রাজশাহীর বাঘায় স্বামীর নির্মম নির্যাতনে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন নববধূ আয়েশা (১৯)। ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁর দুই হাঁটুর নিচে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়েছে। খবর পেয়ে স্বজনরা তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। 

স্বজনরা জানায়, বাজু বাঘা ইউনিয়নের আমোদপুর গ্ৰামের বাসিন্দা নাজিম উদ্দিনের মেয়ে আয়েশা জন্ম থেকে বাক-প্রতিবন্ধী। শুক্রবার পারিবারিকভাবে বাউসা ইউনিয়নের বাউসা হেদাতিপাড়া গ্রামের জোনাল আলীর ছেলে মোবারক হোসেনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। গত বুধবার রাতে মোবারক হোসেন ধারালো ছুরি দিয়ে আয়েশাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেছে। প্রতিবেশীরা বিষয়টি বাবা নাজিমুদ্দিনকে জানালে তিনি মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে মোবারক হোসেন পলাতক।
 
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফম আছাদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বাসের বেপরোয়া গতি কেড়ে নেয় তিন সহোদরের প্রাণ

তিন সহোদর ভাইয়ের নিথর দেহের পাশে পড়ে আছে ঈদের রঙিন পোশাক। রক্তে ভিজে রং পরিবর্তন হয়েছে পোশাকের। চারদিকে স্বজনদের আহাজারি। তিন সদস্যকে হারিয়ে পরিবারের ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছে। 

এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সোনার বাংলা এলাকায়। শনিবার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টায় পাথরঘাটা থেকে ঢাকাগামী রাজীব পরিবহনের বাসের চাপায় নিহত হন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার টিকিকাটা ইউনিয়নের বাইশকুরা এলাকার নাসির খানের ছেলে নাঈমুজ্জামান শুভ (২২), শান্ত (১৪) ও নাদিম (৮)। 

স্থানীয়রা তিন সহোদরকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্বজনরা। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা। 

স্বজনরা জানান, ঢাকার শাসা গার্মেন্টসে চাকরি করেন শুভর খালাতো ভাই রাকিব। তিনি এক সহকর্মীর মাধ্যমে বাবা-মায়ের জন্য ঈদের পোশাক পাঠান শুভর কাছে। সেই পোশাক খালা-খালুর কাছে পৌঁছে দিতে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন শুভ ও তার দুই ভাই। পথে পাথরঘাটার সোনার বাংলা এলাকায় রাজিব পরিবহনের বাসের চাপায় তিন ভাইয়ের মৃত্যু হয়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাসের বেপরোয়া গতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী সোনার বাংলা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন রাইজিংবিডিকে বলেছেন, রাজীব পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫৭৪৮৬) গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে আসছিল পাথরঘাটা থেকে। বিপরীত দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে আসছিল তিন ভাই। বাসটি হঠাৎ করে উল্টো পাশে গিয়ে মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। এতে মোটরসাইকেলের আরোহী তিন ভাই ঘটনাস্থলেই মারা যান। 

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এর আগে নাসির খান ও শিউলি বেগম দম্পতির প্রথম সন্তান পানিতে ডুবে মারা গিয়েছিল। এখন বাসচাপায় গেল বাকি তিন সন্তানের প্রাণ। সন্তান হারানোর শোকে বার বার চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারাচ্ছেন নাসির খান ও শিউলি বেগম। 

নিহতদের মামা ওয়াহিদুর রহমান বলেছেন, ঈদের জন্য নতুন রঙিন পোশাক দিতে এসে সাদা পোশাকে জড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে গেলাম তিন ভাগিনাকে। বিচার চেয়ে কী হবে! তারা তো ঠিকই পার পেয়ে যাবে। সামান্য কিছু জরিমানা, এরপর মুক্ত। আবার তারা অন্য কেউকে চাপা দিয়ে মারবে। 

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান রাইজিংবিডিকে বলেছেন, বাসের সুপারভাইজার সবুজ হাওলাদার ও চালকের সহকারী সোহেল সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাসচালককে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। 

এই ঘটনায় নিহতদের মামা ওয়াহিদুর রহমান বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে পাথরঘাটা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাসের বেপরোয়া গতি কেড়ে নেয় তিন সহোদরের প্রাণ