গায়ে মোটা প্যাডিং-জ্যাকেট পরে চোখ ধাঁধানো রোদে ইউরোপের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী দানিয়ুবের পারে দাঁড়িয়ে আছি। শীতকাল পুরোপুরি শুরু হয়নি এখনও। তবু বেশ শীত করছে। দানিয়ুবের বুক ছুঁয়ে আসা বাতাস কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে। নদীর বুকে আধুনিক ও পুরাতন চেহারার অনেক ক্রুজ। পর্যটকরা প্রমোদ ভ্রমণে। দিনের চেয়ে রাতের ক্রুজ বেশি জনপ্রিয়।
নদীর যে পারে আমি দাঁড়িয়ে আছি, তা পুরোটাই সমতল; নাম পেস্ট। ওপারের পাহাড়ি এলাকা– বুদা। ১৮৭৩ সালে এই দুটো শহরকে একটি শহরে রূপান্তর করা হয়, নাম হয় বুদাপেস্ট। আমার সামনে বিখ্যাত চেইন সেতু। বুদাপেস্টে এলে কেউ এই সেতুর সঙ্গে ছবি তোলা মিস করে না। হিন্দি সিনেমায় অনেকেই হয়তো এই সেতু দেখেছেন। ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ সিনেমার একটি দৃশ্যে নায়িকাকে এই সেতুর ওপর দিয়ে দৌড়ে নায়কের দিকে আসতে দেখা যায়। এই সেতু বুদা ও পেস্টকে সংযুক্ত করেছে। এ রকম মোট ১৩টি সেতু আছে দানিয়ুবের ওপর।
বুদাপেস্টের পর্যটনে এ নদীর বিরাট ভূমিকা। দিনরাত এ নদীকে ঘিরে থাকে নানান বিনোদনের ব্যবস্থা। তবে একটা বড় দুঃখগাথাও রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হাজার হাজার ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ জীবন বাঁচাতে এই নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল কিংবা জার্মান বাহিনী তাদের ঝাঁপ দিতে বাধ্য করেছিল। যাদের উল্লেখযোগ্য অংশ বেঁচে তীরে পৌঁছতে পারেনি। সেই স্মৃতি রক্ষার্থে পার্লামেন্ট হাউসের কাছে দানিয়ুবের পারে অগণিত পাদুকা জড়ো করে একটা স্মৃতিস্থান বানিয়ে রাখা।
ইউরোপের সর্ববৃহৎ সিনাগগ আছে এ শহরে। সিনাগগ ইহুদি উপাসনালয়। সিনাগগের দেয়ালে পিলারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অত্যাচারের অনেক ছবি, সঙ্গে মর্মান্তিক বর্ণনা। ঘুম থেকে উঠে হোটেল থেকে বেরিয়ে প্রথমে ন্যাশনাল গ্যালারি ঘুরেছিলাম। এরপর গিয়েছিলাম সিনাগগে। তারপর আইকনিক হলুদ ট্রামে চড়ে সোজা ফোভাম স্কয়ারে চলে আসা।
দানিয়ুবের নীল জলে সূর্যের আলোর প্রতিফলন দেখছিলাম। মাঝে মাঝে শ্বেতশুভ্র ক্রুজগুলোর আসা-যাওয়া ছন্দপতন ঘটাচ্ছে। নদীর পারে বেশ খানিকক্ষণ সময় কাটানোর পর, সেতুর দিকে পা বাড়াই। সেতুর অন্যদিকে পাহাড়ের ওপর ইউরোপের অন্যতম সুন্দর দুর্গ– বুদা ক্যাসেল। এটি ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের একটি।
বুদা ক্যাসেল
কাউন্টারে টিকিট কেটে কাঠের ক্যারিজে চড়ে বুদা ক্যাসেলে উঠলাম। ক্যারিজ থেকে নেমেই হাতের ডানে সান্দর প্যালেস। বামে ক্যাসেল কমপ্লেক্স। একজন জানাল, রাজরাজড়ার কাল গত হওয়ার পর প্যালেসটি ২০০৩ সাল পর্যন্ত হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ফটকে আধুনিক অস্ত্রহাতে প্রহরীকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ছবি তুলে রাখলাম। বুদা ক্যাসেল প্রথমে ১২৯০-এর দশকে নির্মাণ করা হলেও পরে কয়েকবার পুনর্নির্মিত ও সম্প্রসারিত হয়েছে। অটোম্যান সাম্রাজ্যের আগ্রাসনে ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বুদা ক্যাসেল বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর বড়সড় পুনর্নির্মাণ কাজ করা হয়েছিল।
সময় নিয়ে ভালো করে ক্যাসেল কমপ্লেক্সটা ঘুরলাম। শত শত বছরের এই দুর্গ দেখলে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত ক্যাসেল থেকে পেস্ট শহর ভালো দেখা যায়। পাখির চোখে শহরটা ভালো করে দেখার পর সিঁড়ি ভেঙে নিচে নেমে এলাম। ক্যাসেলের পাশেই আরেকটি জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট ফিশারম্যান ব্যাস্টন। এটিও ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। সেখানে গেলে অনেকটা সময় লাগবে বিধায় সেখানটায় না গিয়ে আমি গেলাম পার্লামেন্ট হাউসের দিকে। নিউ গথিক স্টাইলে নির্মিত শতবর্ষী এই আকর্ষণীয় ভবন ইউরোপের বৃহত্তম ইমারত এবং বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পার্লামেন্ট ভবন।
সময় নিয়ে ঘুরে দেখছিলাম, হঠাৎ শ্বেতাঙ্গ এক তরুণী জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি একাই ঘুরছ? আমি হ্যাঁ বলাতে, সে বলল, দাও তোমার কয়েকটা ছবি তুলে দিই। আলাপের ফাঁকে যখন বাংলাদেশের নাম বেশ স্পষ্ট উচ্চারণ করল মেয়েটি, অবাক হলাম। জানলাম, ভারতের স্পাইসজেট এয়ালাইন্সে কাজ করে সে। বাংলাদেশ সম্পর্কে তার ভালো জানাশোনা আছে।
তাকে বিদায় জানিয়ে আরও খানিকটা সময় নিয়ে আশপাশটা ভালো করে ঘুরে বাসে করে চলে গেলাম হিরো’স স্কয়ারে। হাঙ্গেরির অস্তিত্বের প্রথম এক হাজার বছরের উদযাপন উপলক্ষে এবং সাতটি মাগয়ার উপজাতি, যারা হাঙ্গেরি প্রতিষ্ঠা করেছিল, তাদের স্মরণে ১৮৯৬ সালে এই স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছিল। বিশাল চত্বর অনেক টুরিস্ট, এই চত্বর এখন বুদাপেস্টের অন্যতম আকর্ষণ।
স্কয়ারের পাশেই সিটি পার্ক, সেদিকে পা বাড়াতেই প্রথমে আইস স্কেটিং পার্ক পড়ল। শীতকালে লেকের পানি জমিয়ে যেখানে জমজমাট আইস স্কেটিং উৎসব হয়। এখনও জমিয়ে শীত পড়েনি, তুষারপাত শুরু হয়নি। তাই পার্কের কংক্রিটের বেদিতে পানি জমিয়ে বরফ করা হয়নি। পার্কের শুরুতেই হাতের ডানদিকে ভ্যাজদাহুনিয়াদ ক্যাসেল। সেখানে খানিকক্ষণ সময় কাটিয়ে ছবি-টবি তুলে পার্কের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম হট-এয়ার বেলুনের কাছে। নোটিশে লেখা– ‘এখন বন্ধ’। টুরিস্ট সিজনে এলে এই বেলুনে উঠে পাখির চোখে বুদাপেস্ট দেখা সম্ভব। খানিকটা মন খারাপ হলো। হাঁটতে হাঁটতে যখন সেচ্যানই থার্মাল বাথ অ্যান্ড স্পা সেন্টারের সামনে এলাম, তখন প্রায় সন্ধ্যা। জায়গাটা কিন্তু খুবই জনপ্রিয় আর পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। এখন যেহেতু অফ সিজন এবং সন্ধ্যা প্রায়, তাই তেমন নেই। এটা ইউরোপের সবচেয়ে বড় ঔষধি স্নান বা মেডিসিনাল বাথ প্লেস। সন্ধ্যাবেলায় এ রকম একটা জায়গায় ঢুকে কাজ নেই। বরং ফেমাস শপিং স্ট্রিট– ভ্যাসিতে যাই, উপভোগ করি বুদাপেস্টের রাতের সৌন্দর্য।
পার্ক থেকে বেরিয়ে হিরো’স স্কয়ারে অবস্থিত মেট্রোস্টেশনের দিকে পা বাড়ালাম। বুদাপেস্টের মেট্রো সিস্টেম বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম, লন্ডনের ৬ বছর পর ১৮৯৬ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য স্বীকৃত হিরো’স স্কয়ারের ভূগর্ভস্থ স্টেশনটি এখনও তার প্রাচীন চেহারা ধরে রেখেছে। ঐতিহ্যবাহী সেই মেট্রোতে চড়ে ফিরছি আবার দানিয়ুবের তীরে। ক্রুজে উপভোগ করব দানিয়ুবের রাতের সৌন্দর্য। প্রসঙ্গত, দানিয়ুবের ক্রুজে প্রমোদতরীর মান ও সেবাভেদে খরচ ৩০ থেকে ৩০০ ইউরো। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউর প র হয় ছ ল স ন দর এই স ত প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
বিজয় যখন কড়া নাড়ছে
পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ঠিক আগমুহূর্তে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সাড়া জাগায়। দেশবাসীসহ বিশ্ব জানতে পারে, জাতিগত গণহত্যার মধ্যেই চলেছিল পরিকল্পিত বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড। এখানে সে সময়ের একটি আলোচিত প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো।
আত্মসমর্পণের আগে
ঢাকায় বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণের আগে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শহরের বুদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করেছে এবং তাঁদের মধ্যে পঞ্চাশের বেশি লোককে গুলি করে হত্যা করেছে। আকস্মিক সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে নিবিড় পরিকল্পনার আওতায় বাঙালি এলিট নিধনের অংশ হিসেবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এটা অবশ্যই কমান্ডিং অফিসার জেনারেল নিয়াজিসহ পাকিস্তান হাই কমান্ডের পূর্ণ জ্ঞাতসারে ঘটেছে।
এসব মৃতদেহের আবিষ্কার ঢাকা শহরে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, পাল্টা হত্যাকাণ্ড ও দাঙ্গার জন্ম দিতে পারে, এমনকি মুক্তিবাহিনীর গেরিলা ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যেও সংঘর্ষ সৃষ্টি করতে পারে।
ঢাকার মূল শহরের পাশের রায়েরবাজারে কতগুলো বিচ্ছিন্ন গর্তে নিহত বুদ্ধিজীবীদের মৃতদেহ আবিষ্কৃত হয়। আমি নিজে ৩৫টি গলিত দেহ দেখেছি। আপাতদৃষ্টে মনে হয়, তাঁরা চার-পাঁচ দিন আগে নিহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা সম্ভবত আরও বেশি হবে। ঢাকায় অপহরণ করা এ ধরনের লোকের সংখ্যা অন্তত ১৫০ হতে পারে।
ইউপিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রধান হৃদ্রোগ চিকিৎসক ফজলে রাব্বী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান মুনীর চৌধুরী রয়েছেন। ঢাকার মধ্যবিত্ত এলাকা ধানমন্ডির বাইরে একটি ইটখোলাকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। যদিও কচুরিপানার নীল-সাদা ফুল কর্দমাক্ত জলাশয়ে শোভা পাচ্ছে। স্থানটি লোকালয় থেকে বিচ্ছিন্ন। আজ ঢাকার শত শত মানুষ মাটির বাঁধ দিয়ে হেঁটে হেঁটে এখানে এসেছে, তাদের অনেকেই খুঁজে বেড়াচ্ছে নিরুদ্দিষ্ট স্বজনদের।
বিশিষ্টজনদের অপহরণ করে তুলে নেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালেই। পাঞ্জাবি সেনাদের কয়েকটি স্কোয়াড নির্দিষ্ট ঠিকানায় হাজির হয়ে নির্ধারিত পুরুষ ও নারীকে সশস্ত্র পাহারায় উঠিয়ে নিয়ে এসেছে। তাঁদের সম্ভবত রায়েরবাজার ইটখোলায় এনে মাটির বাঁধের পাশে লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে গুলি করেছে, যাতে তাঁরা হুমড়ি খেয়ে নিচের জলাশয়ে পড়ে যান।
ড. আমিনুদ্দিন বেঙ্গল রিসার্চ ল্যাবরেটরির প্রধান, অক্সফোর্ডের পিএইচডি। পাকিস্তানি সেনারা যখন তাঁকে তুলে নেয়, সেই মঙ্গলবার সকাল সাতটায় তাঁকে শেষবারের মতো দেখা যায়। নাজিউর রহমান বললেন, ‘আমি দুঃখিত, আমাকেও যেতে হচ্ছে, খুঁজে দেখি।’ ততক্ষণে তিনিও উলের মাফলার দিয়ে নাক-মুখ পেঁচিয়ে নিয়েছেন।
গতকাল আমি কেবল তিন ঘণ্টা ঢাকায় ছিলাম, ততক্ষণে ইটভাটার এই খবর তেমন ছড়ায়নি। জনতা উত্তেজিত, তবে আচরণে অদ্ভুত কোমলতা। ভারতীয় সেনাদের হাত নেড়ে অভিবাদন জানাচ্ছে, গাড়িতে এই প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যাচ্ছে, আবার ফিরে আসছে।
সেদিনও অনেক গোলাগুলি হয়েছে, বিশেষ করে রাতের বেলায়। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অবস্থানরত সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি তখনো বিস্ফোরণোন্মুখ। বাঙালিরা অভিযোগ করছে, বিহারি এই বিদেশিরা বহু বছর আগে মুসলমান হিসেবে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে, তারা বাঙালি হত্যাকাণ্ডে পাকিস্তানি সেনাসদস্যদের সাহায্য করেছে। আট মাস আগে আমি যখন যশোরে ছিলাম, এ কারণেই সেখানে বেসামরিক বিহারিদের হত্যা করা হয়। ঢাকায় বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ড যশোরের হত্যাকাণ্ডের চেয়ে শতগুণ বেশি ভয়াবহ একটি ব্যাপার। কাজেই একধরনের প্রতিশোধ গ্রহণের ব্যাপার অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে।
ইতিমধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাহারায় সেনানিবাসে বন্দী পাকিস্তানি সেনারা এখনো সশস্ত্র, যদি প্রয়োজন পড়ে! ঢাকা যখন জেনে যাবে পাকিস্তানি সেনারা কত পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তখন দেখা দেবে সত্যিকারের সংকট। যা-ই ঘটুক, পরাজিত পাকিস্তানি সেনাদের জন্য সহানুভূতিপ্রবণ হওয়া বাঙালিদের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। এ রকম একটি সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনী এভাবে খেলাচ্ছলে অপ্রয়োজনে, উন্মত্তের মতো খুন করতে পারে, তা অবিশ্বাস্য।
যদি পাইকারি হত্যাকাণ্ডকে সংবাদপত্র গণহত্যা আখ্যায়িত করে, তা অবশ্যই ভয়ংকর; কিন্তু পরিকল্পিতভাবে বাছাই করে জাতির সবচেয়ে যোগ্য, বুদ্ধিমান ও গুরুত্বপূর্ণ পুরুষ ও নারী হত্যার মাধ্যমে যদি জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেওয়া হয়, সেই ‘এলিটোসাইড’ এলিট হত্যা যে আরও বেশি ভয়ংকর।
গত মঙ্গলবারের অনেক আগেই পাকিস্তান শেষ হয়ে গেছে। যেসব কর্মকর্তা এই পরিকল্পনা করেছেন, তাঁরাও তা অবশ্যই জানেন। কাজেই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশকেও ধসিয়ে দেওয়া। বহুদিন ধরেই অনুমান করা হচ্ছিল, পাঞ্জাব মরুভূমির রুক্ষ সেনারা বাঙালিদের প্রতি হিংস্র বর্ণবাদী ঘৃণা লালন করে আসছে। এখন দেখা যাচ্ছে, তারা বুদ্ধিভিত্তিক ঈর্ষাও লালন করছে, যার প্রকাশ ঘটেছে এই ব্যাপক হত্যাকাণ্ডে।
ঈষৎ সংক্ষেপিত অনুবাদ: এম এ মোমেন
দ্য সানডে টাইমস, ১৯ ডিসেম্বর ১৯৭১
প্রথম আলো, ২৬ মার্চ ২০১১, পুনর্মুদ্রিত