পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলার জন্য ছাড়পত্র পেয়েছেন জাতীয় দলের তিন ক্রিকেটার লিটন কুমার দাস, নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেন। টাইগার পেসার নাহিদকে দেওয়া হয়েছে আংশিক ছাড়পত্র। গতকল বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফীস জানান, লিটন ও রিশাদকে পুরো লিগের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তিন ক্রিকেটারই ২৪ মার্চ ছাড়পত্র হাতে পেয়েছেন। পিএসএলে নাহিদের দল পেশোয়ার জালমি, লিটন খেলবেন করাচি কিংসে আর রিশাদকে নিয়েছে লাহোর কালানার্স।

১১ এপ্রিল থেকে ১৮ মে হবে পিএসএল টি২০ টুর্নামেন্ট। এ সময় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ মাঠে থাকলেও লিটন, রিশাদ পিএসএলে খেলবেন। ঢাকা লিগে লিটনের দল গুলশান ক্লাব, রিশাদের প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। বিসিবির মতো ক্লাব থেকেও ছাড়পত্র নিশ্চিত করেছেন তারা। নাহিদ রানা পেশোয়ার জালমিতে যোগ দেবেন ২৬ এপ্রিল থেকে। কারণ ২০ থেকে ২৪ এপ্রিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলবেন তিনি। এটিই হবে টাইগার ফাস্ট বোলারের প্রথম বৈশ্বিক টি২০ লিগ। 

রিশাদ গত বছর কানাডার গ্লোবাল টি২০ আর অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশে ডাক পেলেও খেলা হয়নি। সেদিক থেকে পিএসএল দিয়ে বৈশ্বিক লিগে অভিষেক করবেন এ লেগ স্পিনার। লিটন আগে আইপিএল, সিপিএল, লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে খেললেও পিএসএলে প্রথম। টানা ম্যাচ খেলার সুযোগ নিতে চান তিনি। বিসিবি পুরো সময়ের জন্য ছাড়পত্র দেওয়ায় খুশি লিটন।

জাতীয় দলের তিন ক্রিকেটারকে পিএসএলে ছাড়পত্র দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ সমকালকে বলেন,‘বৈশ্বিক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আমাদের খেলোয়াড় খুব একটা খেলে না। যে কায়জন সুযোগ পেয়েছে তারাও পুরো সময় খেলতে পারনি, লিগের মাঝপথে ফেরত আনায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছাড়পত্রই দেওয়া হতো না। এর ফলে বোর্ডগুলোর সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আমরা সম্পর্ক উন্নয়নে চেষ্টা করছি। তিনটি ছেলে পিএসএলে খেলতে পারলে ভালো হবে। ভবিষ্যতে অন্যরাও সুযোগ পাবে।’

এবার ইসলামাবাদ ইউনাইটেড ও লাহোর কালান্দার্সের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে পিএসএল। উদ্বোধনী ম্যাচে দেখা যেতে পারে লেগি রিশাদকে। পরের দিন লিটনের করাচি কিংস খেলবে মুলতান সুলতানর্সের বিপক্ষে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল টন দ স প এসএল ছ ড়পত র প এসএল

এছাড়াও পড়ুন:

তাঁরা তিন ভাই: একজন বাংলাদেশে, একজন ভারতে, একজন পাকিস্তানে

‘আমরা তিন ভাই; কিন্তু আছি তিন দেশে’—কারেন ভাইয়েরা মজা করে এই কথা বলতেই পারেন।    

পেশাগত কারণে অনেককেই তো বিদেশবিভুঁইয়ে থাকতে হয়। বেন কারেন, স্যাম কারেন ও টম কারেনও ক্রিকেটীয় কারণে আছেন তিন দেশে। তবে তিন ভাইয়ের বর্তমান ঠিকানা প্রতিবেশী তিন দেশ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান।  

দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে এসেছে জিম্বাবুয়ে দল। সিলেটে প্রথম টেস্ট শুরু আগামী রোববার। কারেন ভাইদের মেজ জন বেন জিম্বাবুয়ে দলের সঙ্গে এই মুহূর্তে সিলেটে আছেন।

এই তিন ভাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত মুখ স্যাম এখন আছেন ভারতে। আইপিএলে খেলছেন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। আর বড়জন টম কারেন আছেন পাকিস্তানে। পিএসএলে তাঁকে নিয়েছে লাহোর কালান্দার্স। অর্থাৎ, টম এখন বাংলাদেশের লেগ স্পিন অলরাউন্ডার রিশাদ হোসেনের সতীর্থ।

আপাদমস্তক ক্রিকেট পরিবার বলতে যা বোঝায়, কারেন পরিবার তেমনই। এই পরিবারের তিন প্রজন্ম ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারেন ভাইদের দাদা প্যাট্রিক কারেন ছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার, বাবা কেভিন কারেন জিম্বাবুয়ের হয়ে ১১টি ওয়ানডে খেলেছেন। তবে টম কারেন ও স্যাম কারেন ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ইংল্যান্ডের হয়ে দুজন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন—২০১৯ সালে টম জিতেছেন ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২২ সালে স্যাম জিতেছেন টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।  

বড় আর ছোট ভাইয়ের মতো বেন কারেনও ঘরোয়া ক্যারিয়ার ইংল্যান্ডে শুরু করেছিলেন। তবে জাতীয় দল বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি বাবার পথে হেঁটে জিম্বাবুয়ের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২৮ বছর বয়সী এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান জিম্বাবুয়ের হয়ে এখন পর্যন্ত ৩টি টেস্ট ও ৬টি ওয়ানডে খেলেছেন। ১টি করে ফিফটি ও সেঞ্চুরিতে করেছেন ৩৬৯ রান। বাংলাদেশে তিনি এবারই প্রথম এসেছেন। সিলেটে সময়টা তাঁর ভালোই কাটার কথা।

তবে ভারত ও পাকিস্তানে স্যাম ও টমের সময়টা ভালো কাটছে না। ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পাওয়ার পর আইপিএলে স্যামের কদর বেড়ে গিয়েছিল। সেই বছর নিলামে স্যামকে ১৮ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে কিনেছিল প্রীতি জিনতার দল পাঞ্জাব কিংস, যা তাঁকে আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় করে তুলেছিল।

কিন্তু গত বছর থেকে ফর্ম হারাতে শুরু করেন স্যাম। বাদ পড়েন জাতীয় দল থেকে। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইংল্যান্ড দলেও তাঁর জায়গা হয়নি। আইপিএলেও স্যামের দামে অস্বাভাবিক পতন হয়েছে। সাড়ে ১৮ কোটি স্যামকে এবার মেগা নিলামে ২ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে পেয়ে গেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। আইপিএলে চেন্নাইয়ের প্রথম দুই ম্যাচে এই বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে খেলানোও হয়েছে। কিন্তু ভালো করতে না পারায় (ব্যাটিংয়ে ৪ ও ৮ রান, বোলিংয়ে নেই কোনো উইকেট) আপাতত বেঞ্চ গরম করতে হচ্ছে।

ফর্ম বিবেচনায় টম কারেন আছেন আরও বাজে অবস্থায়। ইংল্যান্ড জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন সেই ২০২১ সালে। পিএসএল ড্রাফট থেকে লাহোর কালান্দার্স এই বোলিং অলরাউন্ডারকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলারে (৬০ লাখ ৭০ হাজার টাকা) কিনলেও এখনো কোনো ম্যাচ খেলায়নি। লাহোরের স্কোয়াড এবার বিদেশি অলরাউন্ডারে ঠাসা—বাংলাদেশের রিশাদের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা, নামিবিয়ার ডেভিড ভিসা ও ইংল্যান্ডের টম কারেন।  

রিশাদ ও রাজা দারুণ পারফর্ম করতে থাকায় তাঁদের ওপর আস্থা বেড়েছে লাহোর টিম ম্যানেজমেন্টের। ভিসা এক ম্যাচে খারাপ করার পর বাদ পড়েছেন। টম কারেন শিগগিরই খেলার সুযোগ পাবেন বলে মনে হয় না।  

পাশাপাশি দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে অবস্থান করলেও তিন ভাইয়ের শিগগিরই এক বিন্দুতে মেলা সম্ভব হবে বলেও মনে হয় না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিএসএলে সবচেয়ে দামি ১০ ক্রিকেটার কারা
  • ভিভ রিচার্ডস–সোবার্সের মতোই ফিরবেন বাবর
  • তাঁরা তিন ভাই: একজন বাংলাদেশে, একজন ভারতে, একজন পাকিস্তানে