‘দুইবার বিশ্বকাপ জিতলেই জাতীয় দল থেকে অবসর নেব’
Published: 27th, March 2025 GMT
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ জানালেন, যদি তার দল টানা দুইবার বিশ্বকাপ জেতে, তবে তিনি জাতীয় দল থেকে অবসর নেবেন।
সম্প্রতি বিপ্লে'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্টিনেজ তার ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, বিশেষ করে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে কুলো মুয়ানির শট রুখে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে কথা বলেন। একইসঙ্গে তিনি ভবিষ্যতে নিজের উন্নতি এবং জাতীয় দলের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেন।
মার্টিনেজ বলেন, ‘যদি আমরা টানা দুইটি বিশ্বকাপ জিতি, তাহলে আমি জাতীয় দল থেকে অবসর নেব। তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য জায়গা তৈরি করতে হবে।’
আর্জেন্টিনা যদি টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জেতে, তবে তার অনুভূতি কেমন হবে, সে বিষয়েও কথা বলেছেন মার্টিনেজ। তিনি বলেন, ‘এ রকম ঘটনা আর ঘটবে না। আমরা সবাই আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিততে দেখেছি, যা আমি জন্মের পর কখনো দেখিনি। এখন সাত বছর বয়সী একটি শিশুও জানে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ কেমন। তবে দ্বিতীয়বার জিতলে মানুষ খুশি হবে, উদযাপন করবে, কিন্তু আগের মতো আবেগপ্রবণ হবে না।’
বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে কী করেছিলেন, সে বিষয়েও মজার তথ্য দেন মার্টিনেজ। তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে 'কল অফ ডিউটি' খেলছিলাম। তখন বিকেলের নাস্তার পর থেকে ম্যাচের ট্যাকটিক্যাল আলোচনা শুরুর আগ পর্যন্ত আমি ভিডিও গেমে ব্যস্ত ছিলাম।’
২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে গোল্ডেন গ্লাভস জিতেছিলেন মার্টিনেজ। ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সের দুইটি শট ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতাতে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি। এখন তার লক্ষ্য ২০২৬ বিশ্বকাপ, যেখানে আর্জেন্টিনা যদি শিরোপা ধরে রাখতে পারে, তবে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে রাখলেন এই অভিজ্ঞ গোলরক্ষক।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এম ল য় ন ম র ট ন জ আর জ ন ট ন র ব শ বক প জ ত জ ত য় দল থ ক আর জ ন ট ন ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
বেলার হাসি, অ্যাঞ্জেলের শূন্যতা: রোনালদোর আনন্দ-বেদনার দিন
সেদিন আবেগের দ্বিমুখী লড়াইয়ে পড়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও জর্জিনা রদ্রিগেজ। তাঁদের ঘর আলোকিত করে জন্মেছে নতুন এক শিশু, কিন্তু মনে আনন্দ ছিল না। সেই নবজাতকেরই যমজ ভাই যে মারা গেছেন। মা–বাবার জন্য এমন দিন কতটা কঠিন!
রোনালদো শুধু আবেগ নয় বুকে পাথরচাপাও দিয়ে রাখতে জানেন। ২০২২ সালের সেই দিনটি পার করার পরদিন ইনস্টাগ্রামে একই সঙ্গে সুখের ও দুঃখের সংবাদটি জানিয়েছিলেন পর্তুগিজ কিংবদন্তি, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের ছেলেশিশুটি মারা গেছে। যেকোনো মা–বাবার জন্য এটাই গভীরতম দুঃখ। কিছুটা আশা এবং সুখ নিয়ে এই মুহূর্তটি পার করার শক্তি আমরা পাচ্ছি মেয়েশিশুটির জন্ম নেওয়ায়।’
আরও পড়ুনফন ডাইক কি তাহলে এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতনের ডিফেন্ডার৪৯ মিনিট আগে২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর ইনস্টাগ্রামে জর্জিনার সঙ্গে নিজের হাসিমুখের একটি ছবি এবং আলট্রাসনোগ্রামের ছবি পোস্ট করে যমজ সন্তানের অপেক্ষায় থাকার সুখবরটি জানিয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু ভাগ্য পুরোপুরি তাঁদের সহায় হয়নি। কন্যাশিশু বেলা সুস্থ অবস্থায় জন্ম নিলেও পুত্রসন্তান অ্যাঞ্জেল বেবিকে বাঁচানো যায়নি।
বাবা–মা হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই দিনটি রোনালদো ও জর্জিনা কখনো ভুলতে পারবেন না। তিন বছর বয়সী বেলার জন্মদিন ছিল গতকাল। আবার এই দিনটাই অ্যাঞ্জেল বেবির মৃত্যুদিন, বেঁচে থাকলে যার বয়সও হতো তিন বছর। গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই দিনটি স্মরণ করে একটি ছবি পোস্ট করেন রোনালদো। সবুজ মাঠে বেলার সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে ওঠার সেই ছবির ক্যাপশন, ‘শুভ জন্মদিন আমার ভালোবাসা! আমাদের ভালোবাসা সব সময়ই তোমার সঙ্গে আছে।#অ্যাঞ্জেল বেবি।’
রোনালদোর এই ক্যাপশন আসলে মিশ্র অনুভূতির। একই সঙ্গে বেলাকে তার জন্মদিনের শুভেচ্ছা কিংবা ভালোবাসা জানানোর পাশাপাশি অ্যাঞ্জেল বেবিকেও স্মরণ করেছেন বুকে পাথর বেঁধে। ক্যাপশনে যে ভালোবাসার কথা তিনি বলেছেন সেটা আসলে তাঁর এই দুই সন্তানের ক্ষেত্রে দুরকম অনুভূতির সঙ্গেই মানানসই—একটি আনন্দের আরেকটি দুঃখের।
আরও পড়ুনযাঁরা মেসিকে ‘মেসি’ বানিয়েছেন—কেমন সেই দুই কোচ১২ ঘণ্টা আগেজর্জিনাও নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে রোনালদোর সঙ্গে বেলার একটি ভিডিও পোস্ট করে শুভেচ্ছা জানান জন্মদিনের। অ্যাঞ্জেল বেবিকেও যে মনে রেখেছেন সেটা বোঝা যায় তাঁর ক্যাপশনেই, ‘আজ আমার বাচ্চাদের বয়স তিন বছর হলো। আমার সমস্ত হৃদয় দিয়ে আমি তোমাদের ভালোবাসি। বাবার সঙ্গে এই ভিডিওটি আমার অন্যতম পছন্দের। অভিনন্দন এবং আমাকে মা হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।’
আনন্দ–বেদনার এ দিন কাটিয়ে মাঠে সময়টা ভালো যায়নি রোনালদোর। সৌদি প্রো লিগে গতকাল রাতে আল কাদিশার কাছে ২–১ গোলে হেরেছে আল নাসর। পুরো সময় মাঠে থেকেও গোল পাননি রোনালদো। এই হারে সৌদি লিগ জয়ের দৌড়ে বড় ধাক্কাই খেল আল নাসর। ২৮ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৫৭ পয়েন্ট। সমান ম্যাচ খেলে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আল ইতিহাদ। হাতে ৬ ম্যাচ রেখে ইতিহাদের চেয়ে ৮ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে তৃতীয় আল নাসর।
অ্যাঞ্জেল বেবিকে রোনালদো ও জর্জিনা প্রতিবছর স্মরণ করেন। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে এলে ম্যাগাজিনকে জর্জিনা বলেছিলেন, ‘এ বছরটা আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন বছর। সবচেয়ে সুখের মুহূর্ত সবচেয়ে দুঃখে পরিণত হয়েছে এবং এটা সারা জীবনই থাকবে।’
অ্যাঞ্জেল বেবিসহ রোনালদোর মোট ছয় সন্তান। ২০১০ সালে জন্ম নেয় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো জুনিয়র। ২০১৭ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্রে সারোগেসির মাধ্যমে যমজ সন্তান এভা ও মাতেওয়ের বাবা হন রোনালদো। সে বছরই নভেম্বরে জর্জিনার গর্ভে জন্ম নেয় অ্যালানা। এরপর ২০২২ সালে জন্ম নেয় বেলা। সব মিলিয়ে জুনিয়ররা দুই ভাই ও তিন বোন। পরপারে পাড়ি জমানো অ্যাঞ্জেল বেবিকে ধরলে অবশ্য জুনিয়ররা ছয় ভাই–বোন।