আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের সুরা নাবা, নাজিয়াত, আবাসা, তাকভির, ইনফিতার, মুতাফফিফিন, ইনশিকাক, বুরুজ, তারিক, আলা, গাশিয়া, ফাজর, বালাদ, শামস, লাইল, দুহা, ইনশিরাহ, ত্বিন, আলাক, কদর, বাইয়িনা, জিলজাল, আদিয়া, কারিয়া, তাকসুর, আসর, হুমাজা, ফিল, কোরাইশ, মাউন, কাউসার, কাফিরুন, নসর, লাহাব, ইখলাস, ফালাক ও নাস তিলাওয়াত করা হবে। ৩০তম পারা পড়া হবে। সুরা বাইয়িনা, জিলজাল, নাসর, ফালাক ও নাস ছাড়া সব কটি সুরা মক্কায় অবতীর্ণ। আজকের তারাবিতে একাত্ববাদ, রিসালাত, আখিরাত, মৃত্যুর পরের জীবন, কিয়ামত, জান্নাত-জাহান্নাম, অপরাধীদের পরিণাম, অবিশ্বাসীদের আফসোস, ফেরাউনের পরিণতি, উম্মে মাকতুমের ঘটনা, কিরামান-কাতিবিন তথা লিপিকার ফেরেশতাদের কাজ, ওজন, পরিখা খননকারীদের গল্প, কারও অগোচরে দোষ চর্চা, দুনিয়াপ্রীতি, হস্তি বাহিনীর গল্প, ব্যবসা, নেয়ামত, মুমিনের গুণাবলি, কাফেরের দোষক্রটি, নবীজিকে (সা.
ঘুমানোর জন্য রাত
সুরা নাবার ৯ থেকে ১১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাতকে করেছি আবরণস্বরূপ, আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য।’ আল্লাহর এক বিশেষ নিয়ামত ঘুম। রাতের ঘুম শরীরের ক্লান্তি দূর করে, মনে প্রশান্তি আনে এবং কাজে শক্তি বাড়ায়। কিন্তু আজকাল অনেকে গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন। এটি শুভ লক্ষণ নয়। স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। প্রয়োজনের তাগিদে রাত জাগার অনুমোদন করেছে ইসলাম। তবে ফজর নামাজ কাজা হবে, এমন শঙ্কা থাকলে রাত জাগা যাবে না। রাসুল (সা.) এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। (বুখারি, হাদিস: ৫৯৯)
কিয়ামতের বয়ান সুরা নাজিয়াতে
৪৬ আয়াতবিশিষ্ট সুরা নাজিয়াত কোরআনের ৭৯তম সুরা। কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা, এর ভয়াবহতা, পাঁচ ধরনের ফেরেশতার কসম, আল্লাহর সৃষ্টি, কারা জান্নাতে যাবে, কাদের ঠিকানা হবে জাহান্নামসহ অন্যান্য বিষয়ের আলাপ রয়েছে।
আরও পড়ুনসোলায়মান (আ.) কি রানি বিলকিসকে বিয়ে করেছিলেন২৬ মার্চ ২০২৪অন্ধ সাহাবির গল্প
রাসুল (সা.) তখন মক্কায়। অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে এলেন, সে সময় তিনি কুরাইশের নেতৃস্থানীয় কয়েকজনকে দ্বীনের দাওয়াত দিচ্ছিলেন। অন্ধ সাহাবির আগমনে রাসুল একটু নাখোশ হলেন। তাঁর প্রতি ভ্রুক্ষেপ করলেন না। আল্লাহর এ কাজ পছন্দ হয়নি। এ কাহিনির ভিত্তিতে আল্লাহ নাজিল করেন সুরা আবাসা। এরপর উম্মে মাকতুমকে তাঁর কাছে আসতে দেখলেই তিনি এগিয়ে গিয়ে নিয়ে আসতেন। বলতেন, ‘তিনি তো এমন মানুষ, যার জন্য আমাকে সতর্ক করা হয়েছে।’
সুরা তাকভির ও ইনফিতারে আল্লাহর একত্ববাদ, কিয়ামতে কেউ কারও উপকারে না আসা, কোরআন ও নবীজির সত্যতা, উপদেশ, লিপিকর ফেরেশতা কর্তৃক মানুষের আমল লেখা ও হাশরের মাঠে হিসাব-নিকাশের আলোচনা রয়েছে।
সুরা মুতাফফিফিনের ১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য দুর্ভোগ। ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে ওজনে কমবেশি করা বা ঠকানোর মাধ্যমে জীবিকা উপার্জন একটি জঘন্য অপরাধ। বিশেষভাবে পরিমাপ ও ওজনে অসততার কারণে শোয়াইব (আ.)-এর জাতির ওপর আজাব এসেছিল। ওজনে কম দেওয়া থেকে বেঁচে থাকা ইমানের অংশ। ওজনে কম দেওয়া ভয়াবহ পাপ।
আরও পড়ুনহজ ও কোরবানির বিধান এবং আল্লাহর পছন্দনীয় বিচারের গল্প২৪ মার্চ ২০২৪সুরা ইনশিকাক, বুরুজ, তারিক, আলা, গাশিয়া, ফাজর, বালাদ, শামস, লাইল, দুহা, ইনশিরাহ, ত্বিন, আলাকে কিয়ামতের দিন মানুষের কৃতকর্মের ফল পাওয়া, কারা সৌভাগ্যবান, পরিখা খননকারীদের কাহিনি, কোরআনের মহত্ত্ব ও বড়ত্ব, মানুষের জন্য তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতা নিযুক্ত করা, মানুষ সৃষ্টির মূল উপাদান নিয়ে গবেষণার আদেশ, অবিশ্বাসীদের প্রতি সতর্কবার্তা, আল্লাহর গুণকীর্তন, উপদেশ, সৃষ্টিজীবে আল্লাহর পরিচয়, ধ্বংসপ্রাপ্ত বিভিন্ন জাতির প্রতি ইঙ্গিত, দুঃখ-কষ্ট জীবনের অংশ, অহংকারী কাফের, নেক আমল, ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ, তাকওয়া, আমল অনুযায়ী ফলাফল, নবীজির প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি, মানুষের সৌন্দর্য, পড়া, সম্পদের কারণে মানুষের বিপদ ইত্যাদির আলোচনা রয়েছে।
হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ যে রাত
সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ রাত হলো লাইলাতুল কদর বা কদরের রাত। কদরের রাতকে হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে কোরআন ও হাদিসে। আল্লাহ তাআলা এ রাতে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। কোরআনুল কারিম লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আসমানে আনা হয় এ রাতে। এ রাতে ফজর পর্যন্ত আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। আল্লাহ তাআলা সুরা কদরে কদরের রাতের শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা দিয়েছেন।
সুরা বাইয়িনা, জিলজাল, আদিয়া, কারিয়া ও তাকাসুরে নবীজির (সা.)-রিসালাত ও নবুওয়তে কিতাবিদের অবস্থান, একনিষ্ঠতা, বিশ্বাসী-অবিশ্বাসীদের পরিণাম, কিয়ামতের আগের ভূমিকম্প, মানুষের হিসাব-নিকাশ, মানুষের অকৃতজ্ঞতা, কিয়ামতের ভয়াবহতা, দুনিয়ার প্রতি মানুষের অতিরিক্ত আসক্তি ইত্যাদি বিষয় রয়েছে।
আরও পড়ুনমুসা ও খিজির (আ.)-এর চিত্তাকর্ষক গল্প২৩ মার্চ ২০২৪ক্ষতিগ্রস্ত নয় যে মানুষ
৩ আয়াতবিশিষ্ট সুরা আসর পবিত্র কোরআনের ১০৩তম সুরা। সুরা আসরে মানুষের সাফল্য ও কল্যাণ এবং তার ধ্বংস ও সর্বনাশের পথ বর্ণনা করা হয়েছে। আসর অর্থ কাল বা সময়। এ সুরার শুরুতে আল্লাহ শপথ নিয়েছেন সময়ের। দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলেন, নিঃসন্দেহে সব মানুষই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। তবে চারটি গুণের মানুষ এ ক্ষতি থেকে বেঁচে যাবে—এক. ইমান। দুই. সৎকাজ। তিন. পরস্পরকে সত্যের উপদেশ ও চার. পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দেওয়া।
সুরা হুমাজা থেকে নাসের বিষয়বস্তু
সুরা হুমাজা, ফিল, কোরাইশ, মাউন, কাউসার, কাফিরুন, নসর, লাহাব, ইখলাস, ফালাক ও নাসে মানুষের মন্দ স্বভাব, হস্তি বাহিনীর কাহিনি, কুরাইশদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ, অবিশ্বাসী ও কপটদের অবস্থা, নবীজিকে হাউসে কাওসার দান, ইমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য, মক্কা বিজয়, আবু লাহব ও তার স্ত্রীর পরিণতি, আল্লাহর পরিচয়, সৃষ্টির সবকিছুর অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনার বর্ণনা রয়েছে।
রায়হান রাশেদ: আলেম ও লেখক
আরও পড়ুনআল্লাহর নিদর্শন উট হত্যা করেছিল সামুদ জাতি২১ মার্চ ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অব শ ব স ক য় মত র ক রআন র আল ল হ র পর ণ র জন য ফ র শত উপদ শ
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের আগে উড়াল দিলেন ফারিণ
ঈদের আগে যুক্তরাজ্যে উড়ে গেলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। তার স্বামী শেখ রেজওয়ান যুক্তরজ্যের বার্মিংহামে বসবাস করেন। স্বামীর সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগ করে নিয়ে দূরদেশে উড়ে গেলেন এই অভিনেত্রী। তবে যাওয়ার আগে স্বামীর জন্য লাগেজ ভর্তি জিনিসপত্র নিয়েছেন।
তাসনিয়া ফারিণ বলেন, “এখানে আসার আগে অনেক কিছু নিয়ে আসছি। পাঞ্জাবি, শার্টসহ যা যা আছে। আম্মু ইলিশ মাছ ভেজে বক্সে করে পাঠিয়েছেন। রেজওয়ানের বাসা থেকে কোপ্তা রান্না করে দিয়েছে। আচার বানিয়ে পাঠিয়েছে, মসলাপাতি যা যা আছে সবই নিয়ে আসা লাগছে। লাগেজে এমন অবস্থা, আমার কিছুই ছিল না, সবই আমার স্বামীর।”
স্বামীর সঙ্গে তাসনিয়া ফারিণ
আরো পড়ুন:
হুইলচেয়ারে বসে কেন প্রিমিয়ারে মোশাররফ করিম?
আনন্দ মেলার উপস্থাপনায় ইমন, সঙ্গে নাবিলা
নিজে কিছু কেনেননি তাসনিয়া ফারিণ। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “লন্ডনে এখন ঠান্ডা, তাই ওর পাঞ্জাবি কেনার ক্ষেত্রে মোটা কাপড়ের কিনেছি। তা ছাড়া এখানে কেউ কালারফুল কিছু পরে না, তাই হালকা রঙের কাপড় নিয়েছি। আমি নিজের জন্য কোনো কেনাকাটা করি না। আম্মু আমাকে গিফট করেছেন, শ্বশুরবাড়ি থেকেও শাড়ি–কাপড় উপহার পেয়েছি, ওইগুলো নিয়ে এসেছি।”
যুক্তরাজ্যে স্বামীর সঙ্গে মাসখানেক থাকবেন তাসনিয়া ফারিণ। এরপর বাংলাদেশে ফিরবেন। তারপর চিরচেনা লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন এই অভিনেত্রী।
ঢাকা/শান্ত