রাজধানীর গুলশানে পুলিশ প্লাজার সামনে ডিশ ব্যবসায়ী সুমনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় মো. ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ নামে এক আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মামুন ওরফে বেলাল নামে আরেক আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার সাব-ইন্সপেক্টর মারুফ আহমেদ তাদের আদালতে হাজির করেন। মামুন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পর মামুন স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানান।পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো.

ছানাউল্যাহর আদালতে ওয়াসির মাহমুদ সাঈদেরর সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয়। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “তদন্তে এ আসামির নাম আসে। তিনি অস্ত্র সরবরাহ করেছেন। তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।”

তার পক্ষে অ্যাডভোকেট সাফায়েত হোসেন (সজিব) রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, “আসামির বয়স ৬০ বছর। তার বাড়ি ঝালকাঠিতে। ইন্টারনেটের ব্যবসা করেন গুলশানে। আসামি তো ওই এলাকায় থাকে না।”

এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “আসামি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।”

তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, “প্রকাশ্যে এমন কথা বলা ঠিক না।” এরপর আদালত তার তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

গুলশান থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সাব-ইন্সপেক্টর মোক্তার হোসাইন বলেন, “দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ নামে এক আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বেলাল নামের আরেক আসামি জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করে। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

২৫ মার্চ র‌্যাব-১ এর অভিযানিক দল র‌্যাব-৮ এর অভিযানিক দলের সহযোগিতায় মাস্টারমাইন্ড মো. ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ ওরফে বড় সাঈদকে পটুয়াখালী থানার চৌরাস্তা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামুন ওরফে বেলালকে টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে, এ মামলায় গত ২৩ মার্চ হাবিবুর রহমান ওরফে সুজন নামে এক ব্যক্তির পাঁচ দিন এবং ২৪ মার্চ বশির সিকদারেরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

জানা গেছে, গত ২০ মার্চ রাত ৯টার দিকে পুলিশ প্লাজার পাশে ফজলে রাব্বি পার্কের পূর্বদিকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় ডিশ ব্যবসায়ী সুমনকে। এ ঘটনায় গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী মৌসুমী আক্তার।

ঢাকা/মামুন/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ র কর কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদরাতে কেনাকাটা: অভিজাত বিপণিবিতান থেকে ফুটপাতের দোকানে ভিড়

পশ্চিম আকাশে দেখা গেছে এক ফালি বাঁকা চাঁদ। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। চলে এসেছে খুশির ঈদ। গলিতে গলিতে বাজছে সেই চিরচেনা গান, ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে…’। পাড়ায় পাড়ায় ফুটছে পটকা। বের হয়েছে আনন্দ মিছিল। ছেলে-বুড়ো সবার মধ্যে খুশির ঝিলিক। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে। মসজিদের মাইকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঈদ জামাতের সময়।

ঈদের আগের দিন চাঁদ দেখা যায় বলে তা ‘চাঁদরাত’ হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামের মানুষের কাছে যার অপর নাম ‘চান রাইত’। সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার পর ঘরে-বাইরে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। ঘরে ঘরে চলছে ঈদের দিন অতিথি আপ্যায়নের প্রস্তুতি। আর বাইরে শেষ মুহূর্তের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা নিয়ে তুমুল ব্যস্ততা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দাদের মতে, চাটগাঁ শহর (চট্টগ্রাম) একসময় ব্যবসার দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নদী ও সড়কপথে সারা দেশ থেকে মানুষ এখানে আসতেন ঈদের বাজার করতে। তাঁরা বাজার করে ঈদের এক-দুই দিন আগে চলে যেতেন। তখন শহর ফাঁকা ও নির্জন হয়ে পড়ত। সেই সুযোগে ঈদের কেনাকাটা করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেনাকাটার সেই ধারা এখনো রয়ে গেছে।

‘চান রাইত’ উপলক্ষে রোববার রাতে চট্টগ্রামের অভিজাত বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকান—সব জায়গা ক্রেতাদের ভিড়ে ঠাসা। কাপড়ের দোকান, জুতার দোকান থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। একেবারে শেষ মুহূর্তে ক্রেতাদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিক্রেতাদের।

চট্টগ্রাম নগরে ঈদের আগের রাতে সবচেয়ে বেশি মানুষের জমায়েত হয় নিউমার্কেট এলাকায়। এখানে রয়েছে নিউমার্কেট, পৌর জহুর হকার্স মার্কেট, তামাকুমুন্ডি লেন, রিয়াজউদ্দিন বাজার।

আবার সড়কের দুই পাশে রয়েছে হাজারো ভাসমান দোকান। এই এলাকায় পাওয়া যায় না এমন কোনো দোকান নেই। তাই শেষের দিকে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে এখানে চলে আসেন লোকজন। রাতভর ঘুরে ঘুরে কিনে নেন পছন্দের জিনিসপত্র।

রোববার রাত আটটায় নিউমার্কেট গিয়ে দেখা যায়, দোকানের ভেতর-বাইরে মানুষে ঠাসা। সন্ধ্যায় ইফতার শেষে বিশ্রাম নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন চট্টগ্রামবাসী। কিছু কিছু দোকানে ক্রেতাদের চাপে বাইরে থেকে দোকানের ভেতরে প্রবেশ করার সুযোগ ছিল না। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে।

পছন্দের পোশাক কিনতে ফুটপাতের দোকানে ভিড়। হকার্স মার্কেট, চট্টগ্রাম, ৩০ মার্চ

সম্পর্কিত নিবন্ধ