আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনার জন্য আরও চার আইনজীবীকে প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ (জিপি–পিপি শাখা)। এ নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরসহ সব মিলে ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর সংখ্যা ১৮ জনে দাঁড়াল।

প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পাওয়া চার আইনজীবী হলেন আফরোজ পারভীন সিলভিয়া, মো.

মামুনুর রশীদ, আবদুস সাত্তার ও এস এম তাসমিরুল ইসলাম। তাঁদের পদমর্যাদা হবে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের সমপর্যায়ের। প্রাপ্য রিটেইনার ফি ও অন্যান্য সুযোগ–সুবিধায় চার আইনজীবীকে প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ নেওয়া হয়েছে।

নিয়োগসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট, ১৯৭৩–এর সেকশন ৭(১) অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনার জন্য চারজন আইনজীবীকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রসিকিউটর পদে (উল্লিখিত পদমর্যাদা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাসহ) নিয়োগ দেওয়া হলো। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলামকে এবং সুপ্রিম কোর্টের চারজন আইনজীবীকে প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপর আরও কয়েকজন আইনজীবীকে ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনার জন্য প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। এই ট্রাইব্যুনালে ইতিমধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অনেকের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে থাকা মামলা ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর এই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার ঘোষণা দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাঁর সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও দলের নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাসহ সদস্যদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলা (মিস কেস) হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম নবত ব র ধ আইনজ ব ক র আইনজ ব র আইন

এছাড়াও পড়ুন:

মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা আজহারের আপিল কার্যতালিকায় উঠছে আগামীকাল

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের করা আপিল আগামীকাল মঙ্গলবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকার শীর্ষে থাকবে।

বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যদের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ সিদ্ধান্ত দেন। আপিল শুনানি করতে দিন ধার্যের জন্য বিষয়টি উপস্থাপন করার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ সিদ্ধান্ত জানান।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে এ টি এম আজহারুল ইসলামের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ লিভ (আপিলের অনুমতি) মঞ্জুর করে আদেশ দেন। সেই সঙ্গে পাশাপাশি দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সংক্ষিপ্তসার জমা দিতে বলা হয়। পরে আপিলের সংক্ষিপ্তসার জমা দেওয়া হয়। আপিল শুনানির দিন নির্ধারণের জন্য আজ আদালতে আরজি জানান আজহারুলের আইনজীবী।

আরও পড়ুনমানবতাবিরোধী অপরাধ: জামায়াত নেতা আজহারের রিভিউ শুনানি মঙ্গলবার২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আদালতে আজহারুলের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক এবং আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

পরে আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপিলের সারসংক্ষেপ এরই মধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে। শুনানির দিন নির্ধারণের জন্য বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। আগামীকাল আপিলটি কার্যতালিকার শীর্ষে থাকবে বলে জানিয়েছেন আপিল বিভাগ।’

এর আগে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন আজহারুল।

এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ রায় দেন। ২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুনমৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা আজহারের আপিল শুনবেন আপিল বিভাগ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন তিনি। এই পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষে ২৬ ফেব্রুয়ারি লিভ মঞ্জুর করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এর ধারাবাহিকতায় মৃত্যুদণ্ড বহালের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউর পরিপ্রেক্ষিতে আজহারুলের করা আপিলের ওপর শুনানি শুরু হতে যাচ্ছে। আজহারুল বর্তমানে কারাগারে আছেন।

আরও পড়ুনজামায়াত নেতা আজহারের রিভিউ শুনানি শুরু, আগামীকাল পরবর্তী শুনানি২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চার আইনজীবীকে কারাগারে নেওয়ার সময় ডিম নিক্ষেপ
  • ছাত্র-জনতার ওপর গুলির মামলায় কুমিল্লায় আওয়ামী লীগপন্থী চার আইনজীবী কারাগারে
  • কারাগার থেকে শীতের সোয়েটার হারিয়ে গেছে, বললেন পলক
  • কারাগার থেকে শীতের সোয়েটার হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পলকের
  • কুমিল্লার ৬ আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ, ডিম নিক্ষেপ 
  • যুদ্ধের গোপন তথ্য পরিবারকে বলে ফের আলোচনায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে অনুমতির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি বুধবার
  • মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা আজহারের আপিল কার্যতালিকায় উঠছে আগামীকাল
  • প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পেলেন সুফিউর রহমান
  • প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পেলেন সুফিউর রহমান