যাদুকাটা নদীতে স্নান লাখো পুণ্যার্থীর
Published: 27th, March 2025 GMT
‘চৈত্র মাসে মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে যাদুকাটায় এসে স্নান করলে সব পাপ মোচন হয়। এ জন্য এখানে এসেছি গঙ্গাস্নান করে পুণ্যলাভ করতে’– বলছিলেন সূর্য্যেরগাঁও গ্রামের অনির্বাণ দাস।
স্নানের পাশাপাশি নদীতে বাবার অস্থি বিসর্জন দিয়েছেন বলে জানিয়ে অনির্বাণ বলেন, ‘পরিবারের সবাই এক হয়ে পণাতীর্থে গঙ্গাস্নান করতে এসেছি। গঙ্গাস্নানের পাশাপাশি অনেকে এখানে আসেন মা, বাবা, আত্মীয়স্বজনের অস্থি বিসর্জন দিতে। আমিও বাবার অস্থি বিসর্জন দিতে এসেছি।’
অপর পুণ্যার্থী শ্যামল বর্মণ বলেন, চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীসহ সাত পুণ্য নদীর প্রবাহ একসঙ্গে যাদুকাটায় এসে মিলিত হওয়ায় নদীর জল পবিত্র হয়ে ওঠে।
তেরীগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শিতেশ পাল বলেন, কেউ যান লাঙ্গলবন্দে, কেউ ভারতের গঙ্গায় আর কেউ মনে করেন সব তীর্থের সেরা তীর্থ পণাতীর্থ।
গত বুধবার রাত ১১টা ১ মিনিট থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীতে দুই দিনব্যাপী এ গঙ্গাস্নান চলে। এ উপলক্ষে উপজেলার রাজারগাঁও অদ্বৈত প্রভুর জন্মধামসংলগ্ন যাদুকাটা নদীতে লাখো মানুষের ঢল নামে। এ উপলক্ষে এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। বুধবার সকাল থেকেই লাখো মানুষ অদ্বৈত প্রভুর আখড়া, গড়কাটি ইসকন মন্দির এবং নদীর তীরে অবস্থান নেন। রাজারগাঁও আখড়াবাড়ি ও যাদুকাটা নদীর উভয় তীরে বালুর চরে বসে মাটির খেলনা, খাদ্যসামগ্রীর দোকান।
অদ্বৈত জন্মধাম পরিচালনা কমিটির সভাপতি করুণা সিন্ধু চৌধুরী বলেন, দু’দিন আগে থেকেই উৎসবে আসা পুণ্যার্থীরা এখানে অবস্থান করে গঙ্গাস্নান সম্পন্ন করেছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হিমোফিলিয়াসহ রক্তক্ষরণজনিত রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা জরুরি
হিমোফিলিয়া একটি বিরল জেনেটিক রক্তের রোগ। এই রোগ শরীরের রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। এই রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, দ্রুত ও সঠিক রোগ নির্ণয় এবং যথাযথ চিকিৎসা জরুরি।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব মতামত জানান।
হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ বরাবরের মতো এবারো বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস উদযাপন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে সকালে র্যালির আয়োজন করা হয়। সকাল ৮টায় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বেলুন উড়িয়ে র্যালির উদ্বোধন করেন। র্যালি পরিচালনা করেন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আদনান হাসান মাসুদ।
র্যালি শেষে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি উপাচার্য, সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আমীন লুৎফুল কবীর, হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি নাজমুল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আরিফ।
বক্তারা হিমোফিলিয়া তথা সব রক্তক্ষরণজনিত রোগের ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, দ্রুত ও সঠিক রোগ নির্ণয় এবং যথাযথ চিকিৎসার উপরে গুরুত্ব আরোপ করেন।
পরে রোশ বাংলাদেশ লিমিটেডের সহযোগিতায় ঢাকা ক্লাবে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. আক্তার হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) অধ্যাপক ডা. শাহ আলী আকবর আশরাফী, পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. আবু হোসেন মোহাম্মদ মইনুল আহসান, স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনার লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. জয়নাল আবেদীন টিটো এবং অসংক্রামকব্যাধি নিয়ন্ত্রণের লাইন ডিরেক্টর ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন।
অনুষ্ঠানে হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক আমীন লুৎফুল কবীর, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আদনান হাসান মাসুদসহ অন্যান্য স্বনামধন্য হেমাটোলজিস্টবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন হিমোফিলিয়া সোসাইটি অফ বাংলাদেশের সভাপতি নাজমুল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আরিফ, রোগীদের প্রতিনিধি এবং রোশ বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গোলটেবিল বৈঠকে রোগীদের জন্য একটা কেন্দ্রীয় রেজিস্ট্রি প্রণয়ন, হিমোফিলিয়া গাইড লাইন চূড়ান্তকরণ এবং রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্বল্পমূল্যে জরুরি ওষুধসমূহের সরবরাহ নিশ্চিত করা ইত্যাদি বিষয়ে বাস্তবমুখী এবং স্বতঃস্ফূর্ত আলোচনা হয়।
দুপুরে হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস-২০২৫ উপলক্ষে একই ভেন্যুতে একটি বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের আয়োজন করে। অধিবেশনে অতিথি হিসেবে ছিলেন সিনিয়র হেমাটোলজিস্ট অধ্যাপক এবিএম ইউনূস এবং অধ্যাপক সালমা আফরোজ।
বৈজ্ঞানিক অধিবেশনটিতে হিমোফিলিয়া রোগীদের জন্য সর্বোত্তম চিকিৎসা, হিমোফিলিয়া রোগীদের শল্য চিকিৎসা সম্পর্কিত গাইডলাইন এবং হিমোফিলিয়া রোগীদের জীবনযাপনের গুণগতমান উন্নতকরণের উপরে তিনটি গবেষণাপত্র পাঠ করা হয় এবং এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানটিতে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. আব্দুস শাকুর ও অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান এবং রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অখিল রঞ্জন বিশ্বাস ও ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ