লক্ষ্মীপুরে বাড়ি দখলের মামলায় বিএনপি নেতাসহ আসামি ৫০, গ্রেপ্তার ৪১
Published: 27th, March 2025 GMT
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মধ্য বাঞ্ছানগর এলাকায় অবৈধভাবে একটি তিনতলা ভবনসহ ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করার অভিযোগ স্থানীয় বিএনপি নেতাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সদর থানায় বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন ভবনের মালিক মাইন উদ্দিন। মামলা দায়েরের আগে গত বুধবার গভীর রাতে ওই ভবনে অভিযান চালিয়ে ভেতরে অস্থান করা ৪১ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। পরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাঁদের।
লক্ষ্মীপুর থানা–পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলায় পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক লোকমান হোসেন, ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ৪৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন বিএনপি নেতা। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মামলার প্রধান আসামি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন থাকলেও বিএনপি নেতা লোকমান হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আজ দুপুরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের লক্ষ্মীপুর আদালতে হাজির করা হয়।
বাড়ির মালিক মাইন উদ্দিনের অভিযোগ, শহরের লক্ষ্মীপুর-রায়পুর সড়কের পাশে তাঁর তিনতলা ভবনের কাগজপত্র জমা দিয়ে ৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। তবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় জমিসহ বাড়িটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের কাছে বাড়ি ও বাড়ির জায়গা বিক্রির বিষয়ে আলাপ হয় তাঁর। এটির মূল্য নির্ধারণ করেন সাড়ে চার কোটি টাকা। ব্যবসায়ী আনোয়ার ২৮ লাখ টাকা দিয়ে একটি নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বাড়িটি কেনার জন্য বায়না চুক্তি করেন। তবে রেজিস্ট্রি না করেই তিনি লোকজন এনে বাড়িটি দখলে নেন। এরপর বাড়িটির সামনে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন তিনি। ভবনের সামনে ১০টি ট্রাক ও ডাম্প ট্রাক রেখে দখল করেন তিনি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গভীর রাতে ওই বাড়িতে অভিযান চালায়।
জমির মালিক মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘ব্যবসায়ী আনোয়ার অবৈধভাবে ভাড়াটে ক্যাডারদের এনে আনোয়ার আমার সম্পত্তি দখল করেছেন। আমার ভবনে সেন্ট মার্টিন রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ড ছিল, তিনি তা সরিয়ে নিজের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে।’
গ্রেপ্তারের আগে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘৯ মাস আগে ২৮ লাখ টাকা দিয়ে জমি কেনার জন্য মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না করেছি। চুক্তি অনুযায়ী তিনি আমাকে ভবনসহ জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। প্রায় ৪ কোটি টাকা আমার ব্যাংকে পড়ে আছে। চুক্তির ভিত্তিতেই আমি ভবনসহ জমি দখল করেছি।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ভবন দখলের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আনোয়ারসহ ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মিঠামইনে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শালিসে হামলা, আ.লীগ কর্মী নিহত
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় একটি শালিসকে কেন্দ্র করে বিএনপি সমর্থকদের হামলায় এক আ.লীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। রোববার রাতে উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের হেমন্তগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম জজ মিয়া (৬৫)। তিনি হেমন্তগঞ্জ গ্রামের সুলমান মিয়ার ছেলে এবং আ.লীগের কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।
কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাশেম মিয়া সমকালকে বলেন, কিছুদিন পূর্বে তাজুল নামে এক আওয়ামী সমর্থককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই ঘটনার জেরে এলাকায় উওেজনা বিরাজ করছিল। ঘটনাটি মীমাংসার জন্য হেমন্তগঞ্জ বাজারে একটি শালিস বসলে ওই সময় বিএনপির সমর্থক রাজিব, সজীব, নজির, বুলবুল ও মানিক এসে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শালিসে হামলা চালায়। এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ কর্মী জজ মিয়া নিহত হয়।
মিঠামইন থানার ওসি শফিউল আলম জজ মিয়ার মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মরেদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।