ট্রেনের আসন কমায় ঈদ যাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা
Published: 27th, March 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নিয়মিত যাতায়াত করা মহানন্দা এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেনের প্রায় ৪০০টি আসন কমেছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেন দুটি থেকে ৫টি বগি অপসারণ করলে আসনগুলো কমে যায়। অন্যদিকে এ স্টেশন থেকে বন্ধ রয়েছে একটি লোকাল ট্রেন। ফলে ট্রেন ও আসন সংকট হওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসন সংখ্যা না বাড়ালে ঈদে মানুষের চাপে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
রহনপুরসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের রেলওয়ে স্টেশন থেকে এক সময় এক্সপ্রেস, লোকাল, কমিউটার, শাটলসহ ১৫টি ট্রেন চলাচল করত। করোনার পর থেকে ২টি শাটল ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি বন্ধ করা হয়েছে ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেন। বর্তমানে এ রুটগুলো দিয়ে ১২টি ট্রেন চলাচল করছে। ট্রেনের সংখ্যা কমায় যাত্রীরা দীর্ঘদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন। এর মধ্যে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে তাবলিগের ইজতেমার সময় কমিউটার ট্রেন থেকে দুটি বগি অপসারণ করে রেলওয়ে। বিভিন্ন সময় মহানন্দা এক্সপ্রেসে ৮টি বগির মধ্যে একটি নন-এসি কেবিনসহ ৩টা বগি অপসারণ করা হয়েছে। রহনপুর থেকেও বন্ধ রয়েছে একটি লোকাল ট্রেন।
রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদীগামী কমিউটার ট্রেনটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা ১০ মিনিটে রহনপুরের উদ্দেশে রওনা হয়ে বেলা ১১টায় পৌঁছায়। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে রহনপুর থেকে ছেড়ে দুপুর ২টায় রাজশাহী পৌঁছায়। বিকেল ৩টায় রাজশাহী ছেড়ে রহনপুরে আসে বিকেল সাড়ে ৪টায়। সবশেষ ট্রেনটি বিকেল সাড়ে ৫টায় ঈশ্বরদীর উদ্দেশে রওনা হয়।
নাচোল, ভোলাহাট ও রহনপুর থেকে বাস চলাচল সীমিত হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রহনপুর, জামতলা, নাচোলসহ ৭টি স্টেশন থেকে জেলার অন্তত ১০ লাখ মানুষ নিয়মিত কমিউটার ট্রেনে নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন। ৫শ আসনের বিপরীতে শুধু রহনপুর থেকেই টিকিট বিক্রি হয় এক হাজারের ওপরে। অন্য ৪ স্টেশন থেকে আরও ৪শ যাত্রী চলাচল করেন গাদাগাদি করে। মালগাড়িতেও ওঠানো হয় যাত্রীদের।
কমিউটার ট্রেনের যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, এই ট্রেনে রাজশাহীর যাত্রীর চাপ অনেক বেশি, কিন্তু আসন কম। অর্ধেকের বেশি যাত্রীকে দাঁড়িয়ে বা মালগাড়িতে যেতে হয়। নানা অজুহাতে ট্রেনের আসন কমালেও পরে আর বাড়ানো হয় না বলে আক্ষেপ করেন এ যাত্রী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশনমাস্টার ওবাইদুল্লাহ জানান, কোচ ও ক্রু সংকট এবং কয়েকটি বগি অকেজো হয়ে যাওয়ায় বন্ধ ট্রেনগুলো চালু করা হয়নি। যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
পশ্চিম রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন বলেন, কমিউটার ট্রেনের দুটি বগি মেরামতের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সেগুলো সংযোজন করা হবে। অন্য ট্রেনগুলোর বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
রহনপুর থেকে নিয়মিত যাতায়াতকারী কলেজ শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রায় দিনই দাঁড়িয়ে যেতে হয়। কখনও ৩টি আসনে ৪জন বসতে হয়। এর পরও দুই-তৃতীয়াংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যায়।
রহনপুর রেল বন্দর বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক নাজমুল হুদা খান রুবেল বলেন, যাত্রীদের গাদাগাদি করে বসার ছবি ধারণ করে রেলের কর্তাদের দেখালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন জুয়েল জানান, বিভিন্ন অঞ্চলে ঈদ উপলক্ষে স্পেশাল ট্রেন বা বগি বাড়ানো হয়; চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘটে উল্টো। এ বৈষ্যম্যের কারণে একাধিকবার জেলার নাগরিকরা আন্দোলন করেছেন। ঈদের পর এ নিয়ে আন্দোলনে নামা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ইনব বগঞ জ র র লওয়
এছাড়াও পড়ুন:
বন্ধুর মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল এসএসসি পরীক্ষার্থী
দিনাজপুরের বিরামপুরে বন্ধুর মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় হাসান আলী (১৬) নামের এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিরামপুর পৌর শহরের দোয়েল স্টুডিও মোড়ে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় হাসানের বন্ধু মোটরসাইকেলের চালক নাঈম হোসেন (১৭) আহত হয়েছে।
নিহত হাসান আলী পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চকপাড়া লিচুবাগান এলাকার ঝালমুড়ি বিক্রেতা মিলন ইসলামের ছেলে। সে চলমান এসএসসি পরীক্ষার পরীক্ষার্থী ছিল। হাসান উপজেলার আমানুল্লাহ আদর্শ বিদ্যানিকেতনের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিল বলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রশিদ জানিয়েছেন। আহত নাঈম হোসেন একই এলাকার নিয়ামুল হকের ছেলে।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আজ বেলা ১১টার দিকে হাসান তার বন্ধু নাঈমের মোটরসাইকেলে করে বিরামপুর শহরে ঘুরতে যায়। নাঈম মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল, হাসান পেছনে বসে ছিল। পথে পৌর শহরের দোয়েল স্টুডিও মোড়ে পৌঁছালে গোবিন্দগঞ্জ থেকে আসা পণ্যবাহী একটি পিকআপ মোটরসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দিলে তারা মহাসড়কের ওপর ছিটকে পড়ে। এ সময় হাসান আলী পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক তাহাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হাসান আলীকে মৃত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছিল। সে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় হাসান আলী নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। নিহতের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ঘটনার পর পিকআপ ভ্যানের চালক গাড়ি নিয়ে পালিয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।