদনদী খুঁজে পাওয়া গেছে। এই নদনদীর একটি তালিকা গতকাল বৃহস্পতিবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পাউবো, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ও সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। অবশ্য সংস্থাগুলো বলছে, এটি খসড়া তালিকা। এটি নিয়ে কারও কোনো মতামত বা আপত্তি থাকলে আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
এবারের তালিকায় নতুনত্বের মধ্যে রয়েছে– সব সংস্থা একমত, মৃত নদীর নামও এসেছে, বাদ পড়েনি ছোট নদী, নদীর স্থানীয় নামও রাখা হয়েছে, জনগণের মতামত নেওয়া হচ্ছে। ফলে নদীকে মৃত বা বদ্ধ জলাশয় বলে ইজারা দেওয়ার সুযোগ আর থাকছে না।

এর আগে সর্বশেষ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে পরিবেশবিদ ও গবেষকদের আপত্তির মুখে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নদনদীর খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছিল। ওই তালিকায় নদনদীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮টি। তবে সেটি ভুলে ভরা। অনেক নদীর উৎসমুখ, উৎপত্তিস্থল, গতিপথ, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতা উল্লেখ ছিল না। একই নদীর নাম এসেছে বারবার। তবুও পরিবেশবিদ ও গবেষকদের আপত্তির মুখে সেই তালিকা চূড়ান্ত করে কমিশন।

অবশেষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নদনদীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণের উদ্যোগ নেন। গত সেপ্টেম্বর থেকে উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে নদীর খসড়া তালিকা তৈরিতে কাজ করে পাউবো, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ, নদী রক্ষা কমিশন, পানি বিশেষজ্ঞ ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়। যৌথভাবে তালিকা তৈরি করে জনমত ও আপত্তির সুযোগ দেওয়ার জন্য গতকাল তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। 
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এ যাবৎকালে যত তালিকা হয়েছে, সবগুলোকে ধরে প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি নদী কর্মীদের সম্পৃক্ত করে তালিকাটি করা হয়েছে। মৃত নদী বলে আসলে কিছু নেই। নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করলেও পুরোনো গতিপথটি নদী হিসেবেই রেকর্ড থাকে। 
তিনি বলেন, এই তালিকা ধরে দেশব্যাপী একটি মহাপরিকল্পনা হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নদীকে খাল বলা হচ্ছে, কখনও মৃত নদী বলা হচ্ছে– সেটা যেন আর না হয়। এই তালিকা ধরেই সরকার নদী রক্ষায় সব কিছু করবে। ফলে ছোট নদীও আর গুরুত্ব হারাবে না। এ তালিকার ফলে নদীর সংখ্যা ও নাম নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটবে বলে জানান উপদেষ্টা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নদ উপদ ষ ট নদনদ র নদ র স আপত ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এক বছর আগে সুইমিংপুলে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর তদন্ত দাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে শিক্ষার্থী সোয়াদ হকের মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। গত বছরের ২২ এপ্রিল সোয়াদ হক মারা গিয়েছিলেন।

সোয়াদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়ার আয়োজন করা হয়। এরপর তাঁর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিতের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেয় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। সোয়াদ হক বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ৫টি দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হলো সোহাদের মৃত্যুর যথাযথ কারণ তদন্তপূর্বক নির্ণয় করা। সুইমিংপুলের সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করে তা পুনরায় চালু করা। সাঁতারসহ শরীরচর্চার বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আরও আন্তরিক হওয়া।

সুইমিংপুল এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা এবং পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করা ও প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া।

দোয়া মাহফিলে দর্শন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  

আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি২৩ এপ্রিল ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ