নোনাজলে শরীর ভিজিয়ে পবিত্র হলেন হাজারো ভক্ত
Published: 27th, March 2025 GMT
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কবিতা চত্বর পয়েন্টে ভোর থেকে জমতে শুরু করে মানুষের ভিড়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার দিকে সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, দল বেঁধে মানুষ উত্তাল সমুদ্রে নেমে শরীর ভেজাচ্ছেন। কেউ কেউ দিচ্ছেন ডুব। আজ চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে দেশব্যাপী গঙ্গাপূজা ও মহাবারুণী স্নান অনুষ্ঠিত হয়। কক্সবাজার সৈকতেও মহাবারুণী স্নান ও পূজার আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটি।
মহাবারুণী স্নান উপলক্ষে পূজা, ভাগবতীয় অনুষ্ঠান, প্রসাদ বিতরণসহ নানা সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে অদ্বৈত-অচ্যুত মিশন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখা। ধর্মীয় আয়োজনে পৌরোহিত্য করেন শ্রীমৎ স্বামী দেবদীপানন্দ পুরী মহারাজ।
দুপুরে মা–বাবার সঙ্গে সমুদ্রস্নানে নামেন কলেজপড়ুয়া দিপালী দাশ। গোসল সেরে বালুচরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘মূলত অতীতের পাপ মোচনের জন্য এই সমুদ্রস্নান বা পুণ্যস্নান। স্নানের পর আমরা ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি। নিজের জন্য, পরিবারের সদস্যদের জন্য মঙ্গল কামনা করি। দেশের সবকিছু যেন স্থিতিশীল থাকে, দেশের মানুষ যেন শান্তিতে থাকতে পারেন, সে প্রার্থনাও করেছি।’
দুপুরে উৎসবস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রোমেন শর্মা। তিনি বলেন, ‘সৈকতে হাজারো ভক্তের উপস্থিতি এবং শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজন প্রমাণ করে কক্সবাজার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহর। আমরা দেশ ও দেশের মানুষের শান্তি চাই।’
সকাল থেকে সৈকতে ভক্তদের নিরাপদ গোসল ও নিরাপত্তা নিয়ে তৎপর ছিলেন মহাবারুণী স্নান ও গঙ্গাপূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দিলীপ ধর, সাধারণ সম্পাদক রতন ধর, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দীপক শর্মা দীপু প্রমুখ।
রতন ধর বলেন, সকাল ছয়টায় সমুদ্রে নেমে ভক্তদের স্নান ও পূজা শুরু হয়। বেলা তিনটা পর্যন্ত সৈকতে স্নানোৎসব চলে। এরপর ভক্তরা নিজ গন্তব্যে ফিরে যান।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, গঙ্গাদেবী বিপদনাশিনী। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করেন তিনি। পৃথিবীর সব পানি নিয়ন্ত্রণ করেন এই দেবী। তাই তাঁর অবস্থান পানিতে। পানির মাধ্যমে মানবকল্যাণ করেন দেবী গঙ্গা।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল বলেন, কক্সবাজার সমুদ্রে এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান। শহর ছাড়াও জেলার রামু, ঈদগাঁও, উখিয়া উপজেলার অন্তত ৪০ হাজার ভক্ত সৈকতে উপস্থিত থেকে পূজায় অংশ নেন। বেলা তিনটা পর্যন্ত আরও ১০-২০ হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।
২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।
মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস