জিম্বাবুয়ের দুর্দান্ত ক্রিকেট মৌসুম: সফরে আসছে দ. আফ্রিকা ও নিউ জিল্যান্ড
Published: 27th, March 2025 GMT
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট একটি রোমাঞ্চকর মৌসুমের জন্য প্রস্তুত! জুন মাসের ২৮ তারিখ থেকে আগস্ট মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত দেশটিতে সফরে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউ জিল্যান্ড। এ সময়ে শেভরনরা দুটি টেস্ট সিরিজ ও একটি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে।
এ বিষয়ে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট (জেডসি) -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিভমোর মাকোনি বলেছেন, ‘‘এটি আমাদের সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক হোম সিরিজ। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউ জিল্যান্ডের মতো বিশ্বমানের দলগুলোর বিপক্ষে খেলার সুযোগ আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা হবে। এটি জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের উন্নতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।’’
দীর্ঘ সময় পর জিম্বাবুয়ে আবারও নিজেদের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্বাগত জানাচ্ছে। সর্বশেষ তারা ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আতিথিয়েতা দিয়েছিল। এবং ২০১৭ সালের পর এই প্রথম তাদের বিপক্ষে টেস্ট খেলবে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেও তারা সবশেষ খেলেছিল ২০১৬ সালে।
আরো পড়ুন:
ঈদের ছুটিতে ক্রিকেটাঙ্গন
‘১০ হাজার টাকায় ভক্ত ভাড়া করে মাঠে ঢোকালেন রিয়ান’
জিম্বাবুয়ে সবশেষ ২০১৮ সালে ঘরের মাঠে একটি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজন করেছিল। যেখানে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া অংশ নিয়েছিল এবং পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এবারও জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটপ্রেমীরা দারুণ একটি মৌসুম উপভোগের অপেক্ষায়।
দ.
আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের সময়সূচি:
প্রথম টেস্ট: ২৮ জুন – ২ জুলাই।
দ্বিতীয় টেস্ট: ৬ জুলাই – ১০ জুলাই।
**দুটি টেস্টই অনুষ্ঠিত হবে বুলাওয়েওতে।
ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের সময়সূচি:
১৪ জুলাই: জিম্বাবুয়ে বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা।
১৬ জুলাই: নিউ জিল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা।
১৮ জুলাই: জিম্বাবুয়ে বনাম নিউ জিল্যান্ড।
২০ জুলাই: জিম্বাবুয়ে বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা।
২২ জুলাই: নিউ জিল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা।
২৪ জুলাই: জিম্বাবুয়ে বনাম নিউ জিল্যান্ড।
২৬ জুলাই: ফাইনাল।
**ত্রিদেশীয় সিরিজের সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে হারারেতে।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের সময়সূচি:
প্রথম টেস্ট: ৩০ জুলাই – ৩ আগস্ট ।
দ্বিতীয় টেস্ট: ৭ আগস্ট – ১১ আগস্ট।
**দুটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে বুলাওয়েওতে।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সময়সীমা বাড়ানো ও শর্ত শিথিল বাস্তবসম্মত
গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি বহুপক্ষীয় মত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। এর অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনপ্রক্রিয়া। বর্তমানে প্রচলিত নির্বাচনসংক্রান্ত আইন ও ২০০৮ সালের নিবন্ধন বিধিমালার অন্তর্নিহিত কঠোরতা সদ্য গঠিত কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করাকে প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে। রক্তস্নাত গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ‘শত ফুল ফুটতে দাও’ নীতির হাত ধরে যখন নতুন নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশের আকাঙ্ক্ষায় উজ্জীবিত হচ্ছে, সে মুহূর্তে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে যে সময়সীমা নির্ধারণ করতে দেখা গেছে, তা বাস্তবতার নিরিখে অসংগত, অপর্যাপ্ত এবং নবীন রাজনৈতিক শক্তিগুলোর জন্য কার্যত একপ্রকার নিষেধাজ্ঞারই নামান্তর।
এমন প্রেক্ষাপটে সদ্যোজাত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি (বিএজেপি) এবং নতুনধারা বাংলাদেশ (এনডিবি) নিবন্ধনের সময়সীমা বৃদ্ধিসংক্রান্ত যে দাবি তুলেছে, তা বিবেচনা করতে হবে রাজনৈতিক ন্যায়বোধ ও গণতান্ত্রিক ভারসাম্যের নিরিখে।
নির্বাচন কমিশন গত ১০ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করে, যার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। অর্থাৎ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরবর্তী ৪০ দিনকে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের মতো একটি জটিল ও বিস্তৃত প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অথচ প্রায় এক দশক ধরে এ নিবন্ধনপদ্ধতি অকার্যকর ছিল। উপরন্তু এ সময়ের মধ্যেই দেশের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর ও টানা সরকারি ছুটি পড়ে যাওয়ায় প্রশাসনিক গতিশীলতা ও কার্যসম্পাদন চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে।
এ বাস্তবতা বিবেচনায় রাজনৈতিক দলগুলো যে নিবন্ধনের সময়সীমা ন্যূনপক্ষে তিন মাস বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে, সেটি নিছক একটি সুবিধার আরজি নয়; বরং তা বর্তমান বাস্তবতার গভীর উপলব্ধি থেকে উৎসারিত এক গণতান্ত্রিক দাবিমাত্র। নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে এ আবেদনকে আন্তরিকতা ও যুক্তিনিষ্ঠতার সঙ্গে গ্রহণ করা এবং দ্রুত সময়সীমা বৃদ্ধির ঘোষণা প্রদান করা।
উল্লেখ্য, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ইতিমধ্যে নিবন্ধনের কড়াকড়ি শর্তাবলি শিথিল করার পরামর্শ দিয়েছে। কমিশনের মতে, নিবন্ধনের পূর্বশর্ত হিসেবে দেশের ১০০টি থানা বা ৪০টি জেলার স্বীকৃত কার্যালয়, নির্ধারিত হারে নারী প্রতিনিধিত্ব, পাঁচ বছরে একবার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ ইত্যাদি শর্ত আজকের বাস্তবতায় অনেকটাই ভারসাম্যহীন ও নবীন দলবিরোধী। এ অবস্থায় একদিকে যখন শর্ত পূরণের কাঠামোগত সংস্কারের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন, তখন অপর দিকে নিবন্ধনের আবেদন আহ্বান এবং এর জন্য কড়াকড়ি সময়সীমা নির্ধারণ একপ্রকার নীতিগত অসংগতি হিসেবেই প্রতিভাত হয়।
রাজনৈতিক পরিসরকে সুসংবদ্ধ ও বহুমাত্রিক করার জন্য কেবল বৃহৎ ও পুরোনো দলগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে নবাগত দলগুলোর সামনে দেয়াল তুলে রাখলে তা গণতান্ত্রিক বিকাশে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। বরং একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের উচিত, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের প্রক্রিয়াকে সময় ও শর্ত—উভয় ক্ষেত্রেই আরও সহনীয়, বাস্তবসম্মত ও অন্তর্ভুক্তিমুখী করা।
আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশন অবিলম্বে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময়সীমা বৃদ্ধি করবে এবং সেই সঙ্গে শর্ত শিথিলসংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো গ্রহণের প্রক্রিয়া দ্রুততর করবে। গণতন্ত্রের শক্তি বহুমতের স্বীকৃতি ও প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতির বিস্তারে নিহিত—এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নাগরিকের ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ তৈরি করা, রাজনৈতিক দলের হাত-পা বেঁধে দিয়ে তরঙ্গসংকুল নদীতে সাঁতার কাটতে বাধ্য করা নয়।