জিম্মিদের মুক্তি না দিলে গাজা দখলের হুমকি ইসরায়েলের
Published: 27th, March 2025 GMT
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। হামাসের হাতে বন্দী থাকা বাকি জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া হলে গাজা আংশিক দখল করে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাল্টা হুমকি দিয়ে হামাস বলেছে, ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করলে জিম্মিদের ‘কফিনে’ করে ফেরত পাঠানো হবে।
গাজায় ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার পর গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। ইসরায়েলের ইচ্ছা, প্রথম ধাপের এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে সব জিম্মিকে ইসরায়েলে ফিরিয়ে আনা। তবে হামাসের দাবি, চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে নিয়ে যেতে হবে। এর মাধ্যমে গাজায় স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ হবে।
এমনই দ্বন্দ্বের মধ্যে ১৮ মার্চ গাজায় আবার নৃশংসতা শুরু করে ইসরায়েল। দেশটির কর্মকর্তাদের ভাষ্য, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে নতুন করে হামলা শুরু করেছেন তাঁরা। প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির সময় ৩৩ জনকে মুক্তি দেওয়ার পর এখনো হামাসের হাতে ৫৮ জন বন্দী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমাদের জিম্মিদের মুক্তি না দিতে হামাস যত গোঁ ধরে থাকবে, আমরা তত জোরদার চাপ দেব। এর মধ্যে (গাজার) অঞ্চল দখলসহ অন্যান্য পদক্ষেপ রয়েছে। সেগুলো আমি এখানে বিস্তারিত বলব না।’
এর আগে বুধবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, গাজার অন্য এলাকাগুলোয় পূর্ণ শক্তি নিয়ে অভিযান শুরু করা হবে। পাশাপাশি আরও এলাকা থেকে বাসিন্দাদের চলে যাওয়া নির্দেশ দেওয়া হবে। এরপরই গাজা নগরী ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা খালি করার নির্দেশ দেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র অ্যাভিচে আদ্রি।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর বৃহস্পতিবারও গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এদিন উত্তর গাজায় জাবালিয়া এলাকায় আবদুল লতিফ আল-কানোউ নামে হামাসের এক মুখপাত্র নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লতিফ আল-কানোউয়ের অবস্থান করা তাঁবুতে সরাসরি হামলা চালায় ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকাটিতে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৮৫৫ জনের মৃত্যু হলো। আর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় মোট নিহত হয়েছেন ৫০ হাজার ২০৮ জন। আহত ১ লাখ ১৩ হাজার ৯১০ জন।
আরও পড়ুনইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে নিয়ে যত বিতর্ক২৬ মার্চ ২০২৫এদিকে গাজা দখলে ইসরায়েলের হুমকি ও হুঁশিয়ারির মধ্যে এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, ‘যতবারই ইসরায়েলের শক্তি খাটিয়ে তাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে, শেষ পর্যন্ত তারা (জিম্মি) কফিনে করে ফিরে যাবে।’ তারা জিম্মিদের যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তবে ইসরায়েলের বোমা হামলার কারণে তা কঠিন হয়ে পড়ছে।
গাজায় হামলার মধ্যে ইসরায়েলে চলছে বিক্ষোভ। বুধবার রাতে জেরুজালেমে দেশটির পার্লামেন্টের কাছে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। বিচারকদের নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধি পাবে, এমন একটি বিলের বিরোধিতা করেছেন তাঁরা। একই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু করে জিম্মিদের মুক্ত করার দাবিও তুলেছেন।
আরও পড়ুনট্রাম্প প্রশাসনকে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের নাম–তথ্য দিচ্ছে, কারা এই বেতার৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম নগরে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম নগরে ঈদের প্রধান জামাত আজ সোমবার সকাল আটটায় জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেন হাজারো মুসল্লি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত প্রধান ঈদ জামাতে অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র শাহাদাত হোসেন, সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জামাতে শরিক হন।
অন্যান্য বছর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে ঈদের নামাজে অংশ নিলেও এবার তাঁদের কাউকে দেখা যায়নি।
ঈদের দিন প্রথম ও প্রধান জামাতে ইমামতি করেন জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও ঐক্য কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
ঈদের প্রধান জামাত শুরুর আগে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ মসজিদে আসতে শুরু করেন। কেউ একা, কেউ কেউ দল বেঁধে ঈদের মসজিদে আসেন। শিশু-কিশোররা আসে অভিভাবকদের সঙ্গে। সবার পরনে ছিল নতুন পায়জামা-পাঞ্জাবি। ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ঈদের নামাজ শেষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, মানুষ এবার সুষ্ঠুভাবে ঈদ উদ্যাপন করছে। বড় ধরনের কোনো ঝামেলা হয়নি। এবার মানুষ শান্তিতে রোজা পালন করেছেন। ঈদও নির্বিঘ্নে উদ্যাপন করতে পারছেন। এ জন্য আল্লাহের দরবারে শুকরিয়া জানান তিনি।
পরিচ্ছন্ন চট্টগ্রাম শহর ও জলাবদ্ধতামুক্ত নগর গড়তে চট্টগ্রামবাসীর সহায়তা চান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ঈদের আনন্দ সবখানে ছড়িয়ে পড়ুক। ধনী-গরিবের মধ্যে যাতে কোনো বৈষম্য না থাকে। সুখী, সমৃদ্ধিশালী ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সবাই মিলে কাজ করার প্রত্যয় জানান। এ ছাড়া চট্টগ্রামকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি জলাবদ্ধতামুক্ত নগর গড়তে যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ও প্লাস্টিক সামগ্রী না ফেলতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান মেয়র শাহাদাত হোসেন।
জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে সকাল পৌনে ৯টায় ঈদের দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন।