‘আগে গোপনে মারতাম এখন ওপেন মারব’
Published: 27th, March 2025 GMT
স্ত্রীর পর এবার ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের নানি রেহেনা বেগম তাঁর নাতির বিরোধিতাকারীদের মারার হুমকি দিয়েছেন। গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘আগে গোপনে মারতাম, এখন ওপেন মারব।’
খুনের মামলায় সাজ্জাদকে বর্তমানে চান্দগাঁও থানা-পুলিশ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে গ্রেপ্তার হন সাজ্জাদ। সেখানে কেনাকাটা করতে যাওয়া নারী উদ্যোক্তা রুমা আক্তার ও তাঁর স্বামী পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত সন্ত্রাসীকে দেখে চিনতে পেরে আশপাশের লোকজনকে জড়ো করে আটক করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সাজ্জাদকে আটক করে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁকে চট্টগ্রামের দুটি খুনের মামলায় রিমান্ডে আনে পুলিশ।
সাজ্জাদের নানিকে ভিডিওতে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলতে শোনা যায়, ‘বুড়ি কে, আমার নাম রেহেনা। ওসি কে, কেন সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেছে। হাতকড়া পরিয়েছে। কারা তার ফাঁসি চায়।’
যারা সাজ্জাদের বিরোধিতা করছে, তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে রেহেনা বেগম বলেন, ‘যত মারছে বলবে, তত মারব। আগে গোপনে মারতাম, এখন ওপেন মারব।’ সাজ্জাদকে এনে দিতে না পারলে সাংবাদিকদের ফাঁসিরও হুমকি দেন রেহেনা বেগম।
জানতে চাইলে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, সাজ্জাদের নানির ভিডিওর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনও জামিনে ছাড়িয়ে আনার ঘোষণা দিয়ে ভিডিও দেন। এতে তিনি বলেন, ‘আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে (স্বামী) নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’
পুলিশ জানায়, ছোটবেলায় সাজ্জাদের মা-বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে তিনি নানির কাছে বড় হন। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত একটি মাদ্রাসায় পড়েন। পরে মুরগির দোকানে কাজ করেন। এরপর সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর দলে যোগ দেন।
সাজ্জাদকে ধরতে গত ৩০ জানুয়ারি পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। এর আগের দিন ফেসবুক লাইভে এসে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ হোসেন।
পুলিশ জানায়, সাজ্জাদ হোসেন বিদেশে পলাতক ‘শিবির ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর অনুসারী। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ১৭টি মামলা রয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবরে আনিস, কায়সার ও আফতাব উদ্দিন নামের তিন বালু ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার মামলার আসামি তিনি।
জানা গেছে, গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসের শুরুতে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্ধুর মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল এসএসসি পরীক্ষার্থী
দিনাজপুরের বিরামপুরে বন্ধুর মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় হাসান আলী (১৬) নামের এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিরামপুর পৌর শহরের দোয়েল স্টুডিও মোড়ে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় হাসানের বন্ধু মোটরসাইকেলের চালক নাঈম হোসেন (১৭) আহত হয়েছে।
নিহত হাসান আলী পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চকপাড়া লিচুবাগান এলাকার ঝালমুড়ি বিক্রেতা মিলন ইসলামের ছেলে। সে চলমান এসএসসি পরীক্ষার পরীক্ষার্থী ছিল। হাসান উপজেলার আমানুল্লাহ আদর্শ বিদ্যানিকেতনের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিল বলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রশিদ জানিয়েছেন। আহত নাঈম হোসেন একই এলাকার নিয়ামুল হকের ছেলে।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আজ বেলা ১১টার দিকে হাসান তার বন্ধু নাঈমের মোটরসাইকেলে করে বিরামপুর শহরে ঘুরতে যায়। নাঈম মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল, হাসান পেছনে বসে ছিল। পথে পৌর শহরের দোয়েল স্টুডিও মোড়ে পৌঁছালে গোবিন্দগঞ্জ থেকে আসা পণ্যবাহী একটি পিকআপ মোটরসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দিলে তারা মহাসড়কের ওপর ছিটকে পড়ে। এ সময় হাসান আলী পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক তাহাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হাসান আলীকে মৃত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছিল। সে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় হাসান আলী নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। নিহতের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ঘটনার পর পিকআপ ভ্যানের চালক গাড়ি নিয়ে পালিয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।