রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘অলংকার নিকেতন’ জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদের বাসায় ডাকাতির সময় ডাকাত দলের সদস্যদের আটক করে পুরস্কার পেয়েছেন ছয় নিরাপত্তাকর্মী। এ ছাড়া সাহসিকতার জন্য তাদের পুলিশের অক্সিলিয়ারি ফোর্স বা সহযোগী পুলিশ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির মুখপাত্র উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

পুরস্কার পাওয়া ছয় নিরাপত্তাকর্মী হলেন– স্বপন ভূঁইয়া, মো.

বিজয়, রিয়াজুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, মো. সিয়াম ও মো. টনি। তাদের প্রত্যেককে গতকাল পাঁচ হাজার টাকা করে পুরস্কার দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

রাজধানীর ধানমন্ডি ৮ নম্বর সড়কে বুধবার ভোরে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের গলিতে ছয়তলা একটি ভবনে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ভবনটিতে থাকা বাড়ি, স্বর্ণালংকারের দোকান ও কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ডাকাতরা প্রায় সাড়ে ৩৬ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতির একপর্যায়ে পুলিশের ওপরও হামলা করা হয়। ভবনটির মালিক এম এ হান্নান আজাদ। ডাকাতির সময় এম এ হান্নানকে জোর করে নিচে নিয়ে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে ডাকাতরা। এ সময় পাশের নির্মাণাধীন ভবনের ছয় নিরাপত্তাকর্মী চার ডাকাতকে ধরতে পুলিশকে সহায়তা করেন। 

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ও পালিয়ে যাওয়া আটজনসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করা হয়। পরে বুধবার রাতে হাজারীবাগ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। 

গ্রেপ্তার হওয়া মোট ছয়জন হলেন– ফরহাদ বিন মোশারফ, ইয়াছিন হাসান, মোবাশ্বের আহাম্মেদ, ওয়াকিল মাহমুদ, আবদুল্লাহ ও সুমন। তাদের কাছ থেকে র‌্যাব লেখা জ্যাকেট, টুপি, মাইক্রোবাস, মোবাইল ফোন ও ৪৫ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

কিছু নামধারী ছাত্র সমাজকে কলুষিত করতে চায়: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কায়কোবাদ

কিছু নামধারী ছাত্র সমাজকে কলুষিত করতে চায় এবং যারা নতুন পার্টি (এনসিপি) করেছে, তারা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ।

আজ শনিবার বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের হায়দারাবাদ সামসুল হক কলেজ মাঠে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ। নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির উদ্দেশে শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ বলেন, ‘যারা নতুন পার্টি (এনসিপি) করেছে, তারা যদি সুন্দর নির্বাচন চায়, আমি নিজেই তাদের মঞ্চে জায়গা করে দেব। কিন্তু আজ তারা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। ছাত্ররা আমাদের তাজ, কিন্তু কিছু ছাত্র নামধারী আজ আমাদের সমাজকে কলুষিত করতে চায়।’
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কায়কোবাদ আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূস সাহেবকে বলতে চাই, আপনি আমাদের গর্ব, আমাদের কলিজার টুকরা। ছাত্রদের পড়াশোনা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে খেয়াল করবেন। মুরাদনগরবাসী, আপনারা আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন, দেশে যেন একটি সুন্দর নির্বাচন হয়। কিন্তু যারা নতুন পার্টি (এনসিপি) করেছে, আজ তারা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের অনুসারীরা আমাকে মেরে ব্রিকফিল্ডের আগুনে পোড়াতে চেয়েছিল। আজ ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের লোকজনের সঙ্গে তারা জোট বেঁধেছে। মনে রাখবেন যাকে আল্লাহ বাঁচান, তাকে কেউ রুখতে পারে না।’
নিজেকে মুরাদনগরের মানুষের ‘কামলা’ উল্লেখ করে কায়কোবাদ বলেন, ‘আমি আপনাদের কামলা, নেতা নই। ১৯৮৬ সাল থেকে আমি আপনাদের কামলা হিসেবে আছি। আপনাদের ঋণ পরিশোধ করে শেষ করতে পারব না। আপনারা আমাকে পাঁচ-পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। আসুন, আমরা সবাই ১৯৭১ সালের স্বাধীনতায় এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের স্বাধীনতায় শহীদদের জন্য সুরা ফাতিহা পাঠ করি। কারণ, তাঁদের জন্য আজ এই খোলা মাঠে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।’
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক তৌফিক আহমেদ মীর, মেজর (অব.) শাজাহান, মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন প্রমুখ।

একই সময়ে জনসভা করেছে এনসিপি
বিএনপির জনসভাস্থল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলার পীর কাশিমপুর হাইস্কুল মাঠে আজ একই সময় জনসভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা শাখা এনসিপির আয়োজনে জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাবা মো. বিল্লাল হোসেনের (আকবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক)। তবে জনসভার ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে তাঁর নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত সভায় যোগ দেননি তিনি।
এনসিপির জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সমাজসেবক গোলাম কিবরিয়া সরকার। তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত সংস্কার এবং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার সম্পন্ন করে নির্বাচন দিতে হবে। যেসব দাবিতে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়েছেন, সেসব দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। জনগণের কাঙ্ক্ষিত এবং মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত করতে করা ছাড়া কোনো নির্বাচন কাম্য নয়।’
গোলাম কিবরিয়া সরকার বলেন, ‘যারা সংস্কারবিহীন নির্বাচন দাবি করছে, তারা জনগণের কল্যাণ চায় না। একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গিয়ে চাঁদাবাজি, লুটপাট আর দখলবাজি করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অতীতেও দেশের মানুষ তাদের কর্মকাণ্ড দেখেছে। আমরা বলতে চাই, দেশের মানুষকে আর কোনো ফ্যাসিবাদের কাছে জিম্মি করা যাবে না। যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করার স্বপ্ন দেখছে, তাদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে হবে। ইতিমধ্যে মানুষ তাদের কর্মকাণ্ড দেখে বিচলিত হয়ে গেছে। তাই আগামীর প্রত্যাশা পূরণে দেশ ও জাতির কল্যাণে এনসিপির হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’
বাঙ্গরা বাজার থানা এনসিপির সভাপতি কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন এম এ জাহের মুন্সি, মুরাদনগর উপজেলা এনসিপির সভাপতি মো. মিনহাজুল হক, সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক উবাইদুল হক সিদ্দিকী প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ