জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই বলে দাবি করেছেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতৃত্বের সবাই এই দলের হাল ধরেছেন। এটি একক কোনো ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকায় শোভাযাত্রা শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন আখতার হোসেন।

সম্প্রতি এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের শতাধিক গাড়িবহর নিয়ে নিজ এলাকা পঞ্চগড়ে শোডাউনের পর দলটির দুই নেতা ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি পোস্ট করেন। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আখতার হোসেন বলেন, যদি নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে থাকেন, সেটি আমরা দলগতভাবে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করব। আমাদের দলের বিভিন্ন সদস্যদের মধ্যে কথাবার্তা নিয়ে অনেকের মনে হতে পারে দলের মধ্যে সমন্বয়হীনতার জায়গা তৈরি হয়েছে, আসলে বিষয়টা এমন নয়।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, চব্বিশের আন্দোলনসহ বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ যে হত্যাযজ্ঞ ও গণহত্যা চালিয়েছে, এর জন্য দলটির দেশে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি হচ্ছে ফ্যাসিবাদী শক্তি। তারা কখনও ইনক্লুসিভ নির্বাচনের উপাদান হতে পারে না।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন এনসিপির প্রস্তুতি সম্পর্কে আখতার হোসেন বলেন, দলের মুখ্য সংগঠকরা দেশব্যাপী কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছেন। এতে মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়াও মিলছে। অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনের নিবন্ধন পেতে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি সেগুলো পূরণ করতে পারবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার রংপুরে আসেন আখতার হোসেন। দুপুরে নগরের সাতমাথা থেকে ভ্যানযোগে জনসংযোগ শুরু করেন তিনি। পরে তাঁর সংসদীয় এলাকা কাউনিয়া এবং পীরগাছার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দুই শতাধিক শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি দেউতি-কদমতলী-পীরগাছা সদর, কালীগঞ্জ পাওটানা হয়ে কাউনিয়ার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে টেপামধুপুর এলাকায় গিয়ে ইফতার মাহফিলে অংশ নেয়। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন আখত র হ স ন এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন নয়, আগের সংবিধান সংশোধন করা যেতে পারে

সংবিধান সংস্কার কমিশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশালের প্রান্তিক প্রতিনিধিরা বলেছেন, নতুন কোনো সংবিধান নয়, সময়ের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে আগের সংবিধানকে সংশোধন করা যেতে পারে। তবে সেটা করতে পারবে একমাত্র নির্বাচিত সংসদ।

গতকাল শনিবার বরিশাল নগরীতে ‘রাষ্ট্র সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সুজন প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর বিষয়ে মতামত নিতে জেলা ও মহানগর সুজন এ বৈঠক আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সুজনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া। জেলা, উপজেলা ও মহানগর সুজন প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন। 

সভায় অংশগ্রহণকারীদের সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও সংবিধানের বিদ্যমান ব্যবস্থার কপি দেওয়া হলে তার ওপর আলোচনা করেন। ৯০ সদস্য আলোচনায় অংশ নেন। প্রায় সব আলোচক বিদ্যমান সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়নের বিরোধিতা করেন। তারা বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা অক্ষুণ্ন রেখে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। 

সুজনের বরিশাল মহানগরের সভাপতি রফিকুল আলম বলেন, বর্তমান সংবিধান সমুন্নত রাখার শপথ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে। এখন নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বললে সেটা শপথ ভঙ্গের শামিল। সংবিধান অনুযায়ী দ্বৈত নাগরিক সংসদ সদস্য হতে পারবেন না এবং রাষ্ট্রীয় পদে থাকতে পারবেন না। অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা দ্বৈত নাগরিক। এমনকি সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজও দ্বৈত নাগরিক। তাঁর নেতৃত্বে কমিশন বৈধ নয়।

তবে বানারীপাড়া সুজনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান সোহেল বলেন, আগের দলীয় সরকারগুলোর ব্যর্থতার জন্য ইউনূস সরকারের আবির্ভাব হয়েছে। তাই তাঁর নেতৃত্বেই সংবিধান সংস্কার নিরাপদ হবে।
দিলীপ বড়ুয়া বলেন, সংবিধান সংস্কার বিষয়ে সারাদেশে তৃণমূলের মতামত নেওয়া হচ্ছে। এসব যথাযথ স্থানে উপস্থাপন করা হবে। জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ