দক্ষিণ কোরিয়ার দাবানল কেন এত ভয়াবহ রূপ নিল
Published: 27th, March 2025 GMT
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে জ্বলছে দক্ষিণ কোরিয়া। আগুনে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ৮৮ হাজার ৫০০ একর এলাকা পুড়ে গেছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের আয়তনের প্রায় অর্ধেক। দাবানলে এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এলাকা ছেড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবসৃষ্ট কোনো দুর্ঘটনা থেকে এই দাবানলের সূত্রপাত হয়েছে। তবে বিস্তর এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো ঝোড়ো বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়া। এ ছাড়া দেশটির উত্তর গিয়েওংসাং প্রদেশে পাইনগাছের ঘন জঙ্গল আগুন ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে সহায়তা করেছে।
গত সপ্তাহজুড়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যে দ্রুততা ও তীব্রতার সঙ্গে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে বড় ভূমিকা রেখেছে পাইনগাছের চিরহরিৎ বৈশিষ্ট্য।দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট সায়েন্সের বিশেষজ্ঞ লি বিয়ুং-ডো বলেন, পাইনগাছে রেসিন নামে এক ধরনের উপাদান থাকে। রেসিন জ্বালানি তেলের মতো কাজ করে। এটি আগুনকে আরও তীব্র করে তোলে। এর কারণে দাবানল আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, শক্তিশালী রূপ নেয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে জ্বলতে থাকে।
দাবানল সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে আনডং শহরে। সেখানে পাইনের জঙ্গল রয়েছে। জঙ্গলগুলো স্থানীয় বন্য প্রাণীর জন্য আশ্রয় হিসেবে কাজ করে, সেগুলোর খাবার জোগায়। কখনো কখনো বাতাসের গতি কমাতেও সহায়তা করে এই জঙ্গল। তবে দাবানলের সময় সেগুলো সমস্যা হয়েছে ওঠে বলে জানান লি বিয়ুং–ডো।
দক্ষিণ কোরিয়ার উইসেওং এলাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়া বাড়ির পাশি দাঁড়িয়ে আছেন ৭২ বছর বয়সী কুন ইয়েওং–নাম। এই বাড়িতে ৫২ বছর ধরে বসবাস করেছেন তিনি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু অবহেলাজনিত খুন
কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এক শিশুকে খুঁজতেন-
……কিন্তু সেই শিশুটিকে আমি
ভিড়ের ভিতরে আজ কোথাও দেখছি না।
শিশুটি কোথায় গেল? কেউ কি কোথাও তাকে কোনো
পাহাড়ের গোপন গুহায়
লুকিয়ে রেখেছে?
নাকি সে পাথর-ঘাস-মাটি নিয়ে খেলতে খেলতে
ঘুমিয়ে পড়েছে
কোনো দূর
নির্জন নদীর ধারে, কিংবা কোনো প্রান্তরের গাছের ছায়ায়?
যাও, তাকে যেমন করেই হোক
খুঁজে আনো। …
কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী যতই গলা ফাটান না কেন, অনেক শিশুকেই আমরা আর খুঁজেই পাব না। বাংলা নববর্ষের দিন (১৪ এপ্রিল) দুপুরে ভোলার লালমোহন উপজেলার ফুলবাগিচা গ্রামের রাকিবের ছয় বছরের ছেলে জোনায়েত এবং আনিচল হক মিয়ার আট বছরের ছেলে শহিদুল তাদের নানাবাড়িতে ছিল। তারা দুপুরে পুকুরে গোসল করতে গেলে ডুবে যায়। লোকজন তাদের দেহ পুকুরে ভাসতে দেখেন। উদ্ধার করে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুদের নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জরুরি বিভাগের কথা, হাসপাতালে আনার আগেই শিশু দুটির মৃত্যু হয়েছিল।
থানার ওসি জানান মারা যাওয়া শিশু দুটির পরিবার এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। তাই মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি দর্শন আওড়াতে ভুল করেননি, বলেছেন, অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। লম্বা ছুটিতে নানাবাড়ি, দাদাবাড়ি, আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আকছার পানিতে ডুবে শিশু মারা যাচ্ছে। গবেষণা আর পরিসংখ্যান বলছে, সারা বছর যত শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়, তার ৩৫ শতাংশ ভাগ শিশু মারা যায় বিভিন্ন লম্বা ছুটিতে আত্মীয়স্বজনের বাসায় বেড়াতে গিয়ে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পানিতে ডোবা শিশুদের একটা হিসাব প্রকাশ করেছে ফাউন্ডেশন ফর ডিজাস্টার ফোরাম। ফোরামের হিসাব অনুযায়ী, এবার ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন গড়ে চারজন শিশু ডুবে মারা গেছে।
গত ২৬ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে, অর্থাৎ ১২ দিনে মোট ৪৯ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। সেই হিসাবে, গড়ে প্রতিদিনই চারজন পানিতে ডুবে মারা গিয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের ৪৭ জনই ছিল শিশু (ছেলেশিশু ৩০ ও মেয়েশিশু ১৭ জন)। এককভাবে ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, মোট ৩৭ জন (১৫ জনের বয়স হবে মাত্র চার বছরের মধ্যে)। বেশির ভাগই মারা গেছে বাড়ির কাছের পুকুরে (২৫ জন) আর আশপাশের নদীতে (১৩ জন)।
ছোট শিশুরা দল বেঁধে ছুটির দিনে খেলাধুলা–চলাফেরা করে, তাই অনেক সময় একে অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে পানিতে ডুবে উভয়েই বা তিন–চারজন একসঙ্গে মারা যায়। এবারও এ রকম কমপক্ষে চারটি ঘটনার কথা জানা গেছে। সেই চারটি ঘটনায় মোট ৯ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে।
২০২৪ সালে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা পবিত্র ঈদুল ফিতরে ৫৮ জন ও ঈদুল আজহায় ৬৫ জন। সেই বছর এককভাবে ছেলেশিশুর মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি ছিল (দুই ঈদে মোট ৭৮ জন)।
বলা বাহুল্য, সংবাদমাধ্যমের একবেলার খবর ছাড়া এসব মৃত্যুর কোনো রেকর্ড কোথাও রাখা হয় না। হাসপাতাল বলে দেয়, আনার আগেই মারা গেছে। অতএব নামধাম, কারণ খাতায় তোলার কোনো ল্যাটা নাই। শিশুদের দল নেই ভোট নেই, তাই তাদের পক্ষে কেউ খাড়ায় না। জবাবদিহির কোনো বালাই নেই। ইউনিয়ন পরিষদ/পৌর করপোরেশন/সভা শিশুদের জন্মনিবন্ধন করলেও মৃত্যুনিবন্ধন হয়ে ওঠে না।
শ্মশান, গোরস্তানে একটা হিসাব থাকে, কিন্তু পারিবারিক গোরস্তান বা বাড়ির আঙ্গিনায় যেসব শিশুর দাফন বা শেষকৃত্য হয়, তার হিসাব কোথাও নেই। অভিভাবকেরা আবেগে আপ্লুত হয়ে নিহত শিশুর ময়নাতদন্ত করতে দেন না, তাই আমরা জানতে পারি না মৃত্যুর প্রকৃত কারণ। হতে পারে শিশুটি সাঁতার জানত, কিন্তু তার মৃগী বা হঠাৎ ফিট লাগার ধাত ছিল।
কেউ তাকে গোসল করানোর অছিলায় পানিতে নাকানিচুবানি খাইয়েও মারতে পারে। তদন্ত হয় না, কারণ, ওই যে লালমোহন থানার ওসি বলেছেন, ‘মারা যাওয়া শিশু দুটির পরিবার এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি।’ তাই মামলা হয়নি। পরিবারের অবহেলায় যে শিশু মারা গেছে, সেখানে পরিবার কোন মুখে কার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেবে? এক অর্থে তারাই তো আসামি।
তবে ডুবে যাওয়া মানুষটি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হন, তাহলে সহজে কেউ পার পান না। লালমোহনে যেদিন জোনায়েত আর শহিদুল ডুবে মরা যায়, সেই একই দিনে পুকুরে ডুবে মারা যান পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থী হোসাইন মোহাম্মদ আসিক। আসিক বন্ধুদের সঙ্গে দুমকি জনতা কলেজ পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে যান। এ সময় তাঁর বন্ধুরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
সন্ধ্যার কিছু আগে আসিককে মৃত ঘোষণা করা হয়। শিশু হলে এখানে গল্পের শেষ হতো। তা হয়নি। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে শুরু হয় বিক্ষোভ।
আসিকের সহপাঠীদের অভিযোগ, হাসপাতালে নিয়ে এলেও ইমার্জেন্সি ও আইসিইউতে কোনো ডাক্তার ছিল না। ৪০ মিনিট পরে চিকিৎসা শুরু হলেও সন্ধ্যার কিছু আগে আসিককে মৃত ঘোষণা করা হয়। আসিককে মৃত ঘোষণার আগেই ছাত্রদের বিক্ষোভ এমন তাণ্ডবে রূপ নেয় (আইসিউর কাচ ভাঙা, ইন্টার্ন ডাক্তারদের থ্রেট দেওয়া, পালস-অক্সিমিটার ভাঙা ইত্যাদি) যে ছুটে আসতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ পটুয়াখালীর পুরা প্রশাসনকে। একে একে যোগ দেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা। সেনাবাহিনী না আসা পর্যন্ত মৃত ঘোষণা করার সাহস পাচ্ছিল না কর্তৃপক্ষ।
শিশুদের পক্ষে এমন মারদাঙ্গা জবাব চাওয়া ভিড় বা মবের দরকার নেই, তবে ন্যূনতম প্রশ্ন করার সুযোগ থাকা উচিত। থাকা উচিত পানি থেকে উদ্ধার করা শিশুদের বয়সভিত্তিক চিকিৎসা প্রটোকল এবং মারা গেলে অবশ্যই ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা রাখা। যেকোনো অপমৃত্যুর কিনারা করতে গেলে ময়নাতদন্ত একটি আবশ্যিক আনুষ্ঠানিকতা। ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ বা সাবধানতা গ্রহণের ক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত অনেক সূত্র বা সুলুক দিতে পারে।
ময়নাতদন্ত নিয়ে আমাদের একটা ফালতু আবেগ আছে, সেটা যে আখেরে কোনো ইতিবাচক ফল দেয় না, সেটা আমাদের বুঝতে হবে। বলে রাখা ভালো, আসিকের ‘বন্ধুরাও’ ময়নাতদন্ত করতে দেননি।
ময়নাতদন্ত করতে দিলে জানা যেত, কেন তাঁর রক্তবমি হয়েছিল। কোনো ভুল প্রক্রিয়ায় তাঁকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছিল কি না। যেমন অনেকে না জেনে বা ভুল জেনে আক্রান্ত ব্যক্তিকে পানি থেকে তুলে উল্টো করে শুইয়ে পেটে চাপ দিয়ে পানি বের করার চেষ্টা করে। এটা মোটেও ঠিক নয়। এতে ওই ব্যক্তি বমি করে ফেলতে পারে, যা আবার ফুসফুসে প্রবেশ করে পরবর্তী সময়ে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
ডুবে যাওয়া শিশুকে পানি থেকে তুলে মাথার ওপর ঘোরানো হয়, এটাও একটা বিপজ্জনক প্রক্রিয়া। অনেকেই অবিরাম তেল মালিশ করতে থাকে। তেল মালিশের কারণে ভেসোডাইলেটেশন আরও বেড়ে গিয়ে রোগী শকে চলে যেতে পারে, ভেইন কলাপ্স করতে পারে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পানিতে ডুবে মৃত্যু কোনো নতুন ঘটনা নয়। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষেত্রে তারা যে একেবারেই অপ্রস্তুত, তাতে কোনো ভুল নেই।
কী করা যায়পরিবার চাক বা না–ই চাক, প্রতিটি ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে গাফিলতির জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের আলামত পাওয়া গেলে তাঁকে আইনের আওতায় আনতে হবে। লালমোহনের ওসির মতো শুধু সচেতনতা বাড়ানোর নসিহত যথেষ্ট নয়। প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং এর ফলাফল নিকটস্থ মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা, বিশেষ করে পানি থেকে উদ্ধার আর তার প্রাথমিক শুশ্রূষার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। ছুটির আনন্দকে আরও উপভোগ্য করার স্বার্থে শিশু, বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিশেষ নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। বাড়ির বড়দের এটা নিশ্চিত করতে হবে। গবেষণা বলছে, মা বা তত্ত্বাবধায়কের ১০০ গজ দূরত্বের মধ্যেই শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় বা দুর্ঘটনার শিকার হয়। বেশির ভাগ ঘটনা ঘটছে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে, অর্থাৎ মায়েরা যখন ঘরকন্নার কাজে ব্যস্ত থাকছেন। শুধু এই সময়ে নজরদারি বাড়ালে অনেক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
যেসব শিশুর সামান্যতম খিঁচুনির ঝোঁক আছে, তাদের কোনোভাবেই উপযুক্ত পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির তত্ত্বাবধান ছাড়া পানি, আগুন (বাজি পোড়ান), গাছে চড়া ইত্যাদিতে কাজ করতে দেওয়া যাবে না। যেসব শিশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাচ্ছে, তাদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার সময় ওষুধ সঙ্গে রাখতে হবে।
শিশুমৃত্যু শুধু টিকা, ওষুধ আর হাসপাতাল চিকিৎসক দিয়ে যে কমানো যাবে না, সেটা আমরা কবে বুঝব? শিশু সংবেদনশীলতাই কেবল শিশুদের অকাল আর প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ঠেকাতে পারবে। শিশু হারাবে না অথই জলে। খুঁজতে হবে না সেই শিশুটিকে যে সাহসের সঙ্গে প্রশ্ন করবে—‘রাজা তোর কাপড় কোথায়?’
গওহার নঈম ওয়ারা লেখক ও গবেষক
[email protected]