চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নিয়মিত যাতায়াত করা মহানন্দা এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেনের প্রায় ৪০০টি আসন কমেছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেন দুটি থেকে ৫টি বগি অপসারণ করলে আসনগুলো কমে যায়। অন্যদিকে এ স্টেশন থেকে বন্ধ রয়েছে একটি লোকাল ট্রেন। ফলে ট্রেন ও আসন সংকট হওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসন সংখ্যা না বাড়ালে ঈদে মানুষের চাপে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। 
রহনপুরসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেলওয়ে স্টেশন থেকে এক সময় এক্সপ্রেস, লোকাল, কমিউটার, শাটলসহ ১৫টি ট্রেন চলাচল করত। করোনার পর থেকে ২টি শাটল ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি বন্ধ করা হয়েছে ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেন। বর্তমানে এ রুটগুলো দিয়ে ১২টি ট্রেন চলাচল করছে। ট্রেনের সংখ্যা কমায় যাত্রীরা দীর্ঘদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন। এর মধ্যে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে তাবলিগের ইজতেমার সময় কমিউটার ট্রেন থেকে দুটি বগি অপসারণ করে রেলওয়ে। বিভিন্ন সময় মহানন্দা এক্সপ্রেসে ৮টি বগির মধ্যে একটি নন-এসি কেবিনসহ ৩টা বগি অপসারণ করা হয়েছে। রহনপুর থেকেও বন্ধ রয়েছে একটি লোকাল ট্রেন।  
রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদীগামী কমিউটার ট্রেনটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা ১০ মিনিটে রহনপুরের উদ্দেশে রওনা হয়ে বেলা ১১টায় পৌঁছায়। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে রহনপুর থেকে ছেড়ে দুপুর ২টায় রাজশাহী পৌঁছায়। বিকেল ৩টায় রাজশাহী ছেড়ে রহনপুরে আসে বিকেল সাড়ে ৪টায়। সবশেষ ট্রেনটি বিকেল সাড়ে ৫টায় ঈশ্বরদীর উদ্দেশে রওনা হয়। 
নাচোল, ভোলাহাট ও রহনপুর থেকে বাস চলাচল সীমিত হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রহনপুর, জামতলা, নাচোলসহ ৭টি স্টেশন থেকে জেলার অন্তত ১০ লাখ মানুষ নিয়মিত কমিউটার ট্রেনে নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন। ৫শ আসনের বিপরীতে শুধু রহনপুর থেকেই টিকিট বিক্রি হয় এক হাজারের ওপরে। অন্য ৪ স্টেশন থেকে আরও ৪শ যাত্রী চলাচল করেন গাদাগাদি করে। মালগাড়িতেও ওঠানো হয় যাত্রীদের। 
কমিউটার ট্রেনের যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, এই ট্রেনে রাজশাহীর যাত্রীর চাপ অনেক বেশি, কিন্তু আসন কম। অর্ধেকের বেশি যাত্রীকে দাঁড়িয়ে বা মালগাড়িতে যেতে হয়। নানা অজুহাতে ট্রেনের আসন কমালেও পরে আর বাড়ানো হয় না বলে আক্ষেপ করেন এ যাত্রী। 
চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশনমাস্টার ওবাইদুল্লাহ জানান, কোচ ও ক্রু সংকট এবং কয়েকটি বগি অকেজো হয়ে যাওয়ায় বন্ধ ট্রেনগুলো চালু করা হয়নি। যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। 
পশ্চিম রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন বলেন, কমিউটার ট্রেনের দুটি বগি মেরামতের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সেগুলো সংযোজন করা হবে। অন্য ট্রেনগুলোর বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
রহনপুর থেকে নিয়মিত যাতায়াতকারী কলেজ শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রায় দিনই দাঁড়িয়ে যেতে হয়। কখনও ৩টি আসনে ৪জন বসতে হয়। এর পরও দুই-তৃতীয়াংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যায়।
রহনপুর রেল বন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক নাজমুল হুদা খান রুবেল বলেন, যাত্রীদের গাদাগাদি করে বসার ছবি ধারণ করে রেলের কর্তাদের দেখালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। 
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন জুয়েল জানান, বিভিন্ন অঞ্চলে ঈদ উপলক্ষে স্পেশাল ট্রেন বা বগি বাড়ানো হয়; চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘটে উল্টো। এ বৈষ্যম্যের কারণে একাধিকবার জেলার নাগরিকরা আন্দোলন করেছেন। ঈদের পর এ নিয়ে আন্দোলনে নামা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ইনব বগঞ জ র র লওয়

এছাড়াও পড়ুন:

‘সুপার সানডেতেও’ পারল না ধোনির চেন্নাই, হাসারাঙ্গার ঘূর্ণিতে রাজস্থানের স্বস্তি

বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ‘শুক্রবার রাতের ব্লকবাস্টারে’ অসহায় আত্মসমপর্ণ করেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। সেই ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডারের নয় নম্বরে নেমে সমালোচিত হয় ধোনি ও চেন্নাইয়ের টিম ম্যানেজমেন্ট।

কাল অবশ্য নিজের স্বচ্ছন্দ্যের পজিশন সাতেই ফিরেছেন ধোনি। কিন্তু একটি করে চার ও ছক্কায় তাঁর ১১ বলে ১৬ রান কোনো কাজে আসেনি। ‘সুপার সানডেতে’ চেন্নাইও পেরে ওঠেনি। ম্যাচ কিছুটা জমিয়ে তোলার আভাস দিলেও শেষ পর্যন্ত রাজস্থান রয়্যালসের কাছে ৬ রানে হেরে গেছে।

গুয়াহাটিতে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ১৮২ রান করে রাজস্থান। চেন্নাই ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রানে থামে। বোলিংয়ে রাজস্থানের নায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। লঙ্কান এই লেগ স্পিনার ৩৫ রানে ৪ উইকেটে নিয়ে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন। তবে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের (৩৬ বলে ৮১ রান) সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কারটা হাসারাঙ্গার সতীর্থ নীতীশের হাতে উঠেছে।

এবারের আইপিএলে এটিই রাজস্থানের প্রথম জয়। আর চেন্নাইয়ের টানা দ্বিতীয় হার। আজকের জয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে তলানিতে নামিয়ে পয়েন্ট তালিকার নয়ে উঠে এসেছে রাজস্থান। চেন্নাই আছে সাতে।

 সংক্ষিপ্ত স্কোর

রাজস্থান রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৮২/৯

(নীতীশ ৮১, পরাগ ৩৭, স্যামসন ২০, হেটমায়ার ১৯; নুর ২/২৮, পাতিরানা ২/২৮, খলিল ২/৩৮, জাদেজা ১/১০)।

চেন্নাই সুপার কিংস: ২০ ওভারে ১৭৬/৬

(রুতুরাজ ৬৩, জাদেজা ৩২*, ত্রিপাঠি ২৩, দুবে ১৮, ধোনি ১৬; হাসারাঙ্গা ৪/৩৫, আর্চার ১/১৩, সন্দ্বীপ ১/৪২)।

ফল: রাজস্থান রয়্যালস ৬ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নীতীশ রানা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ